ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫

সন্ত্রাস বন্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হবে যৌথ অভিযান, থাকবে সেনাবাহিনী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:১৬:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদকের বিস্তার রোধে যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির পঞ্চম সভা শেষে তিনি একথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আমরা মাঝে মধ্যেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করছি। বিনা কারণে রক্তপাতও দেখছি। মাঝে মধ্যে মিয়ানমার থেকে মাদকের আনাগোনাও লক্ষ্য করছি। এটার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অভ্যন্তরে গোয়েন্দা কার্যক্রম বন্ধের লক্ষ্যে তথ্যভিত্তিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, সেসব অভিযানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার তো আছেই; যদি প্রয়োজন হয় সেখানে আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যুক্ত হবেন। ওখানে এপিবিএন কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে ও বাস্তবতার নিরিখে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার, পুলিশ, এপিবিএন- যৌথভাবে ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে অভিযান পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন আমাদের এখানে অবস্থান করার কারণে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। বারবার প্রচেষ্টার পরেও তাদের দেশে যাওয়ার যে প্রক্রিয়াটা তাদের অনীহার কারণে শুরু করতে পারিনি। তারপরও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝে মধ্যেই রক্তপাত দেখছি, সন্ত্রাস দেখছি।’
‘অস্ত্র দ্বারা তারা রক্তপাত করছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। এগুলো কোথা থেকে আসে কীভাবে আসে এ নিয়ে তথ্য প্রকাশ করবো শিগগির। এরা মিয়ানমারের মোবাইল ব্যবহার করে এতে ক্রিমিনালদের শনাক্ত করতে পারছি না। আমরা যেটা চাচ্ছি তারা যেন আমাদের দেশি মোবাইল ব্যবহার করে। আমরা যেভাবে মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করি সেভাবেই করবো। একটি এসওপি করবো।’
সভায় নেওয়া অন্যান্য সিদ্ধান্ত তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে বারবার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে। সেগুলো কেন হচ্ছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন প্রায় শেষ দিকে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টহল রাস্তাও কিছুটা বাকি আছে, শেষের দিকে। ওয়াচটাওয়ার সেখানে হবে। তারা যেন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে সে ব্যবস্থা করছি।’ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে জন্মনিরোধের জন্য একটি এসওপি তৈরির কাজ চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ইসলামি ফাউন্ডেশন এ নিয়ে কাজ করছে। ঘরে ঘরে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন এবং সচেতন করছেন। মসজিদের ইমাম ও এনজিওরাও এ বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছেন।’ ‘নাফ নদী যেটা আমাদের মাদক আনা-নেওয়ার রুট সেখানে মাছ ধরার ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে এবং বাইরে মাদক চোরাচালান বন্ধে অভিযান যেটা ছিল সেটা আরও জোরদার করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের নিতে আগ্রহ জানিয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিতে যেসব দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কোনো দেশ যদি আগ্রহ প্রকাশ করে, তারা কী পরিমাণ নেবেন তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা সেগুলোই খতিয়ে দেখছি। এখনও কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি।’ ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। এ রকম যদি কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাদের আমরা বলবো অধিক সংখ্যক নেওয়ার জন্য। অধিক সংখ্যক নিয়ে এ সমস্যা যাতে দ্রুত শেষ হয় সেটাই ভালো।’ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার অগ্রগতির বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে ডে ওয়ান থেকেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তখনকার সরকার প্রধান অং সান সুচির সঙ্গে আমিও ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও করেছেন। যাতে এগুলো দ্রুত শেষ হয় তা নিয়ে সব ভাবেই আলোচনার টেবিলে যাচ্ছি, প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, এ সমস্যা আমরা শেষ করতে পারবো।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও পরিবারের ৫৭৬ কোটি টাকা ফ্রিজ

সন্ত্রাস বন্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হবে যৌথ অভিযান, থাকবে সেনাবাহিনী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:১৬:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদকের বিস্তার রোধে যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির পঞ্চম সভা শেষে তিনি একথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আমরা মাঝে মধ্যেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করছি। বিনা কারণে রক্তপাতও দেখছি। মাঝে মধ্যে মিয়ানমার থেকে মাদকের আনাগোনাও লক্ষ্য করছি। এটার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অভ্যন্তরে গোয়েন্দা কার্যক্রম বন্ধের লক্ষ্যে তথ্যভিত্তিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, সেসব অভিযানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার তো আছেই; যদি প্রয়োজন হয় সেখানে আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যুক্ত হবেন। ওখানে এপিবিএন কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে ও বাস্তবতার নিরিখে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার, পুলিশ, এপিবিএন- যৌথভাবে ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে অভিযান পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন আমাদের এখানে অবস্থান করার কারণে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। বারবার প্রচেষ্টার পরেও তাদের দেশে যাওয়ার যে প্রক্রিয়াটা তাদের অনীহার কারণে শুরু করতে পারিনি। তারপরও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝে মধ্যেই রক্তপাত দেখছি, সন্ত্রাস দেখছি।’
‘অস্ত্র দ্বারা তারা রক্তপাত করছে, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। এগুলো কোথা থেকে আসে কীভাবে আসে এ নিয়ে তথ্য প্রকাশ করবো শিগগির। এরা মিয়ানমারের মোবাইল ব্যবহার করে এতে ক্রিমিনালদের শনাক্ত করতে পারছি না। আমরা যেটা চাচ্ছি তারা যেন আমাদের দেশি মোবাইল ব্যবহার করে। আমরা যেভাবে মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করি সেভাবেই করবো। একটি এসওপি করবো।’
সভায় নেওয়া অন্যান্য সিদ্ধান্ত তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে বারবার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে। সেগুলো কেন হচ্ছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন প্রায় শেষ দিকে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টহল রাস্তাও কিছুটা বাকি আছে, শেষের দিকে। ওয়াচটাওয়ার সেখানে হবে। তারা যেন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে সে ব্যবস্থা করছি।’ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে জন্মনিরোধের জন্য একটি এসওপি তৈরির কাজ চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ইসলামি ফাউন্ডেশন এ নিয়ে কাজ করছে। ঘরে ঘরে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন এবং সচেতন করছেন। মসজিদের ইমাম ও এনজিওরাও এ বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছেন।’ ‘নাফ নদী যেটা আমাদের মাদক আনা-নেওয়ার রুট সেখানে মাছ ধরার ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে এবং বাইরে মাদক চোরাচালান বন্ধে অভিযান যেটা ছিল সেটা আরও জোরদার করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের নিতে আগ্রহ জানিয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিতে যেসব দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কোনো দেশ যদি আগ্রহ প্রকাশ করে, তারা কী পরিমাণ নেবেন তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা সেগুলোই খতিয়ে দেখছি। এখনও কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি।’ ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। এ রকম যদি কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাদের আমরা বলবো অধিক সংখ্যক নেওয়ার জন্য। অধিক সংখ্যক নিয়ে এ সমস্যা যাতে দ্রুত শেষ হয় সেটাই ভালো।’ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার অগ্রগতির বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে ডে ওয়ান থেকেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তখনকার সরকার প্রধান অং সান সুচির সঙ্গে আমিও ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও করেছেন। যাতে এগুলো দ্রুত শেষ হয় তা নিয়ে সব ভাবেই আলোচনার টেবিলে যাচ্ছি, প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, এ সমস্যা আমরা শেষ করতে পারবো।’