ঢাকা ০৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগরে ভাসতে ভাসতে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছাল ২৬৪ রোহিঙ্গা

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৪:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : কয়েক দিন ধরে সাগরে ভাসার পর অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছেন ২৬০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী। দু’টি নৌকায় করে আচেহ প্রদেশের উপক‚লে পৌঁছানো এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা বিদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মনে করা হয়।

এমনকি কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করলেও দেশটিতে তাদের নাগরিকত্বও দেওয়া হয় না। দেশটিতে ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা। বছরের পর বছর ধরে বিশেষ করে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যখন সমুদ্র শান্ত থাকে, তখন অনেক রোহিঙ্গা কাঠের নৌকায় চেপে থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

তাদের অনেকের গন্তব্য থাকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও। পূর্ব আচেহর কর্মকর্তা ইস্কান্দার বলেছেন, শরণার্থীদের সর্বশেষ এই দলটি রোববার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২৫মিনিটের দিকে পশ্চিম পিউরুলাক শহরের একটি সৈকতে পৌঁছেছে। এএফপিকে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই দলে মোট ২৬৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১৭ জন পুরুষ এবং ১৪৭ জন নারী। এই দলে ৩০ জন শিশু আছে। দেশটির সরকারি এই কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দু’টি নৌকায় করে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে একটি নৌকা উপক‚লের কাছাকাছি এলাকায় ডুবে গেছে এবং অপর নৌকাটি উপক‚লে পৌঁছায়।

ওই সময় স্রোত কম থাকায় শরণার্থীরা হেঁটে তীরে পৌঁছান। ইস্কান্দার বলেন, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের উপক‚ল থেকে এই রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোথায় সরিয়ে নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে, শনিবার মিয়ানমারের নথিবিহীন প্রায় ৩০০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে বহনকারী দু’টি নৌকাকে মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড তাদের জলসীমা থেকে পাহারা দিয়ে বের করে দেয়। শুক্রবার মালয়েশিয়ার রিসোর্ট দ্বীপ লংকাউইর উপক‚ল থেকে দুই নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে নৌকা দু’টির সন্ধান পাওয়া যায়।

পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভাসমান নৌকা দু’টির অভিবাসীদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের পৌঁছানোর একটি চক্রাকার প্রবণতা রয়েছে। সাধারণত ঝড়ের মৌসুমে দেশটিতে রোহিঙ্গাদের যাওয়ার গতি ধীর হয়ে যায় এবং সমুদ্রের পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা আবার যাত্রা শুরু করেন। গত নভেম্বরে পূর্ব আচেহ উপক‚লে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। পরে সেখান থেকে শতাধিক শরণার্থীকে উদ্ধার করে ইন্দোনেশিয়ার উপক‚লরক্ষী বাহিনী।

ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে দেশটিতে শরণার্থীরা পৌঁছালে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাগরে ভাসতে ভাসতে ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছাল ২৬৪ রোহিঙ্গা

আপডেট সময় : ০৭:৩৪:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : কয়েক দিন ধরে সাগরে ভাসার পর অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছেন ২৬০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী। দু’টি নৌকায় করে আচেহ প্রদেশের উপক‚লে পৌঁছানো এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা বিদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মনে করা হয়।

এমনকি কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করলেও দেশটিতে তাদের নাগরিকত্বও দেওয়া হয় না। দেশটিতে ব্যাপক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা। বছরের পর বছর ধরে বিশেষ করে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যখন সমুদ্র শান্ত থাকে, তখন অনেক রোহিঙ্গা কাঠের নৌকায় চেপে থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

তাদের অনেকের গন্তব্য থাকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও। পূর্ব আচেহর কর্মকর্তা ইস্কান্দার বলেছেন, শরণার্থীদের সর্বশেষ এই দলটি রোববার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২৫মিনিটের দিকে পশ্চিম পিউরুলাক শহরের একটি সৈকতে পৌঁছেছে। এএফপিকে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই দলে মোট ২৬৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১৭ জন পুরুষ এবং ১৪৭ জন নারী। এই দলে ৩০ জন শিশু আছে। দেশটির সরকারি এই কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দু’টি নৌকায় করে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এর মধ্যে একটি নৌকা উপক‚লের কাছাকাছি এলাকায় ডুবে গেছে এবং অপর নৌকাটি উপক‚লে পৌঁছায়।

ওই সময় স্রোত কম থাকায় শরণার্থীরা হেঁটে তীরে পৌঁছান। ইস্কান্দার বলেন, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের উপক‚ল থেকে এই রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোথায় সরিয়ে নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে, শনিবার মিয়ানমারের নথিবিহীন প্রায় ৩০০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে বহনকারী দু’টি নৌকাকে মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড তাদের জলসীমা থেকে পাহারা দিয়ে বের করে দেয়। শুক্রবার মালয়েশিয়ার রিসোর্ট দ্বীপ লংকাউইর উপক‚ল থেকে দুই নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে নৌকা দু’টির সন্ধান পাওয়া যায়।

পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভাসমান নৌকা দু’টির অভিবাসীদের খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের পৌঁছানোর একটি চক্রাকার প্রবণতা রয়েছে। সাধারণত ঝড়ের মৌসুমে দেশটিতে রোহিঙ্গাদের যাওয়ার গতি ধীর হয়ে যায় এবং সমুদ্রের পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা আবার যাত্রা শুরু করেন। গত নভেম্বরে পূর্ব আচেহ উপক‚লে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। পরে সেখান থেকে শতাধিক শরণার্থীকে উদ্ধার করে ইন্দোনেশিয়ার উপক‚লরক্ষী বাহিনী।

ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে দেশটিতে শরণার্থীরা পৌঁছালে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।