নিজস্ব প্রতিবেদক : আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাজির না হয়ে শিশু সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশি বাবা শাহিনুর টিআইএম নবীর দেশ ত্যাগের ঘটনায় শিশুটির দাদা টিআইএম নবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ ডিসেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হয়ে মিথ্যা জিডি ও ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে টিআইএম নবীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
আদালত অবমাননার এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ব্যারিস্টার ফাইজা মেহরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। এর আগে ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইট থেকে অন্ধ্র প্রদেশের হায়দারাবাদের সাদিকা সাঈদ শেখ নামে এক নারীকে পছন্দ করেন ঢাকার বারিধারার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনুর টিআইএম নবী। মেয়েটিও হায়দারাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের। ২০১৭ সালে হায়দারাবাদে তাদের ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। এরমধ্যে ২০১৮ সালে এই দম্পতির একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
একপর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরও করেন তার স্বামী। ভারতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ওই নারীর যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়। তবে আত্মীয়-স্বজনরা বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চেয়ে রিট দায়ের করেন। এরপর গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশু সন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী। এদিকে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পরপরই বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টিআইএম নবী তার ভারতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন।
গত ১৬ নভেম্বর এক রিটের আদেশে শিশু সন্তানকে নিয়ে তার বাবা শাহিনুর টিআইএম নবীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তবে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও হাজির না হয়ে তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যান বাবা শাহিনুর টিআইএম নবী। পরে শিশুর বাবা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এরপর শাহিনুরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন জানানো হয়।
সন্তান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়েছেন বাবা, দাদাকে হাইকোর্টে তলব
জনপ্রিয় সংবাদ