নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দল বদল, অস্ত্র নিয়ে নির্বাচনী সভায় অংশ নেওয়ার মতো ঘটনায় আলোচনায় থাকা আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমর এবার ক্ষিপ্ত হলেন সাংবাদিকদের ওপর।
গতকার মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। বেলা দুইটার পরে শাহজাহান ওমর সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সিইসির দপ্তরে তিনি ছিলেন প্রায় ১০ মিনিটের মত। সিইসির কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় একজন সাংবাদিক কমিশনে আসার কারণ জানতে চাইলে ক্ষেপে যান শাহজাহান ওমর। তিনি বলেন, “ইসিতে কেন এসেছি আপনাকে কেন বলব? আমি কেন এসেছি এই বিষয়ে আপনাদের জবাবদিহিতা করতে হবে? আমি এমনিতেই ঘুরতে এসেছি, আপনাদের দেখতে এসেছি।”
ছবি তুলতে চাইলেও রেগে যান তিনি। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী।
গত সোমবার নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে কাঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সভা করেন সদ্য বিএনপি ছাড়া এই নেতা। সেখানে তার কোমরে পিস্তল দেখা গেছে। আর তার পাশে বন্দুক হাতে বসে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে জেলা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। আগামী বুধবারের মধ্যে এর জবাব দেওয়ার কথা। তার আগেই সিইসির সঙ্গে দেখা করতে আসেন শাহজাহান ওমর। আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আইন জানেন? কে বলল আমি আইন ভেঙেছি?” শাহজাহান ওমর কয়েকদিন আগেও বিএনপির সঙ্গে ছিলেন। বিএনপির কয়েকজন্য জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু ২৯ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরদিনই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠি-১ আসনে মনোনয়ন পেয়ে আলোচনার জন্ম দেন।
এড়িয়ে গেলেন সিইসি: পরে শাহজাহান ওমরের ইসিতে আসার বিষয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ওটা (আচরণবিধি ভঙ্গ) আমার বিষয় না।”
অনুসন্ধান কমিটি একের পর এক শোকজ করছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এমন বিষয় সামনে আনলে তিনি বলেন, “আমি যতটুকু বলার ততটুকু বলেছি। এর বাইরে আমি কিছু বলব না।” বিকালে নির্বাচন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে আপিল আবেদন নেওয়ার কাজ পরিদর্শন করেন সিইসি। আপিল আবেদন নিতে ভবনের সামনে ১০টি অঞ্চলের জন্য বুথ করে দেওয়া হয়েছে। এসময় কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নমিনেশন সাবমিশনের পরে সংক্ষুব্ধ যারা, তারা আপিল করতে পারেন। তিনি বলেন, “আমাদের যারা রিটার্নিং অফিসার, পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে মনোনয়নপত্র একসেপ্ট করে নেন; কিছু কিছু প্রত্যাখ্যান করেন। যারা প্রত্যাখ্যাত হন, যাদের নমিনেশন পেপার গ্রহণ করা হয়, দু’টোর বিরুদ্ধেই কিন্তু আপিল করা যায়।
“একসেপটেশন অ্যান্ড রিজেকশন, আপিল করার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন যে কেউ। আপিল করতে ১০টা অঞ্চল ঠিক করা হয়েছে। অঞ্চলভিত্তিক আপিল দায়ের করা যাবে।” তিনি জানান, আবেদনগুলোর ওপর শুনানি হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। “আমরা তখন পুরো কমিশন বসে আপিলগুলো শুনব। শুনে আমরা সিদ্ধান্ত দেব,” বলেন সিইসি।
সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপলেন শাহজাহান ওমর, জড়ালেন তর্কে
জনপ্রিয় সংবাদ