ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৭ মে ২০২৫

সাবেক রেলমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাট

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৩:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর -ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: কুমিল্লার চান্দিনায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের শ্বশুরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ মে) দিনগত রাত ১২টার পর উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের মীরাখোলা মুন্সিবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, লুটপাটের পর তাদের বাড়ি অবরুদ্ধ রাখে হামলাকারীরা। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে চার জন আটক হয়। হামলার সময় সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি ও নাছির উদ্দিন মুন্সির ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। এসব ঘটনা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

এ ঘটনায় আটক চার জন হলেন চান্দিনা উপজেলার মীরাখোলা গ্রামের আব্দুল রহিমের ছেলে রনি (১৮), মোখলেছুর রহমানের ছেলে রহিম (৪০), মৃত মনহর উদ্দিনের ছেলে মোখলেছুর রহমান (৬৫) ও ফজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (৪০)।

মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি বলেন, ‘আমার মুরগির ফার্মে একই গ্রামের কামাল নামে এক শ্রমিক কাজ করতো। প্রায় এক বছর আগে সে সব হিসাব চুকিয়ে আমাদের ফার্ম থেকে অব্যাহতি নেয়। সোমবার বিকালে আমাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পাবে বলে লোকজন নিয়ে বাড়িতে আসে। এ ঘটনায় আমরা উপস্থিত লোকজনকে সব কিছু বুঝিয়ে বললে তারা নানা উসকানিমূলক কথা বলে চলে যায়। রাত ১২টার পর আমরা যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ি, তখন ৭০-৮০ জন লোক এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। আমি ও আমার ভাই কোনোরকমে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। তারা এমনভাবে হামলা চালিয়েছে, এখন ঘরে পানি পান করার একটি গ্লাস পর্যন্ত নেই। আমরা উপায় না পেয়ে ৯৯৯-এ কল করার পর যৌথ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

আলাউদ্দিনের স্ত্রী পারভীন বেগম বলেন, ‘ঘরের চারটি আলমারি ভেঙে ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, চারটি টিভি, দুটি এসি, তিনটি ফ্রিজ, সিসি ক্যামেরাসহ আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার করে দেয়। হামলায় আমাদের শিশু সন্তানরা ভয়ে খাটের নিচে লুকায়। আতঙ্কিত হয়ে দুই শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক রেলমন্ত্রীর ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে আলাউদ্দিন ও নাছির উদ্দিন মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচার করতো। কেউ তাদের কথার অবাধ্য হলে বাড়িতে ধরে নিয়ে মারধর করতো। কয়েক দিন আগেও তারা সরকারি টাকায় নির্মিত পাকা সড়ক বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

চান্দিনা উপজেলা এলডিপি সভাপতি এ কে এম সামছুল হক মাস্টার বলেন, ‘হামলার ঘটনায় এলডিপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। এলডিপির বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ মিথ্যা। তারপরও যদি কেউ আমাদের দলের হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে এসেছেন। এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক রেলমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাট

আপডেট সময় : ০৭:৪৩:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: কুমিল্লার চান্দিনায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের শ্বশুরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৫ মে) দিনগত রাত ১২টার পর উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের মীরাখোলা মুন্সিবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, লুটপাটের পর তাদের বাড়ি অবরুদ্ধ রাখে হামলাকারীরা। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে চার জন আটক হয়। হামলার সময় সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি ও নাছির উদ্দিন মুন্সির ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। এসব ঘটনা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

এ ঘটনায় আটক চার জন হলেন চান্দিনা উপজেলার মীরাখোলা গ্রামের আব্দুল রহিমের ছেলে রনি (১৮), মোখলেছুর রহমানের ছেলে রহিম (৪০), মৃত মনহর উদ্দিনের ছেলে মোখলেছুর রহমান (৬৫) ও ফজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (৪০)।

মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি বলেন, ‘আমার মুরগির ফার্মে একই গ্রামের কামাল নামে এক শ্রমিক কাজ করতো। প্রায় এক বছর আগে সে সব হিসাব চুকিয়ে আমাদের ফার্ম থেকে অব্যাহতি নেয়। সোমবার বিকালে আমাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পাবে বলে লোকজন নিয়ে বাড়িতে আসে। এ ঘটনায় আমরা উপস্থিত লোকজনকে সব কিছু বুঝিয়ে বললে তারা নানা উসকানিমূলক কথা বলে চলে যায়। রাত ১২টার পর আমরা যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ি, তখন ৭০-৮০ জন লোক এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। আমি ও আমার ভাই কোনোরকমে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। তারা এমনভাবে হামলা চালিয়েছে, এখন ঘরে পানি পান করার একটি গ্লাস পর্যন্ত নেই। আমরা উপায় না পেয়ে ৯৯৯-এ কল করার পর যৌথ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

আলাউদ্দিনের স্ত্রী পারভীন বেগম বলেন, ‘ঘরের চারটি আলমারি ভেঙে ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, চারটি টিভি, দুটি এসি, তিনটি ফ্রিজ, সিসি ক্যামেরাসহ আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার করে দেয়। হামলায় আমাদের শিশু সন্তানরা ভয়ে খাটের নিচে লুকায়। আতঙ্কিত হয়ে দুই শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক রেলমন্ত্রীর ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে আলাউদ্দিন ও নাছির উদ্দিন মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচার করতো। কেউ তাদের কথার অবাধ্য হলে বাড়িতে ধরে নিয়ে মারধর করতো। কয়েক দিন আগেও তারা সরকারি টাকায় নির্মিত পাকা সড়ক বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

চান্দিনা উপজেলা এলডিপি সভাপতি এ কে এম সামছুল হক মাস্টার বলেন, ‘হামলার ঘটনায় এলডিপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। এলডিপির বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ মিথ্যা। তারপরও যদি কেউ আমাদের দলের হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে এসেছেন। এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’