ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

সংসদ সদস্যের সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম

  • আপডেট সময় : ১০:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ২০টি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় আ স ম ফিরোজের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। তাঁর বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে জখম রয়েছে। পা ও মাথায় আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, তিনটি পক্ষই একই সময়ে কর্মসূচির ডাক দেয়। এর মধ্যে আ স ম ফিরোজ এবং আবদুল মোতালেব হাওলাদারের পক্ষের কর্মসূচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে (জনতা ভবন) এবং বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক ওরফে জুয়েলের পক্ষের কর্মসূচি বাউফল প্রেসক্লাব সড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ আরেকাংশের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কর্মসূচির স্থলে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছিলেন সমর্থকেরা। বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি কলেজ মাঠে, আ স ম ফিরোজের পক্ষের সমর্থকেরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও আবদুল মোতালেবের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হন।
আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে আনন্দ র‌্যালি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (জনতা ভবন) দিকে যাচ্ছিলেন নেতা–কর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এতে বাধা দেয়। তখন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আবদুল মোতালেবের কথা–কাটাকাটি হয়। অপর পাশেই লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের সমর্থকেরা। তখন আ স ম ফিরোজ ছাদখোলা একটি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকেরা দলীয় ও নিজ নিজ নেতার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় আবদুল মোতালেবের ওপর হামলা চালান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ধারালো অস্ত্রধারী সমর্থকেরা। তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। থামাতে গিয়ে আহত হন আবদুল মোতালেবের কর্মী রাব্বি (৩০), মো. হাসান (২৬), মো. হাসিব (৩২), মো. খোকা মিয়াসহ (৫০) অন্তত ১০ জন।
এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে ওসি আল মামুন, উপপরিদর্শক (এসআই) এম এ হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন, কনস্টেবল মো. আবু রাহাত ও মো. রবিউলসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপল্টি ধাওয়া। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি থানার মূল ফটকও আটকে দেওয়া হয়। আহত আবদুল মোতালেবকে বরিশালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর নেতা–কর্মীরা চলে যান। তখনো সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের পূর্ব পাশে অবস্থান করছিলেন। এরপর তাঁরা র‌্যালি নিয়ে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিকে যেত চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে দুপুর ১২টার দিকে মেয়র জিয়াউল হকের নেতৃত্বে একটি বিশাল র‌্যালি নিয়ে উপজেলা চত্বরে ঢুকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর আবার মিছিলসহকারে চলে যান জিয়াউল হক ও তাঁর নেতা-কর্মীরা। এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে বের করা র‌্যালিটি বাউফল শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা উচিত ছিল। কিন্তু জাতির জনকের জন্মদিন হওয়ায় তা না করে তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয় জানিয়ে ওসি আল মামুন বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত।
আজ সব মহানগরে বিএনপির সমাবেশ: সরকার হটাতে ১০ দফা, নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং সর্বব্যাপী দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের সব মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক জোটগুলো। আজ শনিবার পৃথকভাবে যুগপৎ আন্দোলনের এ কর্মসূচি পালন করার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক জোট সরকারের পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে এ প্রতিবাদ সমাবেশ সেগুলোর মধ্যে দশম। এসময়ে সারাদেশে গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিভাগীয় সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি এবং পদযাত্রা করেছে যুগপৎভাবে। এরমধ্যে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে মহানগর পর্যন্ত কয়েক দফায় পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু করে। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সারা দেশে এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি করে। সেদিন নতুন করে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর জানান, শনিবার বিএনপি রাজধানীসহ সব মহানগরীয় ইউনিটে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। এগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। রাজধানীতে দুপুর ২টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। অপরদিকে বেলা ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ পল্টনে মোড়ে, ১২ দলীয় জোট বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পল্টনের আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে, পল্টন মোড়ে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, গণফোরাম-পিপলস পার্টি আরামবাগে গণফোরাম চত্বরে সমাবেশ করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলও করবে এ জোট।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংসদ সদস্যের সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম

আপডেট সময় : ১০:০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ২০টি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় আ স ম ফিরোজের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। তাঁর বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে জখম রয়েছে। পা ও মাথায় আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, তিনটি পক্ষই একই সময়ে কর্মসূচির ডাক দেয়। এর মধ্যে আ স ম ফিরোজ এবং আবদুল মোতালেব হাওলাদারের পক্ষের কর্মসূচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে (জনতা ভবন) এবং বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক ওরফে জুয়েলের পক্ষের কর্মসূচি বাউফল প্রেসক্লাব সড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ আরেকাংশের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কর্মসূচির স্থলে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছিলেন সমর্থকেরা। বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি কলেজ মাঠে, আ স ম ফিরোজের পক্ষের সমর্থকেরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও আবদুল মোতালেবের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হন।
আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে আনন্দ র‌্যালি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (জনতা ভবন) দিকে যাচ্ছিলেন নেতা–কর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এতে বাধা দেয়। তখন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আবদুল মোতালেবের কথা–কাটাকাটি হয়। অপর পাশেই লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের সমর্থকেরা। তখন আ স ম ফিরোজ ছাদখোলা একটি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকেরা দলীয় ও নিজ নিজ নেতার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় আবদুল মোতালেবের ওপর হামলা চালান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ধারালো অস্ত্রধারী সমর্থকেরা। তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। থামাতে গিয়ে আহত হন আবদুল মোতালেবের কর্মী রাব্বি (৩০), মো. হাসান (২৬), মো. হাসিব (৩২), মো. খোকা মিয়াসহ (৫০) অন্তত ১০ জন।
এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে ওসি আল মামুন, উপপরিদর্শক (এসআই) এম এ হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন, কনস্টেবল মো. আবু রাহাত ও মো. রবিউলসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপল্টি ধাওয়া। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি থানার মূল ফটকও আটকে দেওয়া হয়। আহত আবদুল মোতালেবকে বরিশালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর নেতা–কর্মীরা চলে যান। তখনো সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের পূর্ব পাশে অবস্থান করছিলেন। এরপর তাঁরা র‌্যালি নিয়ে বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিকে যেত চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে দুপুর ১২টার দিকে মেয়র জিয়াউল হকের নেতৃত্বে একটি বিশাল র‌্যালি নিয়ে উপজেলা চত্বরে ঢুকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর আবার মিছিলসহকারে চলে যান জিয়াউল হক ও তাঁর নেতা-কর্মীরা। এরপর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে বের করা র‌্যালিটি বাউফল শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা উচিত ছিল। কিন্তু জাতির জনকের জন্মদিন হওয়ায় তা না করে তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয় জানিয়ে ওসি আল মামুন বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত।
আজ সব মহানগরে বিএনপির সমাবেশ: সরকার হটাতে ১০ দফা, নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং সর্বব্যাপী দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের সব মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক জোটগুলো। আজ শনিবার পৃথকভাবে যুগপৎ আন্দোলনের এ কর্মসূচি পালন করার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক জোট সরকারের পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে এ প্রতিবাদ সমাবেশ সেগুলোর মধ্যে দশম। এসময়ে সারাদেশে গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিভাগীয় সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি এবং পদযাত্রা করেছে যুগপৎভাবে। এরমধ্যে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে মহানগর পর্যন্ত কয়েক দফায় পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু করে। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সারা দেশে এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি করে। সেদিন নতুন করে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর জানান, শনিবার বিএনপি রাজধানীসহ সব মহানগরীয় ইউনিটে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। এগুলোতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। রাজধানীতে দুপুর ২টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। অপরদিকে বেলা ১১টায় গণতন্ত্র মঞ্চ পল্টনে মোড়ে, ১২ দলীয় জোট বিজয় নগর পানির ট্যাংকের সামনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পল্টনের আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে, পল্টন মোড়ে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, গণফোরাম-পিপলস পার্টি আরামবাগে গণফোরাম চত্বরে সমাবেশ করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলও করবে এ জোট।