ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

সহায়তা পৌঁছালেও গাজার পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ

  • আপডেট সময় : ০৩:৫৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৯ মাস পর গাজায় পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) জাএক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ‘যদিও গাজায় সীমিত সাহায্য সরবরাহ আবার শুরু হয়েছে। তবুও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়ে গেছে।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৈশ্বিক চাপের মুখে ইসরায়েল ১১ সপ্তাহব্যাপী অবরোধ ১২ দিন আগে তুলে নিয়েছে। ফলে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সীমিত সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। এরপর সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামে একটি নতুন বিতরণ ব্যবস্থা চালু হয়। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, কারণ তারা মনে করে এটি নিরপেক্ষ নয় এবং বিতরণ প্রক্রিয়া এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে বিপর্যয়কর।’
ইসরায়েল চায় জাতিসংঘ যেন জিএইচএফের মাধ্যমে কাজ করে। এই সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও সরবরাহ কোম্পানির মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে এবং তথাকথিত ‘নিরাপদ বিতরণ কেন্দ্রে’ তা বেসামরিক দলগুলো বিতরণ করছে। ইসরায়েল বহুদিন ধরেই হামাসকে ত্রাণ চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে, তবে হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ১২ দিনে জাতিসংঘ মাত্র ২০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় পাঠাতে পেরেছে, যা নিরাপত্তাহীনতা ও ইসরায়েলি সীমাবদ্ধতার কারণে বিলম্বিত হয়েছে। কতটুকু সহায়তা প্রকৃত মানুষের কাছে পৌঁছেছে তা পরিষ্কার নয়। জাতিসংঘ জানায়, কিছু ট্রাক ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি গুদাম ক্ষুধার্ত মানুষের দ্বারা লুট হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক মুখপাত্র এরি কানেকো বলেন, ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আমাদের একটিও প্রস্তুত খাবার গাজায় ঢুকতে দেয়নি। শুধু বেকারির জন্য ময়দা অনুমোদিত হয়েছে। এমনকি যদি অসীম পরিমাণে ময়দা অনুমোদনও করা হতো, তবুও তা পূর্ণাঙ্গ খাদ্য হতো না।’
এক জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, ইসরায়েল ত্রাণ পরীক্ষা করে অনুমোদন দেয়। এরপর তা কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ঢোকে। সেখানে তা অন্য ট্রাকে তুলে গাজার গুদামে পাঠানো হয়। বর্তমানে শত শত ট্রাক ত্রাণ কেরেম শালোমে জাতিসংঘের সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছে। জাতিসংঘ জানায়, মঙ্গলবার তাদের সব প্রবেশের অনুরোধ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে। বৃহস্পতিবার যখন ৬৫টি ট্রাক কেরেম শালোম থেকে বের হতে পেরেছিল, তার মধ্যে মাত্র ৫টি গন্তব্যে পৌঁছায়। বাকিগুলো তীব্র লড়াইয়ের কারণে ফিরে যায়। যেসব ৫টি ট্রাক চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছিল, সেগুলোর গুদাম সশস্ত্র ব্যক্তিরা লুট করে। জাতিসংঘ জানায়, ‘সেখানে অপুষ্ট শিশুদের জন্য বরাদ্দ বড় পরিমাণে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও পুষ্টিকর সামগ্রী লুট হয়।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরায়েল মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে হামাস তা বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়েছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সহায়তা পৌঁছালেও গাজার পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ

আপডেট সময় : ০৩:৫৬:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৯ মাস পর গাজায় পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) জাএক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ‘যদিও গাজায় সীমিত সাহায্য সরবরাহ আবার শুরু হয়েছে। তবুও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়ে গেছে।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৈশ্বিক চাপের মুখে ইসরায়েল ১১ সপ্তাহব্যাপী অবরোধ ১২ দিন আগে তুলে নিয়েছে। ফলে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সীমিত সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। এরপর সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামে একটি নতুন বিতরণ ব্যবস্থা চালু হয়। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, কারণ তারা মনে করে এটি নিরপেক্ষ নয় এবং বিতরণ প্রক্রিয়া এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে বিপর্যয়কর।’
ইসরায়েল চায় জাতিসংঘ যেন জিএইচএফের মাধ্যমে কাজ করে। এই সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও সরবরাহ কোম্পানির মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে এবং তথাকথিত ‘নিরাপদ বিতরণ কেন্দ্রে’ তা বেসামরিক দলগুলো বিতরণ করছে। ইসরায়েল বহুদিন ধরেই হামাসকে ত্রাণ চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে, তবে হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ১২ দিনে জাতিসংঘ মাত্র ২০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় পাঠাতে পেরেছে, যা নিরাপত্তাহীনতা ও ইসরায়েলি সীমাবদ্ধতার কারণে বিলম্বিত হয়েছে। কতটুকু সহায়তা প্রকৃত মানুষের কাছে পৌঁছেছে তা পরিষ্কার নয়। জাতিসংঘ জানায়, কিছু ট্রাক ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি গুদাম ক্ষুধার্ত মানুষের দ্বারা লুট হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক মুখপাত্র এরি কানেকো বলেন, ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আমাদের একটিও প্রস্তুত খাবার গাজায় ঢুকতে দেয়নি। শুধু বেকারির জন্য ময়দা অনুমোদিত হয়েছে। এমনকি যদি অসীম পরিমাণে ময়দা অনুমোদনও করা হতো, তবুও তা পূর্ণাঙ্গ খাদ্য হতো না।’
এক জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, ইসরায়েল ত্রাণ পরীক্ষা করে অনুমোদন দেয়। এরপর তা কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ঢোকে। সেখানে তা অন্য ট্রাকে তুলে গাজার গুদামে পাঠানো হয়। বর্তমানে শত শত ট্রাক ত্রাণ কেরেম শালোমে জাতিসংঘের সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছে। জাতিসংঘ জানায়, মঙ্গলবার তাদের সব প্রবেশের অনুরোধ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে। বৃহস্পতিবার যখন ৬৫টি ট্রাক কেরেম শালোম থেকে বের হতে পেরেছিল, তার মধ্যে মাত্র ৫টি গন্তব্যে পৌঁছায়। বাকিগুলো তীব্র লড়াইয়ের কারণে ফিরে যায়। যেসব ৫টি ট্রাক চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছিল, সেগুলোর গুদাম সশস্ত্র ব্যক্তিরা লুট করে। জাতিসংঘ জানায়, ‘সেখানে অপুষ্ট শিশুদের জন্য বরাদ্দ বড় পরিমাণে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও পুষ্টিকর সামগ্রী লুট হয়।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরায়েল মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে হামাস তা বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়েছে।