ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাবেক ভাড়াটে চক্রের হাতে খুন প্রবাসী চিকিৎসক

  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার হাজারীবাগে নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক চিকিৎসক এ কে এম আবদুর রশিদ হত্যাকাণ্ডে পুলিশ তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, তাঁদের মধ্যে দুজন ওই বাসার সাবেক ভাড়াটে। তাঁরা রেস্তোরাঁ ব্যবসার ‘মূলধন জোগাড়ে’ ও ভাড়া নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে চুরি করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
গত শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার মোহাম্মদপুর ও খুলনার ডুমুরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. নাইম খান (২২), মো. জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও মো. আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এসব তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ১৪ নভেম্বর রাতে হাজারীবাগে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আবদুর রশিদের বাসায় অজ্ঞাতনামা কয়েক ব্যক্তি প্রবেশ করেন। এ সময় নামাজ আদায় করছিলেন তিনি। পরে তাঁর সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের ‘ধস্তাধস্তি’ হয়। তখন স্ত্রী সুফিয়া আবদুর রশিদের পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাঁর মুখ চেপে ধরা হয়। একপর্যায়ে ধারালো চাকু দিয়ে আবদুর রশিদের বুকে একাধিকবার আঘাত করেন ওই দুষ্কৃতকারীরা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় তাঁর স্ত্রীর চিৎকারে তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত চিকিৎসক আবদুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। আবদুর রশিদ ও সুফিয়া রশিদ পেশায় চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তাঁরা প্রতি সেপ্টেম্বরে দেশে এসে নিজেদের বাসায় কয়েক মাস থেকে চলে যেতেন। তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রবাসী।
এদিকে খুনের ওই ঘটনায় আবদুর রশিদের চাচাতো ভাই মো. রেজাউল করিম ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও ওই বাসায় মেস হিসেবে থাকা ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। পরে ঢাকা ও খুলনায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নাইমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে গ্রেপ্তার তিন যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নাইম ও জাহিদুর ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন। এক মাস আগে বাসাটি ছাড়েন তাঁরা। বকেয়া ভাড়া নিয়ে আবদুর রশিদের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের মনোমালিন্যের জেরে ক্ষিপ্ত ছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া নাইম ও জাহিদুর রেস্তোরাঁ ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই বাসা থেকে টাকাপয়সা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তাঁরা আরেক আসামি শাওনকে সঙ্গে নিয়ে সীমানাপ্রাচীর টপকে বাসায় প্রবেশ করেন। উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আরও বলেন, আবদুর রশিদ তাহাজ্জদের নামাজ আদায় করতে ঘুম থেকে উঠেছিলেন। পরে ওই ব্যক্তিদের উপস্থিতি টের পান। পরে তিনি বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহান বিজয়ের মাস শুরু

সাবেক ভাড়াটে চক্রের হাতে খুন প্রবাসী চিকিৎসক

আপডেট সময় : ০৫:৫০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার হাজারীবাগে নিজ বাসায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক চিকিৎসক এ কে এম আবদুর রশিদ হত্যাকাণ্ডে পুলিশ তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, তাঁদের মধ্যে দুজন ওই বাসার সাবেক ভাড়াটে। তাঁরা রেস্তোরাঁ ব্যবসার ‘মূলধন জোগাড়ে’ ও ভাড়া নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে চুরি করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
গত শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার মোহাম্মদপুর ও খুলনার ডুমুরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. নাইম খান (২২), মো. জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও মো. আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এসব তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ১৪ নভেম্বর রাতে হাজারীবাগে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আবদুর রশিদের বাসায় অজ্ঞাতনামা কয়েক ব্যক্তি প্রবেশ করেন। এ সময় নামাজ আদায় করছিলেন তিনি। পরে তাঁর সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের ‘ধস্তাধস্তি’ হয়। তখন স্ত্রী সুফিয়া আবদুর রশিদের পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাঁর মুখ চেপে ধরা হয়। একপর্যায়ে ধারালো চাকু দিয়ে আবদুর রশিদের বুকে একাধিকবার আঘাত করেন ওই দুষ্কৃতকারীরা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় তাঁর স্ত্রীর চিৎকারে তাঁরা দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত চিকিৎসক আবদুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। আবদুর রশিদ ও সুফিয়া রশিদ পেশায় চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। তাঁরা প্রতি সেপ্টেম্বরে দেশে এসে নিজেদের বাসায় কয়েক মাস থেকে চলে যেতেন। তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রবাসী।
এদিকে খুনের ওই ঘটনায় আবদুর রশিদের চাচাতো ভাই মো. রেজাউল করিম ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও ওই বাসায় মেস হিসেবে থাকা ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। পরে ঢাকা ও খুলনায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নাইমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে গ্রেপ্তার তিন যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নাইম ও জাহিদুর ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন। এক মাস আগে বাসাটি ছাড়েন তাঁরা। বকেয়া ভাড়া নিয়ে আবদুর রশিদের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের মনোমালিন্যের জেরে ক্ষিপ্ত ছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া নাইম ও জাহিদুর রেস্তোরাঁ ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই বাসা থেকে টাকাপয়সা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তাঁরা আরেক আসামি শাওনকে সঙ্গে নিয়ে সীমানাপ্রাচীর টপকে বাসায় প্রবেশ করেন। উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আরও বলেন, আবদুর রশিদ তাহাজ্জদের নামাজ আদায় করতে ঘুম থেকে উঠেছিলেন। পরে ওই ব্যক্তিদের উপস্থিতি টের পান। পরে তিনি বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন।