ঢাকা ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি বিধান বাতিলে লিভ টু আপিলের শুনানি মুলতবি

  • আপডেট সময় : ১২:২০:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে আগাম অনুমতির বিধান বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি পিছিয়েছে আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আবেদন গতকাল রোববার শুনানির জন্য উঠলে রিটকারীপক্ষ সময়ের আবেদন করে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্ব পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ তখন আদেশ দেয়, এদিন শুনানি হবে না।
আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাই কোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলেও আদেশে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল, কিন্তু রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ একটি ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত নট টুডে (শুনানি আজকে নয়) আদেশ দিয়েছে। এখন এটার ওপর যে স্টে ছিল, তা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।”
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে ২৩ অক্টোবর শুনানি তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছিল আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছিল।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়। আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, “কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।”
নানা মহলের সমালোচনার মধ্যে আইনের এ ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে হাই কোর্ট। সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল করা হবে না এবং এ ধারা সংবিধানের ২৬(১) ও ২৬(২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ২৫ অগাস্ট রায় দেয় বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ। তাতে ওই আইনের ৪১(১) ধারা বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রায়ে বলা হয়, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ওই ধারা ‘সংবিধান পরিপন্থি এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি’। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত ২৯ আগস্ট জাতীয় সংসদে বলেন, “এ আইনে কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায়মুক্তি নেই। সরকারি কর্মচারীরা যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আইনে এ বিধানটি আছে। সিআরপিসির ১৯৭ ধারাতেও এটি আছে।”
সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর এ সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি সংক্রান্ত ধারা ৪১(১) ও ৩ চ্যালেঞ্জ করে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান আরেকটি রিট আবেদন করেছিলেন। তার প্রাথমিক শুনানির পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর রুল দেয় হাইকোর্ট। এটি হাইকোর্টের আরেক বেঞ্চে বিচারাধীন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক হত্যার দায় এড়াতে পারি না, আমাদের ব্যর্থতা আছে

সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি বিধান বাতিলে লিভ টু আপিলের শুনানি মুলতবি

আপডেট সময় : ১২:২০:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে আগাম অনুমতির বিধান বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি পিছিয়েছে আপিল বিভাগ।
রাষ্ট্রপক্ষের এই আবেদন গতকাল রোববার শুনানির জন্য উঠলে রিটকারীপক্ষ সময়ের আবেদন করে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্ব পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ তখন আদেশ দেয়, এদিন শুনানি হবে না।
আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাই কোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলেও আদেশে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল, কিন্তু রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ একটি ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত নট টুডে (শুনানি আজকে নয়) আদেশ দিয়েছে। এখন এটার ওপর যে স্টে ছিল, তা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।”
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে ২৩ অক্টোবর শুনানি তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছিল আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছিল।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারের এক গেজেটে ১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হয়। আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়, “কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।”
নানা মহলের সমালোচনার মধ্যে আইনের এ ধারা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে হাইকোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২১ অক্টোবর রুল জারি করে হাই কোর্ট। সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮-এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল করা হবে না এবং এ ধারা সংবিধানের ২৬(১) ও ২৬(২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ২৫ অগাস্ট রায় দেয় বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ। তাতে ওই আইনের ৪১(১) ধারা বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রায়ে বলা হয়, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ওই ধারা ‘সংবিধান পরিপন্থি এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি’। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত ২৯ আগস্ট জাতীয় সংসদে বলেন, “এ আইনে কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায়মুক্তি নেই। সরকারি কর্মচারীরা যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আইনে এ বিধানটি আছে। সিআরপিসির ১৯৭ ধারাতেও এটি আছে।”
সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর এ সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে পূর্বানুমতি সংক্রান্ত ধারা ৪১(১) ও ৩ চ্যালেঞ্জ করে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান আরেকটি রিট আবেদন করেছিলেন। তার প্রাথমিক শুনানির পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর রুল দেয় হাইকোর্ট। এটি হাইকোর্টের আরেক বেঞ্চে বিচারাধীন।