ঢাকা ১১:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

সক্ষমতার অভাবে পণ্যজট নিয়ে বেকায়দায় বেনাপোল বন্দর

  • আপডেট সময় : ০১:০২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সক্ষমতা না বাড়ায় বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানি-রফতানির পণ্যজট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। যদিও নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধের সময় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রফতানি কমেছিল। কিন্তু বেশকিছু দিন ধরে তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত দু’সপ্তা ধরে বন্দর দিয়ে রফতানির পরিমাণ অন্তত ছয় গুণ বেড়েছে। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট দেখা দিয়েছে। মূলত আমদানি-রফতানি বাড়লেই বন্দরের ওপর চাপ দেখা দেয়। তৈরি হয় ভয়াবহ পণ্যজট। তাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ বাড়ছে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে রফতানির পরিমাণও। বিশেষ করে চলতি মাস থেকে পণ্য সরবরাহ বেড়েছে। করোনাকালে যেখানে দৈনিক রফতানিবাহী ৫০ ট্রাক পণ্য যেত, এখন যাচ্ছে ৩০০-৩৫০টি ট্রাক। ফলে জায়গা সঙ্কটে বেনাপোলে ওসব পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়ছে। একই কারণে পেট্রাপোল বন্দরেও আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। ফলে দুই দেশের বন্দরেই দেখা দিয়েছে পণ্যজট।
সূত্র জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বিগত দুই বছর ধরেই রফতানি কমছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত রফতানি হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের ১৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫৭ টন পণ্য। তার মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানি হয় ৪ লাখ ১ হাজার ১৭৭ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি হয় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৯ টন পণ্য। আর গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৮ টন পণ্য। বর্তমানে ভারত থেকে রফতানি পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে। যে কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে তীব্র পণ্যজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, করোনাকালে রফতানির হার অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু দু’সপ্তাহ ধরে তা বেড়েছে। তাতে উভয় বন্দরে দেখা দিয়েছে পণ্যজট। বনগাঁ পৌরসভা পার্কিংয়ে রাখা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাক থেকে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ছোট গাড়ি ৫০ টাকা, ৬ চাকার গাড়ি ৮০ টাকা, ১০ চাকার গাড়ি ১২০ টাকা হারে পার্কিং চার্জ আদায় করা হচ্ছে। তাতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানির প্রধান রুট হলেও বন্দরটি সক্ষমতায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর জানান, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। কিন্তু রফতানিবাহী ট্রাকের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, করোনাকালে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন রফতানি বেড়ে গেছে। বর্তমানে দৈনিক ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ট্রাক পণ্য রফতানি হচ্ছে। তাতে বন্দরে জটের সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য আরো গতিশীল হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সক্ষমতার অভাবে পণ্যজট নিয়ে বেকায়দায় বেনাপোল বন্দর

আপডেট সময় : ০১:০২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সক্ষমতা না বাড়ায় বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানি-রফতানির পণ্যজট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। যদিও নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধের সময় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রফতানি কমেছিল। কিন্তু বেশকিছু দিন ধরে তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত দু’সপ্তা ধরে বন্দর দিয়ে রফতানির পরিমাণ অন্তত ছয় গুণ বেড়েছে। ফলে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট দেখা দিয়েছে। মূলত আমদানি-রফতানি বাড়লেই বন্দরের ওপর চাপ দেখা দেয়। তৈরি হয় ভয়াবহ পণ্যজট। তাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ বাড়ছে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে রফতানির পরিমাণও। বিশেষ করে চলতি মাস থেকে পণ্য সরবরাহ বেড়েছে। করোনাকালে যেখানে দৈনিক রফতানিবাহী ৫০ ট্রাক পণ্য যেত, এখন যাচ্ছে ৩০০-৩৫০টি ট্রাক। ফলে জায়গা সঙ্কটে বেনাপোলে ওসব পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়ছে। একই কারণে পেট্রাপোল বন্দরেও আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। ফলে দুই দেশের বন্দরেই দেখা দিয়েছে পণ্যজট।
সূত্র জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বিগত দুই বছর ধরেই রফতানি কমছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত রফতানি হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের ১৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫৭ টন পণ্য। তার মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানি হয় ৪ লাখ ১ হাজার ১৭৭ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি হয় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৯ টন পণ্য। আর গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৮ টন পণ্য। বর্তমানে ভারত থেকে রফতানি পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে। যে কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে তীব্র পণ্যজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, করোনাকালে রফতানির হার অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু দু’সপ্তাহ ধরে তা বেড়েছে। তাতে উভয় বন্দরে দেখা দিয়েছে পণ্যজট। বনগাঁ পৌরসভা পার্কিংয়ে রাখা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাক থেকে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ছোট গাড়ি ৫০ টাকা, ৬ চাকার গাড়ি ৮০ টাকা, ১০ চাকার গাড়ি ১২০ টাকা হারে পার্কিং চার্জ আদায় করা হচ্ছে। তাতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানির প্রধান রুট হলেও বন্দরটি সক্ষমতায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর জানান, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। কিন্তু রফতানিবাহী ট্রাকের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, করোনাকালে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন রফতানি বেড়ে গেছে। বর্তমানে দৈনিক ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ট্রাক পণ্য রফতানি হচ্ছে। তাতে বন্দরে জটের সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য আরো গতিশীল হবে।