ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

সাজেদ বিশ্বাসের একগুচ্ছ কবিতা

  • আপডেট সময় : ০১:৪২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে


শৈশব

বন্দিদশার দাসত্ব হতে মুক্তির সনদ হাতেÑ
অতিশয় বেগে শাদা ঘোড়ার পিঠে, সবুজ দেশে
যাত্রা করে নবগঙ্গা নদীর ঘাটে শৈশব খুঁড়তে;
বড়ো যে দোলা লাগে হৃদয়ে জল মেশানো বাতাসে।

তুমি কে? আটকাতে চাও দোলার লাগাম, বৃথায়
পর্যবসিত হবে অপচেষ্টা গতির ক্ষিপ্রতায়;
নিগূঢ় মমতায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে কাদায়
মনের আলপনায় মেখে নেব দেহের বারান্দায়।

তোমার ছোঁয়ায় অসাড় হৃদয়ে প্রাণের সঞ্চারে
বাড়ির উঠোনে শালিক, চড়ুই, চোখ তুলে ডানা
মেলে কিচিরমিচির শব্দে; ধানক্ষেতের প্রান্তরে
দুরন্ত কিশোর, পাখির ঝাঁকের দিকে আনমনা
তাকিয়ে পিছলায় পা, কাঁদা মেখে দৌড় দেয় মাঠে;
খেলা শেষে ঝাপ দেয় গঙ্গা ঘাটে, লাল চোখেÑ
উঠে আসে ভীরু মনেÑ মায়ের হাত পড়বে পিঠে;
কী অপরূপই না শৈশব, গ্রামের সবুজ মাঠে!


গণতন্ত্রের পারফিউম

গণতন্ত্রের পারফিউম মোড়ানো ঝকঝকে কাপড়
ধবল গাভীর মতো খোলা মাঠের সবুজ ঘাসে মুখ ঘষে
স্বস্তির বাতাস গায়ে মেখে
রাষ্ট্র লালিত্যের সৌষ্ঠব
শৌর্যবীর্যে মহীয়ান থেকে
সদম্ভে হাঁক ডাকেÑ
সেখানে আস্তিনে মেঘের খামখেয়ালি বর্ষণ সয়ে
নৈঃরাশ্যের ওষ্ঠে জোটে
বালিঝড়ের চপেটাঘাতে
মোষ কালো আঁধার।
রাজপথজুড়ে চকচকে
বিলবোর্ডের আভিজাত শোডাউন আর বিজ্ঞাপনের
ঝলকানিতে চোখের কোটরে ধুন্ধুমার।
ল্যামপোস্টের জীর্ণ বাতির নিচে তীব্র বেগে কাঁপুনি দিয়ে
শিরাগুলো ধড়পড় করে নিস্তেজের ক্লান্তিতে হাহাকার।
দরাজ কণ্ঠের গলা সন্ত্রস্ত হয়ে
ক্ষীণ স্বরে ডুকরে কাঁদে
টিকে থাকার ঝুলিতে জমেনি আধুলি
ফিরে যাবে ঘরে।


পথের বাঁকে

আমি সেঁটে থাকি স্থিরচিত্রের মতো পথের বাঁকেÑ
খুব বেশি কেঁপে ওঠে বুক হয়ে যাচ্ছি পথহারা!
বিস্ময়ে দেখি বিষাদের মেঘের আবরণে ঢেকে
গেছে জীবনের ঝকঝকা হলুদ রোদের ছড়া।

কোনোদিনই ছিলাম না ভালো কোনো আঁকাআঁকিতে-
কিন্তু এখন সারা দিন ব্যস্ত থাকি ঠিক সুবোধ
বালকের মতো ধ্যানের মগ্নেÑ কাঠ পেন্সিল হাতে;
সমস্ত জাগতিক যন্ত্রণাকে ঠেলে আঁকি অবোধ।

নিজেকেই ভাবাইÑ চোখে জল কী কখনো আসিনি?
একান্তেই নিঃশব্দে কথা বলি অপার্থিব চিন্তায়Ñ
ভালো বুঝি তুমিই বেসেছÑ আমি কী ভালো বাসিনি?
অভাবিত ভালো কি বাসতে জানি নাÑ কে জানে হায়!

দীর্ঘশ্বাস আমার সারথি হৃদয় যখন ব্যাকুলÑ
সংশয় বাসা বেঁধেছে চোখের কোটরে আনমনে;
দুঃখের বৃষ্টির ফোঁটায় বিবর্ণ বাগানের ফুলÑ
বাতাস সুবাসিত হবে কী আর কালের অঘ্রানে?

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

সাজেদ বিশ্বাসের একগুচ্ছ কবিতা

আপডেট সময় : ০১:৪২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪


শৈশব

বন্দিদশার দাসত্ব হতে মুক্তির সনদ হাতেÑ
অতিশয় বেগে শাদা ঘোড়ার পিঠে, সবুজ দেশে
যাত্রা করে নবগঙ্গা নদীর ঘাটে শৈশব খুঁড়তে;
বড়ো যে দোলা লাগে হৃদয়ে জল মেশানো বাতাসে।

তুমি কে? আটকাতে চাও দোলার লাগাম, বৃথায়
পর্যবসিত হবে অপচেষ্টা গতির ক্ষিপ্রতায়;
নিগূঢ় মমতায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে কাদায়
মনের আলপনায় মেখে নেব দেহের বারান্দায়।

তোমার ছোঁয়ায় অসাড় হৃদয়ে প্রাণের সঞ্চারে
বাড়ির উঠোনে শালিক, চড়ুই, চোখ তুলে ডানা
মেলে কিচিরমিচির শব্দে; ধানক্ষেতের প্রান্তরে
দুরন্ত কিশোর, পাখির ঝাঁকের দিকে আনমনা
তাকিয়ে পিছলায় পা, কাঁদা মেখে দৌড় দেয় মাঠে;
খেলা শেষে ঝাপ দেয় গঙ্গা ঘাটে, লাল চোখেÑ
উঠে আসে ভীরু মনেÑ মায়ের হাত পড়বে পিঠে;
কী অপরূপই না শৈশব, গ্রামের সবুজ মাঠে!


গণতন্ত্রের পারফিউম

গণতন্ত্রের পারফিউম মোড়ানো ঝকঝকে কাপড়
ধবল গাভীর মতো খোলা মাঠের সবুজ ঘাসে মুখ ঘষে
স্বস্তির বাতাস গায়ে মেখে
রাষ্ট্র লালিত্যের সৌষ্ঠব
শৌর্যবীর্যে মহীয়ান থেকে
সদম্ভে হাঁক ডাকেÑ
সেখানে আস্তিনে মেঘের খামখেয়ালি বর্ষণ সয়ে
নৈঃরাশ্যের ওষ্ঠে জোটে
বালিঝড়ের চপেটাঘাতে
মোষ কালো আঁধার।
রাজপথজুড়ে চকচকে
বিলবোর্ডের আভিজাত শোডাউন আর বিজ্ঞাপনের
ঝলকানিতে চোখের কোটরে ধুন্ধুমার।
ল্যামপোস্টের জীর্ণ বাতির নিচে তীব্র বেগে কাঁপুনি দিয়ে
শিরাগুলো ধড়পড় করে নিস্তেজের ক্লান্তিতে হাহাকার।
দরাজ কণ্ঠের গলা সন্ত্রস্ত হয়ে
ক্ষীণ স্বরে ডুকরে কাঁদে
টিকে থাকার ঝুলিতে জমেনি আধুলি
ফিরে যাবে ঘরে।


পথের বাঁকে

আমি সেঁটে থাকি স্থিরচিত্রের মতো পথের বাঁকেÑ
খুব বেশি কেঁপে ওঠে বুক হয়ে যাচ্ছি পথহারা!
বিস্ময়ে দেখি বিষাদের মেঘের আবরণে ঢেকে
গেছে জীবনের ঝকঝকা হলুদ রোদের ছড়া।

কোনোদিনই ছিলাম না ভালো কোনো আঁকাআঁকিতে-
কিন্তু এখন সারা দিন ব্যস্ত থাকি ঠিক সুবোধ
বালকের মতো ধ্যানের মগ্নেÑ কাঠ পেন্সিল হাতে;
সমস্ত জাগতিক যন্ত্রণাকে ঠেলে আঁকি অবোধ।

নিজেকেই ভাবাইÑ চোখে জল কী কখনো আসিনি?
একান্তেই নিঃশব্দে কথা বলি অপার্থিব চিন্তায়Ñ
ভালো বুঝি তুমিই বেসেছÑ আমি কী ভালো বাসিনি?
অভাবিত ভালো কি বাসতে জানি নাÑ কে জানে হায়!

দীর্ঘশ্বাস আমার সারথি হৃদয় যখন ব্যাকুলÑ
সংশয় বাসা বেঁধেছে চোখের কোটরে আনমনে;
দুঃখের বৃষ্টির ফোঁটায় বিবর্ণ বাগানের ফুলÑ
বাতাস সুবাসিত হবে কী আর কালের অঘ্রানে?

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ