প্রত্যাশা ডেস্ক: সব ধর্মীয় আচার-আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর পোপ ফ্রান্সিসকে সমাহিত করা হয়েছে। ভ্যাটিকানের সীমানার বাইরে সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে ব্যাসিলিকায় তাকে সমাহিত করা হয়। গত ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো পোপকে ভ্যাটিকানের বাইরে সমাহিত করা হলো।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) পোপের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে চার লাখের বেশি মানুষ অংশ নেয় বলে নিশ্চিত করেছে ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। এর আগে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের প্রার্থনা মিছিল শেষে কফিন সমাধিস্থলে পৌঁছায়। পোপের কফিন ধীরে ধীরে এক শোভাযাত্রার মাধ্যমে রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর গির্জায় সমাহিত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। শোভাযাত্রাটি ভ্যাটিকান সিটি থেকে বেরিয়ে আরও ছয় কিলোমিটার অর্থাৎ পৌনে চার মাইল পথ পাড়ি দেয়।
সাধারণ মানুষ রাস্তার দুই পাশে স্থাপিত ব্যারিকেডের পেছন থেকে শোক শোভাযাত্রাটি অনুসরণ করতে পেরেছে। তবে সরাসরি শোভাযাত্রার পেছনে হাঁটার সুযোগ ছিল না। পথে পথে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল যারা দিকনির্দেশনা, চিকিৎসা সহায়তা ও পানি সরবরাহ করেছে। সূত্র: বিবিসি
শেষকৃত্যে মানুষের ঢল: সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে অনুষ্ঠিত রোমান ক্যাথলিকদের প্রয়াত ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে মানুষের ঢল নামে। স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকেই ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা গির্জার সামনের চত্বরে এই রাষ্ট্রীয় মর্যাদাপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সে সময় মানুষের ঢল নামে। খবর বিবিসির।
এই শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নিতে ভ্যাটিকানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও রাজপরিবারের সদস্যরা। এদের মধ্যে আছেন প্রিন্স উইলিয়াম, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, স্পেনের রাজা ফিলিপ ষষ্ঠ ও রানী লেতিজিয়া এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা ডি সিলভা।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যেই দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে রোমে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।
এছাড়া সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলে শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রোমে গেছেন। তিনি তার স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কি এবং একটি ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল নিয়ে শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছেন। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সস্পিলনকে এ তথ্য জানিয়েছে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র। সেইসঙ্গে যোগ দিয়েছেন ক্যাথলিক ধর্মানুসারি থেকে শুরু করে শোকাহত হাজারো মানুষ।
গত বুধবার সকালে পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় আনা হয় এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় জনসাধারণের জন্য প্রদর্শন শেষ হয়। এই তিনদিনে আড়াই লাখের বেশি মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বলে ভ্যাটিকান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। বুধবার যখন প্রথম মরদেহ দর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তখন ব্যাসিলিকা পুরো রাত খোলা রাখা হয়েছিল যেন ভক্তরা শেষবারের মতো পোপ ফ্রান্সিসকে দেখতে পারেন।