নিজস্ব প্রতিবেদক : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী পূজা (বাণী অর্চনা) উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সরস্বতী পূজা বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় একটি ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে এই উৎসবে সবার অংশগ্রহণে দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। জ্ঞানচর্চার মাধ্যমেই মানবসভ্যতা ক্রমান্বয়ে বিকশিত হচ্ছে। গতকাল শনিবার সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আমি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। তিনি বলেন, জ্ঞানার্জনে সরস্বতী দেবীর কৃপা অর্জনের লক্ষ্যেই ভক্তরা এ পূজা করে থাকেন। জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত হয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ সাম্প্রদায়িকতা, অজ্ঞানতা, কূপম-ূকটা থেকে মুক্ত হয়ে একটি কল্যাণকর ও উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আবহমান কাল থেকে এ দেশের মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। তিনি আরও বলেন, আমি জ্ঞানালোকের প্রতীক সরস্বতী পূজা উৎসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।
আ’লীগের আমলে সবাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করছে: প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন। এসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখ-ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন।’
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করেছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করে আসছেন। ‘এখন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের উৎসব সবাই মিলে আনন্দ সহকারে উদযাপন করি। কাউকে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেবো না। আগামী দিনে সব ধর্মের পারস্পারিক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। সবার প্রতি অনুরোধ, আপনারা করোনাভাইরাসের এ সংকটময় সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পূজা উদযাপন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনা অটুট রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের আহ্বান জানান।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ