ঢাকা ১১:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫

সাইকেল শোভাযাত্রা-অনশনে রামনাথের বসতভিটা পুনরুদ্ধারের দাবি

  • আপডেট সময় : ০২:২৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাইসাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করে বাঙালির গৌরব বাড়িয়েছিলেন রামনাথ বিশ্বাস, তার আদিবাড়ি পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সেই সাইকেলই হয়ে উঠল হাতিয়ার। গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জ শহর থেকে শতাধিক সাইক্লিস্ট বাইসাইকেল নিয়ে রওনা হন বানিয়াচংয়ে; বিদ্যাভূষণ পাড়ায় রামনাথের বসতভিটায় গিয়ে তারা দাবি জানান বাড়িটি দখলমুক্ত করার। ওই বাড়ির ‘অবৈধ’ দখলদার আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সামনে দাঁড়িয়েই দাবি জানানো হয় সেখানে রামনাথের নামে পাঠাগার এবং সাইকেল জাদুঘর প্রতিষ্ঠার। একই দাবিতে বানিয়াচং শহীদ মিনারে হয় প্রতীকী অনশন এবং প্রতিবাদী সমাবেশ। সাইক্লিস্টদের পাশাপাশি সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষ যোগ দেন এই কর্মসসূচিতে। এই কর্মসূচি থেকে রাজীব নূরসহ সাংবাদিকদের উপর রামনাথের বাড়ির অবৈধ দখলদার ওয়াহিদ মিয়ার হামলার বিচারও দাবি করা হয়।
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের রামনাথ বিশ্বাস বাইসাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন কয়েকবার। ভ্রমণ নিয়ে লিখেছেন অন্তত ৩০টি বই। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় থেকে রামনাথ স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে সেখানেই তিনি মারা যান। এরপর তার হবিগঞ্জের বাড়িটি বেদখল হয়ে পড়ে। ওয়াহেদ মিয়া নামে স্থানীয় ব্যক্তি তা দখল করে নেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই বাড়ি দেখতে গিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূরসহ সাংবাদিকরা দখলদারদের হামলার শিকার হন। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনা তোলার পর ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি দখলমুক্ত করার দাবি জোরেশোরে ওঠে। গঠিত হয় ‘ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটি’। তাদের উদ্যোগেই মঙ্গলবার সাইকেল শোভাযাত্রার কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। সেই সঙ্গে বানিয়াচং শহীদ মিনারে হয় প্রতীকী অনশন ও সমাবেশ। সকাল সোয়া ১১টায় হবিগঞ্জ টাউন হল থেকে শোভাযাত্রা শুরুর আগে দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, “রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটার দলিলপত্র প্রশাসনের দিক থেকে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এই সাইকেল র‌্যালির ব্যাপারেও জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে।”
শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ কুমার ধর শান্তুনু, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ইয়াছিন খানসহ অনেকে। শোভাযাত্রায় অংশ নেন হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নবীগঞ্জ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সাইক্লিস্টরা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা সাইক্লিস্ট ঈশিতা বলেন, “রামনাথ বিশ্বাস শতবর্ষ আগে বাইসাইকেলে বিশ্ব ঘুরে যে ইতিহাস গড়েছেন, আমরা রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা দখলমুক্ত করার এই আন্দোলনের মাধ্যমে রামনাথকে নতুনরূপে আবিষ্কার করছি।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা সাইক্লিস্ট ফাহিম মুনতাসীর বলেন, “আমরা মনে করি, রামনাথ বাঙালির গর্ব। তার বসতভিটা দখল হয়ে থাকার ঘটনা লজ্জার। তার বসতভিটা দখলমুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।”
নবীগঞ্জ থেকে আসা লাল সবুজ সাইক্লিস্ট ক্লাবের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম তারেক বলেন, “সাংবাদিক রাজীব নূর রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। এটি দুঃখজনক। আমরা দাবি জানাই রামনাথের বসতভিটা দখলমুক্ত করতে হবে।”
দুপুরে সাইক্লিস্টদের শোভাযাত্রাটি বানিয়াচংয়ে রামনাথের বসতভিটায় যায়। সাইক্লিস্টরা বসতভিটায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলে এবং দাবি জানায়, বসতভিটা পুনরুদ্ধারের। এ সময় রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক নাট্যকার রুমা মোদক সাংবাদিকদের বলেন, “রামনাথ বিশ্বাস আমাদের হবিগঞ্জের গর্ব। তার বসতভিটা সংরক্ষণ করা সরকারের দায়িত্ব। এই বসতভিটা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
সকাল ১১টায় রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধারের দাবিতে বানিয়াচং শহীদ মিনারে প্রতীকী অনশনে বসেন স্থানীয় সাংবাদিক দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণুর নেতৃত্বে অনেকে। সাইক্লিস্টরা রামনাথের বসতভিটা থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে বানিয়াচং শহীদ মিনারে গিয়ে সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেখানে সাংবাদিক রাজীব নূর পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। অনশন ভাঙার পর সাংবাদিক দেবব্রত বলেন, “রাজীব নূর রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটার খবর সংগ্রহ করতে এসে হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু আন্দোলন প্রমাণ করেছে, রাজীব নূর এক থেকে কীভাবে অনেক হয়ে উঠেছেন। এই অনেক থেকে আমরা অজস্র হয়ে উঠব। দখলদারদের, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।”
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, “জায়গাটি পুনরুদ্ধারের যে দাবি উঠেছে, আমরা সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ আইনি সহায়তা প্রদানে তৎপর রয়েছি। এই আন্দোলনের ফলে বিষয়টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছে। যারা রাজীব নূরের উপর হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারাও এখন কোনঠাসা হয়ে পড়েছে।” কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহেদ কায়েস বলেন, “আমরা এই সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে দাবি জানাচ্ছি, বিশ্বের বরেণ্য ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা সংরক্ষণ করে সেখানে যেন পাঠাগার এবং বাইসাইকেল মিউজিয়াম করা হয়।” আরও বক্তব্য দেন দিনাজপুর থেকে এসে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান রূপম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ জামালসহ অনেকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাইকেল শোভাযাত্রা-অনশনে রামনাথের বসতভিটা পুনরুদ্ধারের দাবি

আপডেট সময় : ০২:২৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : বাইসাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করে বাঙালির গৌরব বাড়িয়েছিলেন রামনাথ বিশ্বাস, তার আদিবাড়ি পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সেই সাইকেলই হয়ে উঠল হাতিয়ার। গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জ শহর থেকে শতাধিক সাইক্লিস্ট বাইসাইকেল নিয়ে রওনা হন বানিয়াচংয়ে; বিদ্যাভূষণ পাড়ায় রামনাথের বসতভিটায় গিয়ে তারা দাবি জানান বাড়িটি দখলমুক্ত করার। ওই বাড়ির ‘অবৈধ’ দখলদার আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সামনে দাঁড়িয়েই দাবি জানানো হয় সেখানে রামনাথের নামে পাঠাগার এবং সাইকেল জাদুঘর প্রতিষ্ঠার। একই দাবিতে বানিয়াচং শহীদ মিনারে হয় প্রতীকী অনশন এবং প্রতিবাদী সমাবেশ। সাইক্লিস্টদের পাশাপাশি সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষ যোগ দেন এই কর্মসসূচিতে। এই কর্মসূচি থেকে রাজীব নূরসহ সাংবাদিকদের উপর রামনাথের বাড়ির অবৈধ দখলদার ওয়াহিদ মিয়ার হামলার বিচারও দাবি করা হয়।
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের রামনাথ বিশ্বাস বাইসাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন কয়েকবার। ভ্রমণ নিয়ে লিখেছেন অন্তত ৩০টি বই। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় থেকে রামনাথ স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে সেখানেই তিনি মারা যান। এরপর তার হবিগঞ্জের বাড়িটি বেদখল হয়ে পড়ে। ওয়াহেদ মিয়া নামে স্থানীয় ব্যক্তি তা দখল করে নেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই বাড়ি দেখতে গিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূরসহ সাংবাদিকরা দখলদারদের হামলার শিকার হন। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনা তোলার পর ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িটি দখলমুক্ত করার দাবি জোরেশোরে ওঠে। গঠিত হয় ‘ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটি’। তাদের উদ্যোগেই মঙ্গলবার সাইকেল শোভাযাত্রার কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। সেই সঙ্গে বানিয়াচং শহীদ মিনারে হয় প্রতীকী অনশন ও সমাবেশ। সকাল সোয়া ১১টায় হবিগঞ্জ টাউন হল থেকে শোভাযাত্রা শুরুর আগে দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, “রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটার দলিলপত্র প্রশাসনের দিক থেকে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এই সাইকেল র‌্যালির ব্যাপারেও জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে।”
শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ কুমার ধর শান্তুনু, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ইয়াছিন খানসহ অনেকে। শোভাযাত্রায় অংশ নেন হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নবীগঞ্জ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা সাইক্লিস্টরা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা সাইক্লিস্ট ঈশিতা বলেন, “রামনাথ বিশ্বাস শতবর্ষ আগে বাইসাইকেলে বিশ্ব ঘুরে যে ইতিহাস গড়েছেন, আমরা রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা দখলমুক্ত করার এই আন্দোলনের মাধ্যমে রামনাথকে নতুনরূপে আবিষ্কার করছি।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা সাইক্লিস্ট ফাহিম মুনতাসীর বলেন, “আমরা মনে করি, রামনাথ বাঙালির গর্ব। তার বসতভিটা দখল হয়ে থাকার ঘটনা লজ্জার। তার বসতভিটা দখলমুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।”
নবীগঞ্জ থেকে আসা লাল সবুজ সাইক্লিস্ট ক্লাবের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম তারেক বলেন, “সাংবাদিক রাজীব নূর রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। এটি দুঃখজনক। আমরা দাবি জানাই রামনাথের বসতভিটা দখলমুক্ত করতে হবে।”
দুপুরে সাইক্লিস্টদের শোভাযাত্রাটি বানিয়াচংয়ে রামনাথের বসতভিটায় যায়। সাইক্লিস্টরা বসতভিটায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলে এবং দাবি জানায়, বসতভিটা পুনরুদ্ধারের। এ সময় রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক নাট্যকার রুমা মোদক সাংবাদিকদের বলেন, “রামনাথ বিশ্বাস আমাদের হবিগঞ্জের গর্ব। তার বসতভিটা সংরক্ষণ করা সরকারের দায়িত্ব। এই বসতভিটা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
সকাল ১১টায় রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধারের দাবিতে বানিয়াচং শহীদ মিনারে প্রতীকী অনশনে বসেন স্থানীয় সাংবাদিক দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণুর নেতৃত্বে অনেকে। সাইক্লিস্টরা রামনাথের বসতভিটা থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে বানিয়াচং শহীদ মিনারে গিয়ে সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন। সেখানে সাংবাদিক রাজীব নূর পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। অনশন ভাঙার পর সাংবাদিক দেবব্রত বলেন, “রাজীব নূর রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটার খবর সংগ্রহ করতে এসে হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু আন্দোলন প্রমাণ করেছে, রাজীব নূর এক থেকে কীভাবে অনেক হয়ে উঠেছেন। এই অনেক থেকে আমরা অজস্র হয়ে উঠব। দখলদারদের, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।”
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, “জায়গাটি পুনরুদ্ধারের যে দাবি উঠেছে, আমরা সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ আইনি সহায়তা প্রদানে তৎপর রয়েছি। এই আন্দোলনের ফলে বিষয়টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছে। যারা রাজীব নূরের উপর হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারাও এখন কোনঠাসা হয়ে পড়েছে।” কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কবি শাহেদ কায়েস বলেন, “আমরা এই সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে দাবি জানাচ্ছি, বিশ্বের বরেণ্য ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা সংরক্ষণ করে সেখানে যেন পাঠাগার এবং বাইসাইকেল মিউজিয়াম করা হয়।” আরও বক্তব্য দেন দিনাজপুর থেকে এসে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান রূপম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ জামালসহ অনেকে।