ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
লাইটার জাহাজে কর্মবিরতি=======

সাগর-নদীপথে ১৫ লাখ টন পণ্য আটকে গেল

  • আপডেট সময় : ০৯:২৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মবিরতির কারণে বন্ধ রয়েছে লাইটার জাহাজ চলাচল। শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে কর্ণফুলী নদীর চট্টগ্রাম নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে তোলা ছবিটি সংগৃহীত

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ৪৫টি ঘাট ও চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আটকা পড়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, সয়াবিন বীজ, সার, কয়লা ও সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার ইত্যাদি।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু করেন নদীপথে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটার জাহাজের শ্রমিকেরা। গত সোমবার মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজের সাতজনকে খুনের ঘটনার বিচার ও নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম বন্দর ও লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের তথ্য অনুযায়ী, কর্মবিরতির কারণে দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়ে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নওয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে।

এ ছাড়া বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে বোঝাই করা হয়েছিল অর্ধলাখ টন পণ্য, যা আটকে আছে। আবার বন্দরের বহির্নোঙরে ২০টি বড় জাহাজে খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন পণ্য।

সাত খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নৌযান ফেডারেশন। এই চার দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাত খুনের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচার, নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান। তবে এ নিয়ে প্রশাসন কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি সংগঠনটির সঙ্গে। ফলে কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায়।

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নবী আলম বলেন, দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

কর্মবিরতির কারণে বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা ২০টি বড় জাহাজে পণ্য আমদানি বাবদ আমদানিকারকদের ক্ষতিপূরণ গুনতে হতে পারে। বিদেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসা এসব বড় জাহাজ থেকে নির্দিষ্ট সময়ে বা প্রতিদিন ন্যূনতম হারে পণ্য খালাসের চুক্তিতে পণ্য পরিবহন ভাড়া ঠিক হয়। পণ্য পরিবহন ব্যাহত হলে চুক্তির শর্ত রক্ষা করা কঠিন হয়ে যায়।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, নৌযান শ্রমিকেরা যেসব দাবি জানিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। জাহাজের সাত খুনের ঘটনায় খুব দ্রুত আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা নেপথ্যে রয়েছে, তারও তদন্ত চলছে। নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এর পরও তাদের সঙ্গে রোববার বসে আলোচনা করার জন্য বলেছি আমরা। তার আগে কর্মবিরতি যাতে প্রত্যাহার করা হয়, সে জন্য আমরা নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের আহ্বান জানিয়েছি। আশা করছি, তারা দ্রুত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবে। কারণ, কর্মবিরতিতে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। পণ্য খালাস না হলে বড় জাহাজের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

লাইটার জাহাজে কর্মবিরতি=======

সাগর-নদীপথে ১৫ লাখ টন পণ্য আটকে গেল

আপডেট সময় : ০৯:২৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ৪৫টি ঘাট ও চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আটকা পড়েছে প্রায় ১৫ লাখ টন পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, সয়াবিন বীজ, সার, কয়লা ও সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার ইত্যাদি।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু করেন নদীপথে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটার জাহাজের শ্রমিকেরা। গত সোমবার মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজের সাতজনকে খুনের ঘটনার বিচার ও নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম বন্দর ও লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের তথ্য অনুযায়ী, কর্মবিরতির কারণে দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়ে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নওয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে।

এ ছাড়া বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে বোঝাই করা হয়েছিল অর্ধলাখ টন পণ্য, যা আটকে আছে। আবার বন্দরের বহির্নোঙরে ২০টি বড় জাহাজে খালাসের অপেক্ষায় আটকে আছে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন পণ্য।

সাত খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নৌযান ফেডারেশন। এই চার দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাত খুনের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচার, নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান। তবে এ নিয়ে প্রশাসন কোনো আলাপ-আলোচনা করেনি সংগঠনটির সঙ্গে। ফলে কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায়।

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নবী আলম বলেন, দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

কর্মবিরতির কারণে বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা ২০টি বড় জাহাজে পণ্য আমদানি বাবদ আমদানিকারকদের ক্ষতিপূরণ গুনতে হতে পারে। বিদেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসা এসব বড় জাহাজ থেকে নির্দিষ্ট সময়ে বা প্রতিদিন ন্যূনতম হারে পণ্য খালাসের চুক্তিতে পণ্য পরিবহন ভাড়া ঠিক হয়। পণ্য পরিবহন ব্যাহত হলে চুক্তির শর্ত রক্ষা করা কঠিন হয়ে যায়।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, নৌযান শ্রমিকেরা যেসব দাবি জানিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। জাহাজের সাত খুনের ঘটনায় খুব দ্রুত আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা নেপথ্যে রয়েছে, তারও তদন্ত চলছে। নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এর পরও তাদের সঙ্গে রোববার বসে আলোচনা করার জন্য বলেছি আমরা। তার আগে কর্মবিরতি যাতে প্রত্যাহার করা হয়, সে জন্য আমরা নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের আহ্বান জানিয়েছি। আশা করছি, তারা দ্রুত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবে। কারণ, কর্মবিরতিতে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। পণ্য খালাস না হলে বড় জাহাজের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।