নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আশুলিয়ায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে নিয়ে নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি চালিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গুলি করে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম ও চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউর। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, সাভারের আশুলিয়া এলাকায় গত ৫ আগস্ট ছয় ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়, শহীদ করা হয়। এ ছয়জনকে হত্যার পরে চ্যাংদোলা করে একটি রিকশায় তোলা হয়।
ওখানে কিছুক্ষণ ফেলে রাখার পর পুলিশের একটি ভ্যান নিয়ে এসে সেখানে নিহতদের ওঠানো হয়। ভ্যানটা সেখান থেকে সরিয়ে থানার কাছে একটি দোকানের সামনে দাড় করিয়ে রেখে, বোতল ভরে এক জায়গা থেকে পেট্রোল আনে একজন। আরেকজন ওই পেট্রোল ঢালে, আরেকজন ম্যাচ নিয়ে এসে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর উদ্দেশ্য ছিল মানুষ যাতে বুঝতে না পারে, এদের কে হত্যা করেছে। পুলিশ হত্যা করে পুলিশের গাড়িতে রেখে আগুন দিলে মানুষ মনে করতে পারে, হয়তো এই হত্যাকাণ্ড ছাত্র-জনতা করেছে। এভাবে দায় এড়ানোর জন্য তারা পুলিশের গাড়িতে রেখে আগুন দেন। তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত সংস্থা এ ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত করে। তদন্ত করে যা পাওয়া যায়, এই হত্যার সময় তৎকালীন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি চালিয়েছেন পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে নিয়ে।
এই লাশ পোড়ানোর ঘটনার সঙ্গে তিনিসহ সেসময় কর্মরত চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছিল। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। বলেছেন- অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার জন্য। গ্রেপ্তার করা মাত্র সোপর্দ করতে হবে। আগামী ২৬ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন যা পাওয়া যাবে, তা আদালতে দাখিল করা হবে। এর আগে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় নিহত সবুরের ভাই এবং সজলের মায়ের আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ বিষয়ে অভিযোগ দাখিল করেছিলেন।