ঢাকা ০২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সব পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি দোকান মালিক সমিতির

  • আপডেট সময় : ০৭:২৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সব পণ্যের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। একইসঙ্গে দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অন্তর্ভুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

এতে সংগঠনটির সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, জিডিপিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদান রাখা ৭০ লাখ দোকান ব্যবসায়ীরা প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন। আমরা ভ্যাটবিরোধী নই। তবে ভ্যাট আদায় সহজ করে এবং ভ্যালু অ্যাডেড শতকরা হার নির্ধারণ করে তার ওপর দোকান ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিতে চাই। কারণ, একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী পাঁচটি খাতা সংরক্ষণ করে ভ্যাটের হিসাব নির্ণয় করা সম্ভব নয়। যদি তা করতে হয় তাহলে তাকে একজন অভিজ্ঞ লোক বা আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে। যা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রায় ৭০ লাখ দোকান ব্যবসায়ীর বর্তমান টিকে থাকাই যেখানে কষ্টসাধ্য সেখানে ভ্যাট বাড়ানোর কারণে দোকান ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীরা সুদ বৃদ্ধির কারণে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হওয়ার পথে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি করছি। আইন অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ী ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখতে হবে। কিন্তু এনবিআর সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকান ব্যবসাকে এর আওতার বহির্ভূত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। একইসঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ৩০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটের আওতার বাইরে রেখে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।

এ ব্যবসায়ী নেতা অভিযোগ করে বলেন, আমরা এর তীব্র বিরোধিতা পূর্বেও করেছি বর্তমানেও করছি। আমরা চাই প্রত্যেকটি পণ্যের উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ করে ভ্যাট আদায় করা হোক। এতে দোকান ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা ভ্যাটের নামে হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবেন।

মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীরা বছরের ১০ মাস গড়ে যা বিক্রি করেন সে তুলনায় ঈদুল ফিতরের মাসে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি বিক্রি করে থাকেন। এ কারণে কিছু অসাধু ভ্যাট কর্মকর্তা ঈদুল ফিতরের মাসে ভ্যাট অভিযানের নামে দোকান ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে থাকেন। তাই আমরা ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করার দাবি করছি।

এসময় তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে-

১. সব পণ্যের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রেখে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকানসহ সব দোকানের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর করতে হবে।

২. উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ করে ভ্যাট আদায় করতে হবে। ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করতে হবে।

৩. ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

৪. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোগ্য পণ্যের দাম নির্ধারণে দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৫. দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সব পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি দোকান মালিক সমিতির

আপডেট সময় : ০৭:২৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সব পণ্যের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। একইসঙ্গে দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অন্তর্ভুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

এতে সংগঠনটির সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, জিডিপিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদান রাখা ৭০ লাখ দোকান ব্যবসায়ীরা প্রায় ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন। আমরা ভ্যাটবিরোধী নই। তবে ভ্যাট আদায় সহজ করে এবং ভ্যালু অ্যাডেড শতকরা হার নির্ধারণ করে তার ওপর দোকান ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিতে চাই। কারণ, একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী পাঁচটি খাতা সংরক্ষণ করে ভ্যাটের হিসাব নির্ণয় করা সম্ভব নয়। যদি তা করতে হয় তাহলে তাকে একজন অভিজ্ঞ লোক বা আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে। যা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রায় ৭০ লাখ দোকান ব্যবসায়ীর বর্তমান টিকে থাকাই যেখানে কষ্টসাধ্য সেখানে ভ্যাট বাড়ানোর কারণে দোকান ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীরা সুদ বৃদ্ধির কারণে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হওয়ার পথে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি করছি। আইন অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ী ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখতে হবে। কিন্তু এনবিআর সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকান ব্যবসাকে এর আওতার বহির্ভূত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। একইসঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ৩০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটের আওতার বাইরে রেখে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।

এ ব্যবসায়ী নেতা অভিযোগ করে বলেন, আমরা এর তীব্র বিরোধিতা পূর্বেও করেছি বর্তমানেও করছি। আমরা চাই প্রত্যেকটি পণ্যের উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ করে ভ্যাট আদায় করা হোক। এতে দোকান ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা ভ্যাটের নামে হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবেন।

মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীরা বছরের ১০ মাস গড়ে যা বিক্রি করেন সে তুলনায় ঈদুল ফিতরের মাসে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি বিক্রি করে থাকেন। এ কারণে কিছু অসাধু ভ্যাট কর্মকর্তা ঈদুল ফিতরের মাসে ভ্যাট অভিযানের নামে দোকান ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে থাকেন। তাই আমরা ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করার দাবি করছি।

এসময় তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে-

১. সব পণ্যের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত রেখে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, শপিং মলে অবস্থিত দোকানসহ সব দোকানের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর করতে হবে।

২. উৎপাদন বা আমদানি পর্যায়ে এমআরপি নির্ধারণ করে ভ্যাট আদায় করতে হবে। ঈদুল ফিতরের মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাসে ভ্যাট অভিযান পরিচালিত করতে হবে।

৩. ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের সুদ মওকুফ করে ১ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১৫ বছরের কিস্তিতে এককালীন ঋণ পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

৪. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোগ্য পণ্যের দাম নির্ধারণে দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৫. দোকান ব্যবসাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।