ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে ‘শরৎ উৎসব’

  • আপডেট সময় : ০৭:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন প্রতিবেদক: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি সরিয়ে মেঘের ভেলায় চড়ে বছর ঘুরে এসেছে শরৎ। প্রতিবারের মত এবারও শরতের রঙ ছড়িয়ে দিতে রাজধানীতে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করেছে ‘শরৎ উৎসব’।
শুদ্ধ-সুন্দর-শুভ্রতায় মঙ্গলের বার্তা আনার প্রত্যয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় যন্ত্রসঙ্গীতের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন। মঞ্চে সরোদ বাদনে ছিলেন যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী মো. ইউসুফ খান। আয়োজনে নাচ, গান, আবৃত্তি পরিবেশন করেছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
সুর, তাল, ছন্দের আবাহনে উদযাপিত এই উৎসবের ঘোষণা পত্রে বলা হয়, “প্রকৃতির সঙ্গে মানবের মিলনে জীবনের আনন্দরস খুঁজে পাওয়ার চিরন্তন শারদীয় উৎসবে এবার মিশে আছে বেদনার সুর।”
সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, “আমরা সশ্রদ্ধভাবে স্মরণ করি নবপ্রভাতের স্বপ্নবহ ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি-দানকারীদের, ব্যথিত চিত্তে লক্ষ্য করি ঘৃণা অসহিষ্ণুতা ও হিংসার বিস্তারে দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু।
“বৈষম্যহীন মুক্ত স্বাধীন সম্প্রীতির সমাজের স্বপ্নবহ আন্দোলন জীবনে নানাভাবে পল্লবিত হউক, সেই প্রত্যাশাও মিশে থাকে শরৎ-আবাহনে।”
শারদোৎসব মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির, জীবনের সঙ্গে মহাজীবনের, সমকালের সঙ্গে চিরকালের মেলবন্ধন রচনা করে বলে মন্তব্য করেন সুইট। তিনি বলেন, “বাংলার মাটির ও প্রকৃতির এমন উৎসব তাই নব-আনন্দে জেগে-ওঠার বাণীমন্ত্র যেমন শোনায়, তেমনি আমাদের দায়িত্ববান করে তোলে প্রকৃতি-সংহারী পদক্ষেপ প্রতিরোধে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে, সেইসাথে মানবসমাজ ও জীবনের চালচিত্রে বিভিন্নতার রঙ-রূপ-রস রক্ষাকরে সম্প্রীতির জয়গান গাইতে।”
কথন পর্বে চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সুশান্ত অধিকারী বলেন, “আমরা যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছি, তারা শাপলার বিলে সাঁতার কেটেছি। কাশবনে ঘুরে বেড়িয়েছি। তাদের অনুভবে শরৎ ধরা দেয় অনন্যরূপে। শহরের শিশুদের কাছে হয়তো এই রূপ অচেনা। আমাদের অভিভাবকদের দায় রয়েছে, আমাদের সন্তানদেরকে প্রকৃতির এই রূপ বৈচিত্র সম্পর্কে জানানোর।”
“গ্রামে এখনো কিছু কিছু প্রকৃতির বৈচিত্র দেখা যায়। এই রূপ বৈচিত্রের সঙ্গে আমাদের সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে”, বলেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন। সভাপতির বক্তব্যে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি নিগার চৌধুরী বলেছেন বাংলার ছয়টি ঋতুর আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, আলাদা বার্তা আছে। শরৎ ঋতুকে বলা হয় শুভ্রতার প্রতীক। “এই ঋতুতে আমাদের মাঠে নতুন ফষলের বার্তা আনে, যা ঘরে তুলে নবান্ন উৎসব করি। শুদ্ধ সুন্দর শুভ্রতায় এই শরৎ সকলের জীবনে মঙ্গল বয়ে আনুক।” উৎসবে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় অংশ নেয় সীমান্ত খেলাঘর আসর, গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলা, সুরবিহার শিল্পবৃত্ত। একক সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেন প্রিয়াংকা গোপ, তানভীর আলম সজিব, অনিমা রায়, ফেরদৌসী কাকলিসহ আরো অনেকে। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, নির্ঝরনী সঙ্গীত একাডেমি, সমস্বর। কথক নৃত্য সম্প্রদায়, বাংলাদেশ একাডেমি অফ ফাইন আর্টস, বেনুকা, ধৃতি নর্তানালয়, স্পন্দনের শিল্পীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে ‘শরৎ উৎসব’

আপডেট সময় : ০৭:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪

বিনোদন প্রতিবেদক: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি সরিয়ে মেঘের ভেলায় চড়ে বছর ঘুরে এসেছে শরৎ। প্রতিবারের মত এবারও শরতের রঙ ছড়িয়ে দিতে রাজধানীতে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করেছে ‘শরৎ উৎসব’।
শুদ্ধ-সুন্দর-শুভ্রতায় মঙ্গলের বার্তা আনার প্রত্যয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় যন্ত্রসঙ্গীতের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন। মঞ্চে সরোদ বাদনে ছিলেন যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী মো. ইউসুফ খান। আয়োজনে নাচ, গান, আবৃত্তি পরিবেশন করেছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
সুর, তাল, ছন্দের আবাহনে উদযাপিত এই উৎসবের ঘোষণা পত্রে বলা হয়, “প্রকৃতির সঙ্গে মানবের মিলনে জীবনের আনন্দরস খুঁজে পাওয়ার চিরন্তন শারদীয় উৎসবে এবার মিশে আছে বেদনার সুর।”
সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বলেন, “আমরা সশ্রদ্ধভাবে স্মরণ করি নবপ্রভাতের স্বপ্নবহ ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে আত্মাহুতি-দানকারীদের, ব্যথিত চিত্তে লক্ষ্য করি ঘৃণা অসহিষ্ণুতা ও হিংসার বিস্তারে দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু।
“বৈষম্যহীন মুক্ত স্বাধীন সম্প্রীতির সমাজের স্বপ্নবহ আন্দোলন জীবনে নানাভাবে পল্লবিত হউক, সেই প্রত্যাশাও মিশে থাকে শরৎ-আবাহনে।”
শারদোৎসব মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির, জীবনের সঙ্গে মহাজীবনের, সমকালের সঙ্গে চিরকালের মেলবন্ধন রচনা করে বলে মন্তব্য করেন সুইট। তিনি বলেন, “বাংলার মাটির ও প্রকৃতির এমন উৎসব তাই নব-আনন্দে জেগে-ওঠার বাণীমন্ত্র যেমন শোনায়, তেমনি আমাদের দায়িত্ববান করে তোলে প্রকৃতি-সংহারী পদক্ষেপ প্রতিরোধে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে, সেইসাথে মানবসমাজ ও জীবনের চালচিত্রে বিভিন্নতার রঙ-রূপ-রস রক্ষাকরে সম্প্রীতির জয়গান গাইতে।”
কথন পর্বে চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সুশান্ত অধিকারী বলেন, “আমরা যারা গ্রামে বেড়ে উঠেছি, তারা শাপলার বিলে সাঁতার কেটেছি। কাশবনে ঘুরে বেড়িয়েছি। তাদের অনুভবে শরৎ ধরা দেয় অনন্যরূপে। শহরের শিশুদের কাছে হয়তো এই রূপ অচেনা। আমাদের অভিভাবকদের দায় রয়েছে, আমাদের সন্তানদেরকে প্রকৃতির এই রূপ বৈচিত্র সম্পর্কে জানানোর।”
“গ্রামে এখনো কিছু কিছু প্রকৃতির বৈচিত্র দেখা যায়। এই রূপ বৈচিত্রের সঙ্গে আমাদের সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে”, বলেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন। সভাপতির বক্তব্যে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি নিগার চৌধুরী বলেছেন বাংলার ছয়টি ঋতুর আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, আলাদা বার্তা আছে। শরৎ ঋতুকে বলা হয় শুভ্রতার প্রতীক। “এই ঋতুতে আমাদের মাঠে নতুন ফষলের বার্তা আনে, যা ঘরে তুলে নবান্ন উৎসব করি। শুদ্ধ সুন্দর শুভ্রতায় এই শরৎ সকলের জীবনে মঙ্গল বয়ে আনুক।” উৎসবে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় অংশ নেয় সীমান্ত খেলাঘর আসর, গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি-কাঁচার মেলা, সুরবিহার শিল্পবৃত্ত। একক সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেন প্রিয়াংকা গোপ, তানভীর আলম সজিব, অনিমা রায়, ফেরদৌসী কাকলিসহ আরো অনেকে। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, নির্ঝরনী সঙ্গীত একাডেমি, সমস্বর। কথক নৃত্য সম্প্রদায়, বাংলাদেশ একাডেমি অফ ফাইন আর্টস, বেনুকা, ধৃতি নর্তানালয়, স্পন্দনের শিল্পীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে।