কক্সবাজার সংবাদদাতা : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ৭০টি কাছিমের মরদেহ উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট-বোরি। শনিবার, রোববার ও সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের টেকনাফ, উখিয়া এবং রামুর হিমছড়ি সৈকতের পাড় থেকে মৃত কাছিমগুলো উদ্ধার করা হয়। কাছিমগুলো জলপাই রঙের বা অলিভ রিডলি প্রজাতির। পরে সেগুলো বালিচাপা দেওয়া হয় বলে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিমুল ভূঁইয়া জানান। শিমুল বলেন, সম্প্রতি স্থানীয়রা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় কিছু কচ্ছপের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে তাদের খবর দেন।
পরে তাদের একদল গবেষক শনিবার টেকনাফ উপজেলার সাবরাং জিরো পয়েন্ট থেকে উখিয়ার রূপপতি এলাকা পর্যন্ত ১২টি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করে। গত রোববার রূপপতি থেকে সোনারপাড়া পর্যন্ত ৫০টি এবং সোমবার প্যাঁচার দ্বীপ থেকে রামুর হিমছড়ি পর্যন্ত ৮টি কচ্ছপের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বলে বলে জানান তিনি। শিমুল বলেন, “নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা কচ্ছপ উপকূলে ডিম পাড়তে আসে। তখন অনেক কচ্ছপ জেলেদের জালে আটকে এবং সমুদ্রে চলাচলকারী বড় নৌযানের ধাক্কায় মারা যায়। তদন্তের পর কচ্ছপগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে।” এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, “কাছিমগুলো গেলো দুই মাসে মারা গেছে। এক-দুদিনে মারা গেছে এমনটি নয়। আমরা অনেকগুলো কঙ্কাল পেয়েছি।”
এদিকে প্রজনন মৌসুমে এভাবে কাছিমের মৃত্যুতে উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি এইচ এম এরশাদ বলেন, “পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত যাতায়াতের কারণে কাছিম ডিম পাড়তে আসতে পারছে না। অন্যদিকে সন্দীপ, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া সহ বিভিন্ন উপকূলে প্রায় ২০ হাজার ট্রলার মাছ ধরতে গভীর সমুদ্র যায়।“জেলেরা গভীর সাগরে ভাসমান জাল, ডুবাজাল, যন্ত্রযাপিত ট্রলারসহ ৪০/৬০ ফুট লম্বা বিহুন্দি ও লাইক্ষ্যা জাল পেতে রাখে। যেখানে কাছিম আটকে পড়ে।” এছাড়া জেলেরা ঝামেলা এড়াতে বাঁশ, কাঠ, লোহাসহ বিভিন্ন কঠিন জিনিস দিয়ে কাছিমগুলো হত্যা করে। পরে মৃত কাছিমগুলো উপকূলে ভেসে আসে বলে জানান তিনি।