স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : খিদা মেটাতে, মন ভরাতে কিংবা সময় কাটাতে- যেভাবেই খাওয়া হোক, দেহে শক্তি যোগাতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো একত্রে খেলে উপকার মিলবে বেশি।
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি: প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হল। তবে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা হল কম। তাহলে অল্প পরিমাণে ক্যালসিয়াম দেহে শোষিত হবে। এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কলোরাডো ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ইভেট হিল বলেন, ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে হবে।
প্রকৃতিতে এই দুই পুষ্টি উপাদান যুক্ত খাবার একত্রে পাওয়া যায় না। তাই ভিটামিন ডি পাওয়ার জন্য রোদ গায়ে লাগাতে হবে। বিশেষ করে সকালে এবং দুপুরের পর। এই সময় ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণ কম থাকে। আর ক্যালসিয়াম’য়ের উৎসের মধ্যে আছে দুধ, পনির, সবুজ পত্রল সবজি ইত্যাদি।
ভিটামিন এ এবং চর্বি: চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ভিটামিন এ।
এই তথ্য জানিয়ে আরেক মার্কিন পুষ্টিবিদ ও হৃদরোগ নিরোসনে খাদ্যাভ্যাস-বিষয়ক পরামর্শক মিশেল রুথেনেস্টেইন বলেন, নানান ধরনের লাল-কমলা সবজি ও ফল, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার থেকে মিলবে ভিটামিন এ।
আর এই ভিটামিন চর্বিতে দ্রবণীয়। মানে খালি পেটে এই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার চর্বিযুক্ত খাবার ছাড়া খেলে ভালো মতো দেহে শোষণ হবে না।
এজন্য স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে- খাওয়ার এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এবং তিলের, সূর্যমুখির, তিশি ও বাদামের তেল।
লৌহ এবং ভিটামিন সি: যে খনিজ উপাদান সারা দেহে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে আর শক্তি বাড়ায় সেটা হলে লৌহ। প্রাণিজ উৎস থেকে আসা লৌহকে বলা হয় ‘হেম আয়রন’। আর উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা এই খনিজকে বলা হয় ‘বায়োঅ্যাভেইলেবল’।
হিল বলেন, “উদ্ভিজ্জ লৌহ শোষণের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন হবে ভিটামিন সি। তাই নিরামিষ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে- পালংশাক, তোফু, মটর খাওয়ার পরিমাণ বাড়ালে লৌহ মিলবে। আর দেহে ঠিক মতো শোষণ করতে লেবুর রস, হলুদ ক্যাপ্সিকাম বা ব্রকলি মিলিয়ে খেলেই পাওয়া যাবে ভিটামিন সি।
ভিটামিন ই এবং চর্বি: এটা হল আরেকটি চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। যা মিলবে কাঠবাদাম ও সূর্যমুখির বীজ থেকে। এছাড়াও নানান ধরনের বীজ, বাদাম, স্কোয়াশ ও সবজি থেকেও পাওয়া যাবে এই পুষ্টি উপাদান। সাধারণ নিয়ম হল দেহে ভিটামিন ই’র শোষণ বাড়াতে এসব সবজির সাথে স্বাস্থ্যকর তেল মিলিয়ে খেতে হবে।
কারকিউমিন এবং পিপেরিন: মসলা হলুদে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কারকিউমিন, যা দেহের প্রদাহ নির্মূল করতে পারে। আর কালো গোল মরিচে থাকে পিপেরিন।
এই দুই উপাদান মিলিয়ে খাবার তৈরি করলে দেহে ভালো মতো কারকিউমিন শোষিত হবে, যা দেহের জন্য উপকারী- বলেন হিল।
ভিটামিন কে এবং চর্বি: রক্ত জমাট বাঁধা ও হাড়ের শক্তি বর্ধনে দরকার ভিটামিন কে। দুই ধরনের ভিটামিন কে রয়েছে; ‘কে-ওয়ান’ এবং ‘কে-টু’।
রুথেনেস্টেইন বলেন, সাধারণত ‘ভিটামিন কে-টু’ পাওয়া যায় মুরগির বুকের মাংসে। এছাড় গাঁজানো খাবার থেকেও মিলবে এই পুষ্টি উপাদান। ‘ভিটামিন কে-ওয়ান’ পাওয়া যায় সবুজ পত্রল সবজি, যেমন- কপি, পালংশাক, ব্রকলি ইত্যাদিতে। ভিটামিন ‘এ’, ‘ডি’ এবং ‘ই’য়ের মেতো ভিটামিন ‘কে’ গ্রহণ করতে দরকার স্বাস্থ্যকর চর্বি বা তেল। অনেকেই শুকনা সালাদ গ্রহণ করেন। তবে এর সাথে যদি তেল, বাদাম বা বীজ মিলিয়ে খাওয়া যায় তবে ভিটামিন ‘কে’ শোষণ হবে ঠিক মতো। শুকনা সালাদ থেকে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনগুলো ঠিক মতো শোষিত হয় না।