ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। মাঠজুড়ে যেন বিছানো রয়েছে হলুদ গালিচা। রঙের পাশাপাশি সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধ মাতিয়ে দিয়েছে পুরো এলাকা। রঙ আর সুবাসে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক রূপে। সদর উপজেলার মতই ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে এবার কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ফসলের মাঠ ছেয়ে গেছে সরিষার হলুদ ফুলে। সেই সঙ্গে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর ঝিনাইদহের ৬ টি উপজেলায় নয় হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবাদ বৃদ্ধি হয়ে ১১ হাজার ১০২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকা আর কৃষি বিভাগের প্রণোদনা দেওয়ায় এবার আবাদ বেশি হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিমিত পরিচর্যার কারণে ফলনও ভালো আশা করছেন চাষিরা। সদর উপজেলার মিয়াকুন্ডু গ্রামের কৃষক মনু মিয়া বলেন, এবার ঝড় বৃষ্টি হয়নি। যে কারণে সরিষার কোন ক্ষতি হয়নি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার ফলন ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি। একই গ্রামের কৃষক তুষার হোসেন বলেন, গত বছর বৃষ্টির কারণে সরিষা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার এখনো পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। আগামীতে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ৪৬ শতকের বিঘায় আমরা ১০ থেকে ১১ মণ ফলন পাব বলে আশা করছি।
কৃষক জহির মিয়া বলেন, এবার সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। যেই কারণে এবার সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। তেলের যে দাম কিনে খাওয়ার মত নেই। এবার সরিষার ফলন হলে সয়াবিন তেলের উপর আমরা আর নির্ভর করব না। আমরা এবার নিজেদের জমির উৎপাদিত সরিষার তেল দিয়েই সারাবছর চলব। সরিষা আবাদে আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে। কোনো সমস্যা হলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম বলেন, সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এ বছর কৃষকদের পর্যাপ্ত সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। ফলন ভালো পেতে আমরা নিয়মিত কৃষক ভাইদের পরামর্শ দিচ্ছি। সেই সঙ্গে সরিষা ক্ষেতের সাথে মধু চাষ করাচ্ছি। এতে যেমন সরিষার ফলন বাড়ছে তেমন মধু উৎপাদন হচ্ছে। আমরা এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা পাব বলে আশা করছি।
সরিষার হলুদে ছেয়ে গেছে মাঠ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ