নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি ছুটির দিনে যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। গতকাল শনিবার সকালে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিকা-ের পর সামনের রাস্তায় যে গাড়ি জটলা শুরু হয়েছিল তা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় দিনমান ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে।
বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ির সড়কে একটি সাত তলার বানিজ্যিক ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনায় রাজধানীতে দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। রাস্তার ওপরই প্রখর রোদ্রের মধ্যে বিভিন্ন যানবাহনে ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের অতিক্রান্ত করতে হচ্ছে। সকাল পৌনে নয়টায় চেয়ারম্যান বাড়ির কাছে প্রধান সড়কের ওপর একটি ছয়তলা বাণিজ্যিক ভবনের তিনতলায় আগুন লাগে।
পৌনে চার ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তখন উত্তরা থেকে ফার্মগেইট ও মহাখালীমুখী সড়কে এই যানজটে আটকা পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আগুন লাগার কারণে ভবনটির সামনের সড়কে যান চলাচল বিঘিœত হয় জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের পরিদর্শক (ট্রাফিক) মো. সালাউদ্দিন বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করে।
আগুন লাগার পরপরই উত্তরা থেকে ফার্মগেইটমুখী সড়কে যান চলাচল পুলিশ বন্ধ করে দেয়। ফলে বনানী, ফার্মগেইট, ময়মনসিংহ সড়ক, বিজয় সরণি, মহাখালী, তেজগাঁও, সাত রাস্তার মোড়, সোনারগাঁও, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মগবাজারসহ আশপাশের রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ি রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে দেখা গেছে।
লম্বা সময় অপেক্ষার পর পরিস্থিতির উন্নতি না দেখে রোদ মাথায় করে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন অনেকে। সকাল ১১টায় উত্তরা থেকে বাসে আসা যাত্রী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বনানীর কাছ থেকে হেঁটে চলছি, যাব সচিবালয়ে, কখন যে পৌঁছাব জানি না। দুই পাশের সড়কে কত গাড়ি আটকে আছে হিসাব নাই। দেখেন আমার মতো অনেকে হেঁটে আসছেন।’
অটোরিকশায় তেজগাঁও সাত রাস্তা মোড়ে এসে আটকে যাওয়া ফরিদা ইয়াসমীন বলেন, ‘পল্টন থেকে রওনা হয়েছি ১০টায়। এখন বাজে ১টা। সিএনজি থেমেই আছে। কি করব বুঝতে পারছি না।’
বিকাল ৩টায় মহাখালী ফুটওভার ব্রিজ থেকে দেখা গেছে দীর্ঘ যানজটের চিত্র। মহাখালী ডিওএইচএসের কাছে একটি প্রাইভেট কারের চালক শফিক আহমেদ বলেন, ‘কোনো দিকেই গাড়ি ঘোরানোর পথ নেই। দুই বার চেষ্টা করেছি কিন্তু দেখলাম সব রাস্তায় গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছে স্টার্ট বন্ধ করে।’ বিকাল তিনটায় মহাখালীর কাছে ফ্লাইওভারের ওপর রোদের মধ্যে থাকা অটোরিকশাচালক নূর মিয়া বলেন, ‘যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে সন্ধ্যা পর্যন্ত মনে হয় বসে থাকতে হবে। এখনও তো কোনো আলামত দেখছি না।’
মগবাজার থেকে অনেক গাড়ি হাতিরঝিল, রামপুরা হয়ে বিকল্প পথ অনুসরণ করতে গিয়ে সেখানেও লম্বা যানজট সৃষ্টি হয়। নতুন বাজারের কাছে একজন বেসরকারি বীমা কোম্পানি কর্মকর্তা বলেন, ‘বিকল্প পথ অনুসরণ করতে গিয়েও রেহাই পাচ্ছি না। নতুন বাজারের কাছে আসতে আমার সময় লেগেছে পাক্কা আড়াই ঘণ্টা। বনানীর আগুনের উত্তাপ পুরো ঢাকা শহরে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
সকালের অগ্নিকাণ্ডে দিনভর যানজটের যন্ত্রণা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ