লাইফস্টাইল ডেস্ক: পরীক্ষা মানেই অতিরিক্ত চাপ; হোক সেটি ক্লাসের সারপ্রাইজ টেস্ট অথবা বোর্ড পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীর মনে পড়াশোনা নিয়ে চাপ থাকে সব সময়। তবে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শুধু সন্তানেরাই দেয় না, তাদের সঙ্গী হন মা-বাবাও। সন্তানের খেয়াল রাখা, ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে কি না, সুবিধা-অসুবিধা, সব দিকে আলাদা নজর রাখেন তারা। তবে অনেক সময় দেখা যায়, সন্তানের পড়াশোনার চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এসএসসি পরীক্ষা চলছে। তাই জেনে রাখুন এ ধরনের চাপ সামলাতে কী করবেন।
বাড়তি চাপ দেবেন না: পরীক্ষা ও পড়াশোনা নিয়ে আপনার সন্তান ইতিমধ্যে বেশ চাপে আছে। সেখানে নতুন করে কোনো চাপ যোগ করবেন না। পরীক্ষায় ভালো করতে হবে কিংবা ফল খারাপ হলে কী হবে; এসব কথা বলে তার মনোবল ভেঙে দেবেন না। মা-বাবাই সন্তানের কাছে সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা। সেখান থেকে বাড়তি চাপ এলে তা সামলানো কঠিন; বরং তাকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করুন, উৎসাহ দিন; যাতে সে বাইরের চাপে ভেঙে না পড়ে।
পড়ার সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দিন: অনেক চাপের মধ্যে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া বেশ কঠিন। এ জন্য প্রয়োজন স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ। বাড়তি কোলাহলবিহীন শান্ত পরিবেশ, যেখানে পরীক্ষার্থী আরামে পড়াশোনা করতে পারবে। মনোযোগ কেড়ে নিতে পারে, এমন যেকোনো ঘটনা বা যন্ত্র থেকে তাকে দূরে রাখুন। একেকজনের পড়াশোনার ধরন একেক রকম। কেউ নিরিবিলি পড়তে ভালোবাসে, কেউ গান শুনতে শুনতে, কেউ আবার উচ্চ স্বরে। আপনার সন্তানের যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য, সেভাবে পড়ার পরিবেশ দিন।
ভালো খাওয়া-দাওয়া: পরীক্ষার অতিরিক্ত চাপ অনেকে সামাল দিতে পারে না। সেই চাপ থেকে পেটের সমস্যা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। পেটের ওপর যাতে অতিরিক্ত কোনো চাপ না পড়ে, সেই খেয়াল রাখুন। পরীক্ষা চলাকালে বাইরের খাবার যতা সম্ভব পরিহার করুন। সন্তান যেসব খাবার পছন্দ করে, সেসব রান্না করতে পারেন; তবে স্বাস্থ্যকর যে হতে হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্তানের শরীরে যাতে পানির অভাব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে পেট ভালো থাকবে। আর পেট ভালো তো মনও শান্ত।
পজিটিভ প্যারেন্টিং: অতিরিক্ত চাপ সামলাতে দরকার হয় বাড়তি উৎসাহের। যে কারণে সন্তানকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিন। যাতে সে দমে না যায়। মা–বাবার কাছ থেকে ইতিবাচক সমর্থন পেলে সন্তানও মনোযোগী হয়ে ওঠে। ভালো ফল করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সন্তান যাতে আপনাকে বন্ধু মনে করে, তার মনের কথা ঠিকভাবে খুলে বলতে পারে, এমন পরিবেশ তৈরি করুন।
সার্বিক খেয়াল রাখুন: পরীক্ষা মানেই শুধু পড়াশোনা নয়। পরীক্ষায় ভালো করতে প্রয়োজন সুস্থ মস্তিষ্কের। খেয়াল রাখুন, যাতে সন্তান পড়াশোনার চাপে নাওয়া-খাওয়া ভুলে না যায়। সঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া, ঘুম ও বিরতি নিশ্চিত করুন। মন ভালো রাখতে, চাপমুক্ত থাকতে বিনোদনেরও প্রয়োজন আছে। সেটি নিশ্চিত করুন। সাহায্যের জন্য যদি কোনো টিউটর থাকেন, তিনি কীভাবে পড়াচ্ছেন, তার খোঁজও রাখুন।
পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় উপকরণ তৈরি রাখুন: পরীক্ষার সময় সন্তানের যাতে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়, সেসব বিষয়ে খেয়াল রাখুন। কীভাবে পরীক্ষার হলে যাবে; কলম, পেনসিল ঠিক আছে কি না, প্রবেশপত্রের ফটোকপি করে রাখা হয়েছে কি না, এসব ব্যাপারে যাতে সন্তানের কোনো সমস্যা না হয়, সেটি নিশ্চিত করুন। পরীক্ষার সময় তার যেন পরীক্ষা ছাড়া আর কোনো চিন্তা না থাকে।