নিজস্ব প্রতিবেদক: খরচ বেঁচে যাওয়ায় সরকারি মাধ্যমের চার হাজার ৯৭৮ হজযাত্রীকে প্রায় সোয়া ৮ কোটি টাকা ফেরত পাবেন বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যবসায়িক কোনো উদ্দেশ্য নেই। হাজিদের সেবা করাই সরকারের একমাত্র ব্রত। এ বছর হজ প্যাকেজে বাড়িভাড়ার জন্য যে পরিমাণ টাকা ধার্য করা হয়েছিল, তার চেয়ে কিছু কম রেটে বাড়ি ভাড়া পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম রেটে সার্ভিস চার্জও মিলেছে। এর ফলে প্যাকেজের কিছু টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। এই উদ্বৃত্ত টাকা সরকারি মাধ্যমের প্রত্যেক হাজিকে ফেরত প্রদান করা হবে।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলতি বছরের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে তিনি এ কথা বলেন। ধর্ম উপদেষ্টা জানান, সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ এর (পূর্ণ প্যাকেজ) যেসব হাজি চার ও ছয় নম্বর বাড়িতে ছিলেন, তারা প্রত্যেকে পাঁচ হাজার ৩১৫ টাকা ফেরত পাবেন; আর পাঁচ নম্বর বাড়িতে অবস্থানকারী হাজিরা পাবেন ১৩ হাজার ৫৭০ টাকা করে। যারা শর্ট প্যাকেজের চার নম্বর বাড়িতে ছিলেন, তারা প্রত্যেকে ২৩ হাজার ২৭ টাকা ফেরত পাবেন।
খালিদ হোসেন জানান, সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর (পূর্ণ প্যাকেজ) যেসব হাজি এক নম্বর বাড়িতে ছিলেন, তারা প্রত্যেকে ১৯ হাজার ১৯২ টাকা এবং শর্ট প্যাকেজের হাজিরা ৫১ হাজার ৬৯২ টাকা করে ফেরত পাবেন।
দুই নম্বর বাড়িতে অবস্থানকারী পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা প্রত্যেকে ২১ হাজার ১৪২ টাকা এবং শর্ট প্যাকেজের হাজিরা ৫৩ হাজার ৬৪২ টাকা ফেরত পাবেন। তিন নম্বর বাড়িতে অবস্থানকারী পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা প্রত্যেকে ২৪ হাজার ২৬২ টাকা ফেরত পাবেন।
এসব টাকা হাজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফেরত পাঠানো হবে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ বলেন, এবছর হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের গাইডলাইন অনুসারে আমরা সকল প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করেছি। হজযাত্রী নিবন্ধন, হজের আবশ্যিক ব্যয়ের টাকা আইবিএনের মাধ্যমে সৌদিতে প্রেরণ, নুসুক মাসার নামক অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে মিনা-আরাফায় তাঁবু বরাদ্দ গ্রহণ, বাড়িভাড়া ও সার্ভিস কোম্পানির সাথে চুক্তি, পরিবহন চুক্তি, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এছাড়া হজ ফ্লাইট সিডিউল পর্যালোচনা সাপেক্ষে হজযাত্রী পুনঃবণ্টনের প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করা হয়। তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনার সকল বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা ছিল প্রো-অ্যাক্টিভ। কোনো সংকট তৈরি হওয়ার পূর্বেই আমরা প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিয়েছি। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা একটি টিম স্পিরিট নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এর ফলে এবছর হজে যেতে না পারার বেদনায় কাউকে কাঁদতে হয়নি। কোনো হজ ফ্লাইট বিপর্যয় হয়নি। হজযাত্রীদের মধ্যে কোনোরুপ হট্টগোল, হৈচৈ, শোরগোল দেখা যায়নি। বাংলাদেশের নিবন্ধিত শতভাগ হজযাত্রী হজ পালন করতে পেরেছেন।
এসময় ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আয়াতুল ইসলাম, হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব মঞ্জুরুল হক, হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার ও মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।