নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা একসঙ্গে যেসব দল দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি, তাদের নিয়ে সংস্কারের কথা সবার আগে আমরাই বলেছি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ সংস্কারের যে কথাগুলো আসছে সেসব কথা ২০১৬ সালে খালেদা জিয়া ভিশন ২০২৬-এ বলেছিলেন। আমরা তখন যেসব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে আন্দোলন করেছিলাম তারা সবাই মিলে ২০২২ সালে ২৭ দফা দিয়েছিলাম। যা পরবর্তীতে ৩১ দফায় রূপান্তর হয়। সুতরাং সংস্কারের কথাতো সবার আগে আমরাই বলেছিলাম। বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটা প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে যে, বিএনপি নাকি সংস্কার মানছে না এজন্য সংস্কার হচ্ছে না। মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে, সোস্যাল মিডিয়ায় ক্যাম্পেইন হচ্ছে যে, বিএনপি সংস্কার মানছে না। আমি তাদের অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বলতে চাই, দয়া করে আমাদের দফাগুলো একটু ভালো করে দেখুন। আমাদের ৩১ দফায় কী ছিল, আমাদের টিম ঐকমত্য কমিশনের কাছে গিয়ে কী বলছে, মতামত দিচ্ছে। এটা জানা দরকার, না হলে ভুল বোঝাবুঝি হবে।
অনেকগুলো ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী ১০ বছর থাকার ব্যাপারে একমত হয়েছি, আমরা বলেছি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট হবে। আমরা রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সংস্কার আনার কথাও বলেছি। সেই বিষয়গুলোকে সেভাবে বিচার না করুন, ব্যাখা করুন। শুধুমাত্র যেহেতু বিএনপি বড় দল, সেহেতু শুধুমাত্র বিএনপিকেই দোষারোপ করে কথা বললে সেটা সংস্কারের জন্যে সহায়ক হবে না।
তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা গত ১৫ বছর ধরে তরুণদের ডাক দিয়েছি সভা-সমাবেশের মাধ্যমে। আমরা সমাবেশ করেছি, নদী সাঁতরে পার হয়েছি। বিভাগে-বিভাগে সমাবেশ করেছি, আমাদের ছেলেরা গুলি খেয়ে মরেছেন। সেখান থেকে আমরা ডাক দিয়ে বলেছি, ‘কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, হাকিছে ভবিষ্যৎ’। কারণ আমরা মনে করি, কেবল তরুণরাই পারে জীবন বাজি রেখে একটা পরিবর্তন আনতে। এই পরিবর্তন তারা এনেছে এবং এজন্য তাদের আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।
এর আগে বিকেল ৩টায় পবিত্র কুরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। কুরআন তেলোয়াতের পর শহীদদের জন্যে দোয়া ও মুনাজাত করা হয়। এরপর জুলাই-আগস্টে ও গত ১৭ বছরে নিহত ও গুম হওয়াদের স্বরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীতের পর জুলাই আন্দোলনের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এরপর গুম হওয়া পরিবারের সদস্য, শহীদ পরিবারের সদস্য, সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা এবং বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।