নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মব সন্ত্রাসের’ শিকার হয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত ১১১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র-আসক। এর মধ্যে শনিবার চোর সন্দেহে রংপুরের তারাগঞ্জে দুই হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি বলেছে, এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তারাগঞ্জে নিহতরা হলেন- ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার প্রদীপ দাস (৩৫)। রুপলালের ভাগনি জামাই হচ্ছেন রুপলাল।
সংবাদমাধ্যমের বরাতে ঘটনার বর্ণনায় আসক বলেছে, রুপলাল দাস জুতা সেলাইয়ের কাজ করতেন, আর প্রদীপ দাস ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রুপলালের মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার জন্য তাদের বাড়ির উদ্দেশে নিজের ভ্যান যোগে রওনা হয়েছিলেন প্রদীপ। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় তিনি ফোন করলে রুপলাল বাড়ি থেকে এগিয়ে যান।
এরপর তারা দুজনে ভ্যানে চড়ে রুপলালের বাড়ি ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছলে ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের দুজনকে থামান স্থানীয়রা। এরপর সেখানে জড়ো হওয়া ব্যক্তিরা পিটিয়ে তাদের দুজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এ ধরনের ঘটনা প্রচলিত আইন, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের দৃষ্টিতে অত্যন্ত বিপদজনক ও অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে আসক বলছে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তারাগঞ্জের ঘটনায় রোববার রাতে চারজনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আসক জানিয়েছে, “যেকোনো সংঘবদ্ধ প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠী বা ব্যক্তি বিশেষকে দায়মুক্তি না দিয়ে তাদের শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কেননা এ ধরনের নির্মম ঘটনা মানবাধিকারের ভিত্তিকে সরাসরি আঘাত করে।”
এসি/