ঢাকা ১২:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদের স্ত্রী মোনালিসা তিন দিনের রিমান্ডে

  • আপডেট সময় : ০৬:২১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোনালিসাকে আদালতে নেওয়ার ছবিটি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও যুব মহিলালীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সৈয়দা মোনালিসাকে ৩ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বেগম শারমিন নাহার এ আদেশ দেন।

এর আগে, আসামিকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। একইসঙ্গে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের হওয়া পলি খাতুন নামের এক নারীর দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেফতারের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মোনালিসাকে ৩ দিনের রিমান্ড এবং গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।

মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হাসনাত জামানের দায়েরকৃত সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলার রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার ইস্কাটন থেকে মোনালিসাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে তার স্বামী সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকেও রাজধানী ইস্কাটন এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত ডিসেম্বরে ফরহাদ হোসেনের বড় বোন শামীম আরা হীরা (৫০) ও তার স্বামী আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসন থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন ফরহাদ হোসেন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার বিজয়ী হওয়ার পর তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তাকে একই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়।

আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা মেহেরপুর জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তারা মানুষকে নানাভাবে শোষণ করেছেন। আর মন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর ছিলেন তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা।

স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা রাশিয়ায় পাচার করেছেন মোনালিসা। এ ছাড়া তিনি অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্ট ও জুয়াড়িদের নিরাপত্তা দিতেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেহেরপুরসহ সারা দেশের টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি ও অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী।

তার দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছেন ফরহাদ হোসেনেরই ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল। সম্প্রতি তিনি এক অডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভাইয়ের দুর্নীতির কারণেই আজ আমরা সবাই ঘরছাড়া, পালিয়ে বেড়াচ্ছি এবং মামলার আসামি হয়েছি। ফরহাদ হোসেন নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য প্রভৃতি দুর্নীতির মাধ্যমে ন্যূনতম দুই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কানাডার বেগমপাড়ায় তার বাড়ি আছে। ঢাকায় একাধিক বাড়ি আছে। সবকিছুর নিয়ন্ত্রক ছিলেন মন্ত্রী ও তার স্ত্রী। টাকা ছাড়া টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি কিছুই হতো না।’

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদের স্ত্রী মোনালিসা তিন দিনের রিমান্ডে

আপডেট সময় : ০৬:২১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও যুব মহিলালীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সৈয়দা মোনালিসাকে ৩ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বেগম শারমিন নাহার এ আদেশ দেন।

এর আগে, আসামিকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। একইসঙ্গে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের হওয়া পলি খাতুন নামের এক নারীর দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেফতারের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মোনালিসাকে ৩ দিনের রিমান্ড এবং গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।

মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হাসনাত জামানের দায়েরকৃত সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলার রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার ইস্কাটন থেকে মোনালিসাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে তার স্বামী সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকেও রাজধানী ইস্কাটন এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত ডিসেম্বরে ফরহাদ হোসেনের বড় বোন শামীম আরা হীরা (৫০) ও তার স্বামী আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসন থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন ফরহাদ হোসেন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার বিজয়ী হওয়ার পর তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তাকে একই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়।

আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা মেহেরপুর জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তারা মানুষকে নানাভাবে শোষণ করেছেন। আর মন্ত্রীর চেয়েও ক্ষমতাধর ছিলেন তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা।

স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা রাশিয়ায় পাচার করেছেন মোনালিসা। এ ছাড়া তিনি অনলাইন ক্যাসিনো এজেন্ট ও জুয়াড়িদের নিরাপত্তা দিতেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেহেরপুরসহ সারা দেশের টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি ও অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা ও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী।

তার দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছেন ফরহাদ হোসেনেরই ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল। সম্প্রতি তিনি এক অডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভাইয়ের দুর্নীতির কারণেই আজ আমরা সবাই ঘরছাড়া, পালিয়ে বেড়াচ্ছি এবং মামলার আসামি হয়েছি। ফরহাদ হোসেন নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য প্রভৃতি দুর্নীতির মাধ্যমে ন্যূনতম দুই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কানাডার বেগমপাড়ায় তার বাড়ি আছে। ঢাকায় একাধিক বাড়ি আছে। সবকিছুর নিয়ন্ত্রক ছিলেন মন্ত্রী ও তার স্ত্রী। টাকা ছাড়া টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি কিছুই হতো না।’