লাইফস্টাইল ডেস্ক: সকালের বাতাসে বা পড়ন্ত বিকেলে কিছুক্ষণ হেঁটে নেওয়া মন ভালো করার পাশাপাশি শরীরের নানান উপকারে আসে। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের প্রথম শরীরচর্চা হিসেবে চিকিৎসকরা তাই হাঁটতে পরামর্শ দেন।
নিয়মিত হাঁটা হৃদযন্ত্র থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য — সব কিছুর জন্যই এক ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধ। তবে অনেকের প্রশ্ন – প্রতিদিনই কি হাঁটতে হবে? সপ্তাহে ঠিক কতদিন হাঁটলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়?
জেনে নেওয়া যা কীভাবে হাঁটার পরিকল্পনা করলে এর সর্বোচ্চ উপকার উপভোগ করতে পারবেন-
১. পাঁচ দিনের নিয়ম
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করেছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি মানের শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। অর্থাৎ সপ্তাহে পাঁচ দিন, প্রতিদিন আধা ঘণ্টা দ্রুত হাঁটা। এ নিয়ম মেনে চললে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে, শরীর থাকে হালকা আর মন থাকে প্রফুল্ল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটা হলো এক ধরনের ‘প্রিভেন্টিভ মেডিসিন’, যা নানা রোগকে দূরে রাখে।
২. এক–দুই দিনও ফল দেয়
এমন নয় যে, সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটতে না পারলে আর কোনো লাভ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং এবং জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটির ২০২৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে মাত্র এক–দুই দিন যদি প্রায় আট হাজার পদক্ষেপ হাঁটা যায়, তবুও হৃদরোগের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। যারা ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন সময় বের করতে পারেন না, তারাও সপ্তাহান্তে দীর্ঘ সময় হাঁটলে শরীর উপকার পায়।
হাঁটার রয়েছে অ্যান্টি-এজিং বা বার্ধক্য ঠেকানোর এক বিশেষ ক্ষমতা। নিয়মিত হাঁটলে ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও বয়সজনিত অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমে যায়। শুধু তাই নয়, হাঁটা মস্তিষ্ককে চাঙা রাখে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
শুরু করবেন যেভাবে
হাঁটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো — এটি শুরু করতে কোনো বিশেষ প্রস্তুতি লাগে না। দামি জুতা বা জিম মেম্বারশিপের দরকার নেই। সকালে বা সন্ধ্যায় ৩০ মিনিট সময় বের করুন। না পারলে অন্তত সপ্তাহে এক–দুদিন হলেও লম্বা সময় হাঁটুন। চাইলে বন্ধু বা পরিবারের কাউকে সঙ্গে নিতে পারেন—তাহলেই হাঁটার সময়টা হয়ে উঠবে আরও আনন্দময়।
হাঁটা এমন এক অভ্যাস, যা শরীরকে রাখে ফিট আর মনকে রাখে হাসিখুশি। সপ্তাহে পাঁচ দিন নিয়ম মেনে হাঁটুন, না পারলে অন্তত এক–দুদিন দীর্ঘ হাঁটা চালিয়ে যান।
সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিডিসি, জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, জার্নাল অব জেরোন্টোলজি
এসি/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫