ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
এবার গণজমায়েতের ডাক

সচিবালয়ে ফের বিক্ষোভ কর্মচারীদের

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কর্মীবৃন্দ -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সচিবালয়ের কর্মচারীরা মঙ্গলবারও (১৭ জুন) গণজমায়েত করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন। আলোচনার আমন্ত্রণ না পেলে নতুন দাবি যুক্ত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কথা জানান। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরছি। অনেক ক্যাডার সার্ভিস থেকে অনেকেই আন্দোলনে নেমে গেছে। আমরা একটা জিনিস বুঝে গেছি সরকার আমাদের সঙ্গে সাপলুডু খেলা খেলছে।

ঐক্য ফোরামের এ নেতা বলেন, কারো সাথে কথা না বলে এই কালো অধ্যাদেশ তারা গোপনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পাস করিয়ে আনল। এই কাজের সাথে যারা জড়িত ছিল আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। একইসঙ্গে ঘৃণাভরে এই সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ প্রত্যাখান করেছি। সরকারকে এই সাপলুডু খেলা বন্ধ করতে হবে।

মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে এ অধ্যাদেশ নিয়ে যখন সম্মেলন করেছিলাম তখন সরকার আবার বিশেষ প্রণোদনা ভাতা দিয়েছেন। সেটা আসলে ফাঁকিবাজি ভাতা। এর মাধ্যমে সরকার আবার প্রতারণা করেছে আমাদের সঙ্গে। একটা শেষ না হতেই আরেকটা শুরু করে দেয়, এজন্যই অনেকেই বলেছে এগুলো বিশেষ সুবিধা নয় বিশেষ প্রতারণা। আমরা এ বিশেষ প্রণোদনা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, যদি আমাদের কথায় কান না দেন তাহলে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হব। প্রজ্ঞাপনে বলা আছে অধ্যাদেশ জারির আগে আমাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এ পর্যন্ত আমরা কেউ কোনো আলোচনার প্রস্তাব পাইনি। তাহলে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্যেও লুকোচুরি আছে। আজ আমরা রোদে পুড়ে আন্দোলন করছি আপনারা এসিতে বসে আছেন।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শুধু দেখতে চাই এ অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। আমরা সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বুঝি না। আমরা শুধু বুঝি এ অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। আমাদের পিছু হটার কোনো সুযোগ নাই। আজ আমরা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব। আর আগামীকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদাম তলায় বেলা ১১টায় জমায়েত হব। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে ধরে নেব তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এরপর যদি আমরা আলোচনার আমন্ত্রণ না পাই, তাহলে আমাদের দাবির সঙ্গে নতুন নতুন দাবি যুক্ত হবে।

মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এ অধ্যাদেশ বাতিল করলে আমরা নীরবে ঘরে ফিরে যাব। যদি আমাদের আগুন জ্বালিয়ে আপনারা খেলা করতে চান তাহলে আমরা এমন খেলা খেলব আপনারা ঘরে ঢুকতে পারবেন না। আপনারা সে কাজ করতে বাধ্য করবেন না।

কমিটি রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন না করার আহ্বান: ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি সোমবার বিকেলে বৈঠক বসবেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে। সে পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন না করার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারি যে চাকরি আইন রয়েছে সেটার বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানসহ আমাদের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, এখানে অবশ্যই পুনর্বিবেচনার অবকাশ রয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম, আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। পরে যখন আমি আইনটি দেখেছি, দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে এটা অবশ্যই পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, শুধু একটা বিষয় আমি বলতে পারি-সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশে আইনটি করেনি। অসৎ উদ্দেশে আইন করা না হলেও কোনো কোনো আইনের মধ্যে এমন বিধান থাকতে পারে, এ আইনের যারা সাবজেক্ট তাদের কাছে মনে হতে পারে তারা বিড়ম্বনা বা হয়রানির শিকার হতে পারেন।

আমরা স্বীকার করি এরকম সম্ভাবনা এ আইনের মধ্যে থাকতে পারে। এটি মূলত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন, আমরা শুধু গেজেট নোটিফিকেশন করেছি, যোগ করেন তিনি।

উপদেষ্টা আরো বলেন, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে আমরা প্রথম মিটিংয়ে বসব। সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা যে দাবিগুলো দিয়েছিলেন সেই কাগজগুলো আমার কাছে আছে। সেগুলো আমরা কীভাবে বিবেচনা করব, কী বিবেচনা করব-সেগুলো ঠিক করব। ঠিক করার পর ইনশাআল্লাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে তুলব। আমরা রিপোর্ট বা প্রস্তাব দেব, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এবার গণজমায়েতের ডাক

সচিবালয়ে ফের বিক্ষোভ কর্মচারীদের

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সচিবালয়ের কর্মচারীরা মঙ্গলবারও (১৭ জুন) গণজমায়েত করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন। আলোচনার আমন্ত্রণ না পেলে নতুন দাবি যুক্ত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কথা জানান। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরছি। অনেক ক্যাডার সার্ভিস থেকে অনেকেই আন্দোলনে নেমে গেছে। আমরা একটা জিনিস বুঝে গেছি সরকার আমাদের সঙ্গে সাপলুডু খেলা খেলছে।

ঐক্য ফোরামের এ নেতা বলেন, কারো সাথে কথা না বলে এই কালো অধ্যাদেশ তারা গোপনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পাস করিয়ে আনল। এই কাজের সাথে যারা জড়িত ছিল আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। একইসঙ্গে ঘৃণাভরে এই সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ প্রত্যাখান করেছি। সরকারকে এই সাপলুডু খেলা বন্ধ করতে হবে।

মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে এ অধ্যাদেশ নিয়ে যখন সম্মেলন করেছিলাম তখন সরকার আবার বিশেষ প্রণোদনা ভাতা দিয়েছেন। সেটা আসলে ফাঁকিবাজি ভাতা। এর মাধ্যমে সরকার আবার প্রতারণা করেছে আমাদের সঙ্গে। একটা শেষ না হতেই আরেকটা শুরু করে দেয়, এজন্যই অনেকেই বলেছে এগুলো বিশেষ সুবিধা নয় বিশেষ প্রতারণা। আমরা এ বিশেষ প্রণোদনা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, যদি আমাদের কথায় কান না দেন তাহলে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হব। প্রজ্ঞাপনে বলা আছে অধ্যাদেশ জারির আগে আমাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এ পর্যন্ত আমরা কেউ কোনো আলোচনার প্রস্তাব পাইনি। তাহলে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্যেও লুকোচুরি আছে। আজ আমরা রোদে পুড়ে আন্দোলন করছি আপনারা এসিতে বসে আছেন।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শুধু দেখতে চাই এ অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। আমরা সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বুঝি না। আমরা শুধু বুঝি এ অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। আমাদের পিছু হটার কোনো সুযোগ নাই। আজ আমরা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব। আর আগামীকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদাম তলায় বেলা ১১টায় জমায়েত হব। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে ধরে নেব তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এরপর যদি আমরা আলোচনার আমন্ত্রণ না পাই, তাহলে আমাদের দাবির সঙ্গে নতুন নতুন দাবি যুক্ত হবে।

মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এ অধ্যাদেশ বাতিল করলে আমরা নীরবে ঘরে ফিরে যাব। যদি আমাদের আগুন জ্বালিয়ে আপনারা খেলা করতে চান তাহলে আমরা এমন খেলা খেলব আপনারা ঘরে ঢুকতে পারবেন না। আপনারা সে কাজ করতে বাধ্য করবেন না।

কমিটি রিপোর্ট দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন না করার আহ্বান: ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি সোমবার বিকেলে বৈঠক বসবেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে। সে পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন না করার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে জাতিসংঘের বলপ্রয়োগে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে গুম সম্পর্কিত কার্যনির্বাহী দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারি যে চাকরি আইন রয়েছে সেটার বিষয়ে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানসহ আমাদের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, এখানে অবশ্যই পুনর্বিবেচনার অবকাশ রয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম, আইনটি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। পরে যখন আমি আইনটি দেখেছি, দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে এটা অবশ্যই পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, শুধু একটা বিষয় আমি বলতে পারি-সরকার কোনো অসৎ উদ্দেশে আইনটি করেনি। অসৎ উদ্দেশে আইন করা না হলেও কোনো কোনো আইনের মধ্যে এমন বিধান থাকতে পারে, এ আইনের যারা সাবজেক্ট তাদের কাছে মনে হতে পারে তারা বিড়ম্বনা বা হয়রানির শিকার হতে পারেন।

আমরা স্বীকার করি এরকম সম্ভাবনা এ আইনের মধ্যে থাকতে পারে। এটি মূলত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আইন, আমরা শুধু গেজেট নোটিফিকেশন করেছি, যোগ করেন তিনি।

উপদেষ্টা আরো বলেন, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে আমরা প্রথম মিটিংয়ে বসব। সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা যে দাবিগুলো দিয়েছিলেন সেই কাগজগুলো আমার কাছে আছে। সেগুলো আমরা কীভাবে বিবেচনা করব, কী বিবেচনা করব-সেগুলো ঠিক করব। ঠিক করার পর ইনশাআল্লাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা একটা রিপোর্ট উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে তুলব। আমরা রিপোর্ট বা প্রস্তাব দেব, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক না।