নিজস্ব প্রতিবেদক : অননুমোদিত ও অনিবন্ধিত সব নিউজ পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন দুই রিটকারী আইনজীবী জারিন রহমান ও রাশিদা চৌধুরী নীলু। এর আগে গত ৫ মে সংবেদনশীল সংবাদসহ যেকোনও খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়ন চেয়ে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিস পাঠানো হয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে এ নোটিস প্রেরণ করা হয়। তবে সে নোটিসের কোনও জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী জারিন রহমান ও রাশিদা চৌধুরী নীলু।
রিট আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি রাজধানীতে ২১ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দ-বিধি আইনের ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যে, বিশেষ করে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে অগ্রহণযোগ্যভাবে নিউজ পরিবেশন করা হয়েছে। অথচ এসব সংবাদ পরিবেশনা বন্ধে বিটিআরসি কিংবা প্রেস কাউন্সিল কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ‘এমতাবস্থায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে দেশে অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টালগুলো চালু থাকার পরও বিটিআরসি কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই এসব পোর্টালের রেজিস্ট্রেশনও জরুরি।’
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ‘ন্যাশনাল অনলাইন মাস মিডিয়া পলিসি-২০১৭’ অনুযায়ী দেশে অননুমোদিত ও অরেজিস্ট্রিকৃত অনলাইন মিডিয়াগুলো কেন বন্ধ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
১০ দৈনিক পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল : ধারাবাহিকভাবে বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত নয়টি বাংলা দৈনিক এবং একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার ঘোষণাপত্র (ডিক্লারেশন) বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরে গত ৮ সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।
গণ আওয়াজ, দৈনিক জনসেবা, ঢাকা প্রকাশ, জাতির কণ্ঠ, কিষাণ, এই দেশ এই দিন, পূর্ব আলো, সময়ের পাতা ও রিপোর্টার এবং দি ফাইনান্সিয়াল ডেইলির ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
অর্থাৎ, এসব পত্রিকা প্রকাশ বা প্রচারের অনুমতি এখন আর থাকল না।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, ১৯৭৩ সনের ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধন) আইনের ৯ (১) এর (৩) (ক) ধারা ভঙ্গ এবং পত্রিকাগুলোর প্রকাশক ও সম্পাদক চুক্তিপত্রের শর্ত না মানায় পত্রিকাগুলোর ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়েছে। যেসব পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয় না, সেগুলো বন্ধের জন্য সরকারের তরফ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সে কথা গত মাসের শেষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদও বলেছিলেন।
২৪ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এগুলো ভুতুড়ে পত্রিকা। এখানে নিয়োগকৃতদের বেতন দেওয়া হয় না, এরা চাঁদাবাজিসহ নানা কিছুতে লিপ্ত হয় এবং সেই বদনামটা সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যা কখনোই সমীচীন নয়। এজন্য আমরা ভুতুড়ে পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।”
ছাপানো সংবাদপত্রগুলো তাদের নথিপত্রে প্রচার সংখ্যার যে খতিয়ান দেয়, তার সঙ্গে ‘বাস্তবতার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না’ বলেও এর আগে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। ুকরোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর ছাপনো পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা তলানীতে নেমে যায়, বেশ কয়েকটি পত্রিকা ছাপানো বন্ধও রাখা হয়। এরপরেও অনেক পত্রিকা বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য তাদের প্রচার সংখ্যা বেশি দেখিয়েছে বলে সে সময় তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।
সব অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ