ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর

সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-বেইজিং ৯ চুক্তি ও এমওইউ

  • আপডেট সময় : ০৪:৪২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

শুক্রবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং -ছবি ইন্টারনেট

প্রত্যাশা ডেস্ক: বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ।

এর মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে। আর চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়সহ গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের মধ্যে শুক্রবার (২৮ মার্চ) বেইজিংয়ে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের পাশাপাশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর জন্য পাঁচটি ঘোষণাও এসেছে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থেকে।

বাংলাদেশে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি নথি স্বাক্ষর হয়েছে। পাশাপাশি মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে দুই দেশ।

চীন বাংলাদেশে একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা দেবে। পাশাপাশি অনুদান হিসেবে একটি কার্ডিয়াক সার্জারি ভেহিকেল দেবে। এ বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে নথি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এদিন বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হবে এবং চীনের শিল্প কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরে সমর্থন দেওয়া হবে।


শুক্রবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস -ছবি ইন্টারনেট

বৈঠকের এ ফলাফলকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করে শফিকুল আলম বলেন, আলোচনা ছিল খুবই ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক; সেখানে উষ্ণতা ও সৌহার্দ্যের ছাপ ছিল।

প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চীনের সমর্থনের কথা বৈঠকে আবারো তুলে ধরেছেন প্রেসিডেন্ট শি। এটা অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর এবং এখন পর্যন্ত সফর অত্যন্ত সফল, বলেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বৈঠকে তুলে ধরেছে, সেগুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে চীন।

চীনা ঋণের সুদ হার কমানো এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার মত বিষয়ও রয়েছে এর মধ্যে। শফিকুল আলম বলেন, প্রেসিডেন্ট শি তার বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বৈঠকে স্মরণ করেছেন। শি বলেছেন, ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালে তিনি ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে পড়েছেন। তিনি বাংলাদেশি আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন এবং সেগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু লেগেছে তার। আগামীতে বাংলাদেশ বড় পরিসরে এ দুটি ফল চীনে রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছে বলে প্রেস সচিব জানান।

নতুন বাংলাদেশের অংশ হতে চীনা ব্যবসায়ীদের প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণ: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মাত্র ৮ মাস আগেই বাংলাদেশে একটা বড় ধরনের রূপান্তর ঘটেছে। ভয়ংকর সব বিষয় থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটেছে। তরুণদের কারণে পরিপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তরুণরা নতুন বাংলাদেশ তৈরির কথা বলছে। শুধু ব্যবসার জন্য না, পরিবর্তনের অংশ হতে আপনাদের এই নতুন বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দুতাবাস আয়োজিত চীনের ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এই আমন্ত্রণ জানান।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর

সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা-বেইজিং ৯ চুক্তি ও এমওইউ

আপডেট সময় : ০৪:৪২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ।

এর মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে। আর চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়সহ গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের মধ্যে শুক্রবার (২৮ মার্চ) বেইজিংয়ে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের পাশাপাশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর জন্য পাঁচটি ঘোষণাও এসেছে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থেকে।

বাংলাদেশে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি নথি স্বাক্ষর হয়েছে। পাশাপাশি মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছে দুই দেশ।

চীন বাংলাদেশে একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা দেবে। পাশাপাশি অনুদান হিসেবে একটি কার্ডিয়াক সার্জারি ভেহিকেল দেবে। এ বিষয়েও দুই দেশের মধ্যে নথি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এদিন বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হবে এবং চীনের শিল্প কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরে সমর্থন দেওয়া হবে।


শুক্রবার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস -ছবি ইন্টারনেট

বৈঠকের এ ফলাফলকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করে শফিকুল আলম বলেন, আলোচনা ছিল খুবই ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক; সেখানে উষ্ণতা ও সৌহার্দ্যের ছাপ ছিল।

প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চীনের সমর্থনের কথা বৈঠকে আবারো তুলে ধরেছেন প্রেসিডেন্ট শি। এটা অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর এবং এখন পর্যন্ত সফর অত্যন্ত সফল, বলেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বৈঠকে তুলে ধরেছে, সেগুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে চীন।

চীনা ঋণের সুদ হার কমানো এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার মত বিষয়ও রয়েছে এর মধ্যে। শফিকুল আলম বলেন, প্রেসিডেন্ট শি তার বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বৈঠকে স্মরণ করেছেন। শি বলেছেন, ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালে তিনি ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে পড়েছেন। তিনি বাংলাদেশি আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন এবং সেগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু লেগেছে তার। আগামীতে বাংলাদেশ বড় পরিসরে এ দুটি ফল চীনে রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছে বলে প্রেস সচিব জানান।

নতুন বাংলাদেশের অংশ হতে চীনা ব্যবসায়ীদের প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণ: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মাত্র ৮ মাস আগেই বাংলাদেশে একটা বড় ধরনের রূপান্তর ঘটেছে। ভয়ংকর সব বিষয় থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটেছে। তরুণদের কারণে পরিপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তরুণরা নতুন বাংলাদেশ তৈরির কথা বলছে। শুধু ব্যবসার জন্য না, পরিবর্তনের অংশ হতে আপনাদের এই নতুন বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দুতাবাস আয়োজিত চীনের ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এই আমন্ত্রণ জানান।