ঢাকা ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

সঞ্চয়ের অভ্যাস বদলে দিতে পারে ভবিষ্যৎ

  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

লাইফস্টাইল ডেস্ক: সঞ্চয় সব শ্রেণীর মানুষের জন্য খুব জরুরি। যারা একটু পরিকল্পনা করে চলেন, তারা জানেন- সঞ্চয়ই আর্থিক নিরাপত্তার প্রথম ধাপ।

কেন সঞ্চয় গুরুত্বপূর্ণ
সঞ্চয় মানে কেবল টাকা জমিয়ে রাখা নয়, বরং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা তৈরি করা। হঠাৎ অসুস্থতা, চাকরি হারানো বা জরুরি কোনো খরচের মুহূর্তে সঞ্চিত টাকাই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের আয়ের অন্তত ২০ শতাংশ সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এতে দীর্ঘমেয়াদে নিজের ও পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

যে পদ্ধতিতে অনুসরণ করে সঞ্চয় করা যায়-

১. খাদ্য, পোশাক, গৃহস্থালি সামগ্রী ইত্যাদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত না কেনার মাধ্যমে টাকা বাঁচানো যায়। তাই প্রতিদিনের অল্প খরচও মাস শেষে বড় সঞ্চয়ে পরিণত হতে পারে।

২.শৌখিন দ্রব্য যেমন স্মার্টফোন, ঘড়ি, গ্যাজেট, মোটরসাইকেল ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনলে টাকা নষ্ট হয় এবং সঞ্চয় বৃদ্ধি পায় না। তাই এগুলো কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. পরিকল্পনার মাধ্যমে সঞ্চয় করতে পারেন। যেমন কোনো ব্যক্তির যদি মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করে সেখান থেকে ৪ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পারেন।

সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগ-একটি স্মার্ট পদক্ষেপ
সঞ্চয় নিজের কাছে গচ্ছিত অবস্থায় বা ব্যাংকে রেখে দিলেই কখনো ব্যক্তির অর্থনৈতিক ভাগ্য বদলাতে পারে না। কারণ সময়ের সাথে টাকার মান কমে যায়। তাই সেই সঞ্চিত অর্থকে বিনিয়োগে রূপান্তর করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। যদিও বিনিয়োগ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ তবে বিনিয়োগে অনেক লাভও আছে।

কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনি কোন ধরনের বিনিয়োগ চাচ্ছেন। কারণ দীর্ঘদিন মেয়াদি বিনিয়োগে এক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্প মেয়াদি বিনিয়োগ আরেক রকম সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্প মেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে যেখানে কম সময়ে অর্থ রির্টান পেতে পারেন।

স্বল্প আয়ের মানুষেরা সাধারণত দুই ধরনের বিনিয়োগ পদ্ধতি গ্ৰহণ করতে পারেন-ফিক্সড ইনকাম ও ক্যাশ বা ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট।

ফিক্সড ইনকামের মাধ্যমে
ফিক্সড ইনকাম হলো এমন আয়ের উৎস, যেখান থেকে আপনি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন – যেমন মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে। এটা সাধারণত স্থিতিশীল ও কম ঝুঁকির উপার্জনের পথ। তাই যারা ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ করতে চান তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। এছাড়া সরকারি বা প্রাইভেট বন্ডের মাধ্যমে বিনিযোগ করতে পারেন।

ক্যাশ বা ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্টর মাধ্যমে
ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট মানে হলো এমন সব বিনিয়োগ, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৩ মাসের মধ্যে) সহজে নগদ টাকায় রূপান্তর করা যায়। এগুলোতে লাভের পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। যেমন: ব্যাংকের সঞ্চয়, স্বল্প মেয়াদি ডিপোজিট, মানি মার্কেট ফান্ড। যারা মূলত টাকার নিরাপত্তা চান, তাদের জন্য এগুলো আদর্শ।

বিনিয়োগের আরো কিছু মাধ্যম-

১. সোনা কেনার মাধ্যমে
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে চাইলে সোনায় অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সোনা বিনিয়োগ হতে পারে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য একটি বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।কারণ অর্থের মূল্য কমলেও সময়ের সঙ্গে সোনার দাম সাধারণত বাড়ে। তাই দাম বেশি হলেও এটি ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ।

২. মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে
মিউচুয়াল ফান্ড হলো এমন একটি বিনিয়োগ প্রকল্প যেখানে অনেক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে একজন পেশাদার ফান্ড ম্যানেজার সেই অর্থ স্টক, বন্ড বা অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করেন। এরপর এই বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তাদের শেয়ার অনুপাতে ভাগ করে দেওয়া হয়। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের প্রধান সুবিধা হলো কম টাকায় বিনিয়োগ শুরু করা যায়।

৩. জমি ও রিয়েল এস্টেটের মাধ্যমে
জমি ও রিয়েল এস্টেট হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে লাভজনক ও নিরাপদ বিনিয়োগের একটি মাধ্যম। অর্থের মুল্য ধীরে ধীরে কমে তাই সামর্থ্য অনুযায়ী জমি কিনে তার নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট মুনাফায় বিক্রি করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে ফিক্সড ইনকামের চেয়ে বেশি লাভজনক হতে পারে।

এসি/আপ্র/১৭/১০/২০২৫

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

সঞ্চয়ের অভ্যাস বদলে দিতে পারে ভবিষ্যৎ

আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: সঞ্চয় সব শ্রেণীর মানুষের জন্য খুব জরুরি। যারা একটু পরিকল্পনা করে চলেন, তারা জানেন- সঞ্চয়ই আর্থিক নিরাপত্তার প্রথম ধাপ।

কেন সঞ্চয় গুরুত্বপূর্ণ
সঞ্চয় মানে কেবল টাকা জমিয়ে রাখা নয়, বরং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা তৈরি করা। হঠাৎ অসুস্থতা, চাকরি হারানো বা জরুরি কোনো খরচের মুহূর্তে সঞ্চিত টাকাই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের আয়ের অন্তত ২০ শতাংশ সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এতে দীর্ঘমেয়াদে নিজের ও পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

যে পদ্ধতিতে অনুসরণ করে সঞ্চয় করা যায়-

১. খাদ্য, পোশাক, গৃহস্থালি সামগ্রী ইত্যাদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত না কেনার মাধ্যমে টাকা বাঁচানো যায়। তাই প্রতিদিনের অল্প খরচও মাস শেষে বড় সঞ্চয়ে পরিণত হতে পারে।

২.শৌখিন দ্রব্য যেমন স্মার্টফোন, ঘড়ি, গ্যাজেট, মোটরসাইকেল ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনলে টাকা নষ্ট হয় এবং সঞ্চয় বৃদ্ধি পায় না। তাই এগুলো কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. পরিকল্পনার মাধ্যমে সঞ্চয় করতে পারেন। যেমন কোনো ব্যক্তির যদি মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করে সেখান থেকে ৪ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পারেন।

সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগ-একটি স্মার্ট পদক্ষেপ
সঞ্চয় নিজের কাছে গচ্ছিত অবস্থায় বা ব্যাংকে রেখে দিলেই কখনো ব্যক্তির অর্থনৈতিক ভাগ্য বদলাতে পারে না। কারণ সময়ের সাথে টাকার মান কমে যায়। তাই সেই সঞ্চিত অর্থকে বিনিয়োগে রূপান্তর করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। যদিও বিনিয়োগ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ তবে বিনিয়োগে অনেক লাভও আছে।

কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনি কোন ধরনের বিনিয়োগ চাচ্ছেন। কারণ দীর্ঘদিন মেয়াদি বিনিয়োগে এক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্প মেয়াদি বিনিয়োগ আরেক রকম সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্প মেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে যেখানে কম সময়ে অর্থ রির্টান পেতে পারেন।

স্বল্প আয়ের মানুষেরা সাধারণত দুই ধরনের বিনিয়োগ পদ্ধতি গ্ৰহণ করতে পারেন-ফিক্সড ইনকাম ও ক্যাশ বা ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট।

ফিক্সড ইনকামের মাধ্যমে
ফিক্সড ইনকাম হলো এমন আয়ের উৎস, যেখান থেকে আপনি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন – যেমন মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে। এটা সাধারণত স্থিতিশীল ও কম ঝুঁকির উপার্জনের পথ। তাই যারা ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ করতে চান তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। এছাড়া সরকারি বা প্রাইভেট বন্ডের মাধ্যমে বিনিযোগ করতে পারেন।

ক্যাশ বা ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্টর মাধ্যমে
ক্যাশ ইকুইভ্যালেন্ট মানে হলো এমন সব বিনিয়োগ, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৩ মাসের মধ্যে) সহজে নগদ টাকায় রূপান্তর করা যায়। এগুলোতে লাভের পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। যেমন: ব্যাংকের সঞ্চয়, স্বল্প মেয়াদি ডিপোজিট, মানি মার্কেট ফান্ড। যারা মূলত টাকার নিরাপত্তা চান, তাদের জন্য এগুলো আদর্শ।

বিনিয়োগের আরো কিছু মাধ্যম-

১. সোনা কেনার মাধ্যমে
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে চাইলে সোনায় অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সোনা বিনিয়োগ হতে পারে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য একটি বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।কারণ অর্থের মূল্য কমলেও সময়ের সঙ্গে সোনার দাম সাধারণত বাড়ে। তাই দাম বেশি হলেও এটি ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ।

২. মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে
মিউচুয়াল ফান্ড হলো এমন একটি বিনিয়োগ প্রকল্প যেখানে অনেক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে একজন পেশাদার ফান্ড ম্যানেজার সেই অর্থ স্টক, বন্ড বা অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করেন। এরপর এই বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত মুনাফা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তাদের শেয়ার অনুপাতে ভাগ করে দেওয়া হয়। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের প্রধান সুবিধা হলো কম টাকায় বিনিয়োগ শুরু করা যায়।

৩. জমি ও রিয়েল এস্টেটের মাধ্যমে
জমি ও রিয়েল এস্টেট হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে লাভজনক ও নিরাপদ বিনিয়োগের একটি মাধ্যম। অর্থের মুল্য ধীরে ধীরে কমে তাই সামর্থ্য অনুযায়ী জমি কিনে তার নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট মুনাফায় বিক্রি করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে ফিক্সড ইনকামের চেয়ে বেশি লাভজনক হতে পারে।

এসি/আপ্র/১৭/১০/২০২৫