ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সহিংসতায় বিধ্বস্ত মণিপুরে এসে মোদি বললেন, আছি সবার সঙ্গে

  • আপডেট সময় : ০৯:২১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর সফর করেছেন। দুই বছর আগে এই রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির পর শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এই সফর করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া আসাম এবং মণিপুর রাজ্যে তিন দিনের সফরে শনিবার মণিপুরে পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য বিহারেও সফরে যাবেন তিনি। বিহারে অন্তত ১৩ কোটি মানুষের বসবাস।

আগামী অক্টোবর কিংবা নভেম্বরে বিহারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে নরেন্দ্র মোদির এই সফর গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলের হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোর মধ্যে একমাত্র রাজ্য বিহার। এই রাজ্যে নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কখনোই এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারেনি।
শুধু তাই নয়, ভারতের অন্যতম দরিদ্রতম রাজ্যও বিহার। সফরে গিয়ে এই রাজ্যে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে মোদির। এই বিনিয়োগ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের কৃষি, রেল সংযোগ, সড়ক উন্নয়ন এবং একটি বিমানবন্দর টার্মিনাল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে ২০২৩ সালের মে মাসে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় হিন্দু মেইতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ও খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মাঝে ভয়াবহ সংঘাত হয়। রাজ্যের এই সহিংসতায় ২৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং আরো কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা বর্তমানে সরকারের অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছেন।

রাজ্যের কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে শনিবার মোদি বলেছেন, ‘মণিপুরে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আজ আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। ভারত সরকার মণিপুরের মানুষের সঙ্গে আছে।’ তিনি রাজ্যের অন্যান্য সব গোষ্ঠীকে স্বপ্ন পূরণের জন্য শান্তির পথ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মেইতেই সম্প্রদায় অধ্যুষিত রাজ্যের রাজধানী ইমফলেও একটি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ারও কথা আছে নরেন্দ্র মোদির।

ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী এর আগে সর্বশেষ মণিপুর সফর করেছিলেন ২০২২ সালে। মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা এই রাজ্য ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সফরের প্রথম দিনে মণিপুরে ৯৬ কোটি ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই উন্নয়ন প্রকল্পের মাঝে রাজ্যের পাঁচটি মহাসড়ক ও একটি নতুন পুলিশ সদর দপ্তর নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপির সদস্য ছিলেন মণিপুরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রক্তপাত থামাতে ব্যর্থতা ঘিরে শুরু হওয়া সমালোচনার মুখে গত ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই রাজ্য সরাসরি নয়াদিল্লি থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি ও সরকারি চাকরির কোটা ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করে বলেছেন, রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে রাজ্যের এই বিভাজনে উসকানি দিচ্ছেন। সূত্র: রয়টার্স।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সহিংসতায় বিধ্বস্ত মণিপুরে এসে মোদি বললেন, আছি সবার সঙ্গে

আপডেট সময় : ০৯:২১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর সফর করেছেন। দুই বছর আগে এই রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির পর শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এই সফর করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া আসাম এবং মণিপুর রাজ্যে তিন দিনের সফরে শনিবার মণিপুরে পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য বিহারেও সফরে যাবেন তিনি। বিহারে অন্তত ১৩ কোটি মানুষের বসবাস।

আগামী অক্টোবর কিংবা নভেম্বরে বিহারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে নরেন্দ্র মোদির এই সফর গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলের হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোর মধ্যে একমাত্র রাজ্য বিহার। এই রাজ্যে নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কখনোই এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারেনি।
শুধু তাই নয়, ভারতের অন্যতম দরিদ্রতম রাজ্যও বিহার। সফরে গিয়ে এই রাজ্যে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে মোদির। এই বিনিয়োগ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের কৃষি, রেল সংযোগ, সড়ক উন্নয়ন এবং একটি বিমানবন্দর টার্মিনাল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে ২০২৩ সালের মে মাসে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় হিন্দু মেইতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ও খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মাঝে ভয়াবহ সংঘাত হয়। রাজ্যের এই সহিংসতায় ২৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং আরো কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা বর্তমানে সরকারের অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছেন।

রাজ্যের কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে শনিবার মোদি বলেছেন, ‘মণিপুরে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আজ আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। ভারত সরকার মণিপুরের মানুষের সঙ্গে আছে।’ তিনি রাজ্যের অন্যান্য সব গোষ্ঠীকে স্বপ্ন পূরণের জন্য শান্তির পথ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মেইতেই সম্প্রদায় অধ্যুষিত রাজ্যের রাজধানী ইমফলেও একটি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ারও কথা আছে নরেন্দ্র মোদির।

ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী এর আগে সর্বশেষ মণিপুর সফর করেছিলেন ২০২২ সালে। মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা এই রাজ্য ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সফরের প্রথম দিনে মণিপুরে ৯৬ কোটি ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই উন্নয়ন প্রকল্পের মাঝে রাজ্যের পাঁচটি মহাসড়ক ও একটি নতুন পুলিশ সদর দপ্তর নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপির সদস্য ছিলেন মণিপুরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রক্তপাত থামাতে ব্যর্থতা ঘিরে শুরু হওয়া সমালোচনার মুখে গত ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এই রাজ্য সরাসরি নয়াদিল্লি থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি ও সরকারি চাকরির কোটা ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করে বলেছেন, রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে রাজ্যের এই বিভাজনে উসকানি দিচ্ছেন। সূত্র: রয়টার্স।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ