নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন নিয়ে সব দেশে কম-বেশি প্রশ্ন থাকে, তবে সরকার কোনো চাপ অনুভব করছে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও চাপ অনুভব করছি না। নির্বাচন নিয়ে চাপৃ গভীর চাপ, মধ্যম চাপ আরও নানান ধরনের চাপ ছিল। সব চাপ উতরে নির্বাচন হয়ে গেছে। সুতরাং আমরা কখনো কারও কোনো চাপ অনুভব করি নাই। নির্বাচন নিয়ে সব দেশে কম-বেশি প্রশ্ন থাকে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে সব দেশে কম-বেশি প্রশ্ন থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন পর্যবেক্ষক এসেছেন। তাদের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ভালো একটা নির্বাচন হয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, তোমাদের দেশের চেয়ে ভালো হয়েছে? তখন তিনি বলেছেন, আমাদের দেশেও নির্বাচনের পর নানান প্রশ্ন থাকে। আপনাদের ভালো নির্বাচন হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরাজিত প্রার্থীর কথা বলতে গেলে বলতে হয়, নাচতে না জানলে উঠান বাঁকার মতো। আমাদের দেশে একটি ভালো ও উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত সহিংসতামুক্ত হয়েছে এ নির্বাচন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চ্যালেঞ্জের। তবে বাংলাদেশ পররাষ্ট্রনীতিতে অটল থাকবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবী বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমরা নীতিতে অটল আছি এবং থাকবো। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এ নীতি মেনেই আমরা চলবো। সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের নানান পর্যবেক্ষণ থাকে। কিন্তু দিন শেষে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। সবাইকে নিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের পাশাপাশি বিভিন্ন বন্ধু দেশের কনসার্নকে আমরা মূল্য দেই। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হাছান মাহমুদ। প্রথমবারই তাকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পৌনে সাত মাস দায়িত্ব পালন শেষে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে অন্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয় হাছান মাহমুদকে। সে কথা স্মরণ করে নতুন চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে কাজ করতে কোনো অসুবিধা নেই। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হবে। অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে হবে। বাজার বাড়াতে হবে। সবার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে হবে। কাজ করতে গেলে অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। তখন আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করবো। পূর্ব-পশ্চিমের সব রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা সমস্যা কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান করতে চান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আমরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগের মধ্যে আছি। আমরা আশা করি কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান হবে। আমরা কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানে বিশ্বাস করি না। আমরা কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করবো।
জয়শঙ্করের অভিনন্দন: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। গতকাল রোববার (১৪ জানুয়ারি) এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান জয়শঙ্কর। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন। ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রী আরও গভীর করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে প্রত্যাশা করছি।