ঢাকা ১১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সংলাপে ফ্যাসিবাদের দোসর, বেরিয়ে গেলেন বৈষম্যবিরোধীর নেতা

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংলাপস্থলের ছবি সংগৃহীত

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংলাপে আওয়ামী লীগের দোসররা অংশ নিয়েছে অভিযোগ তুলে সংলাপ বয়কট করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন রংপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর একটি হোটেলে ‘টেকসই সংস্কারের একমাত্র পথ রাজনৈতিক সমঝোতা’ শীর্ষক সংলাপ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এই সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। বক্তব্য দেন জুলাই ৩৬ ফোরামের শামীম হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া সমন্বয়ক হাসিবুদ্দিন, রংপুর জেলা সমন্বয়ক চিনু কবীর, বিভাগীয় সমন্বয়ক রায়হান কবীরসহ জেলার নেতৃবৃন্দ।

সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুজন সম্পাদক অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের নেতা হানিফ খান সজিব, ইসলামী আন্দোলনের নেতা মনিরুজ্জামান পিয়াল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ,১ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহামেদ ইমতি, গণমাধ্যমকর্মীসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।

সংলাপ শুরুর পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি সংলাপ অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কয়েকজন দোসর সভায় উপস্থিত থাকার অভিযোগ এনে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। এ সময় একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সভাস্থল থেকে চলে যান। এ ঘটনার পর যথারীতি সংলাপ হয়। সংলাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র নাহিদ আখতারের কাছে সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসর কারা কারা তাদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও নাম বলবো না। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তবে আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের সঙ্গে আমরা বসতে পারি না।’

তবে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যাওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমি বিব্রত বোধ করায় চলে এসেছি। তবে আপনারা গণমাধ্যমকর্মীসহ সারা দেশের মানুষ জানে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে আমার ভূমিকা যখন কেউই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেনি তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষক হিসেবে প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়েছি। রংপুর জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলাম। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকে ৯ ঘণ্টা হাসপাতালে তার পাশে ছিলাম। ওই সময়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ভিডিও দেখেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়াও শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আমি অন্যতম সাক্ষী। এরপরও যারা এসব কথা বলে তাদের বিষয়ে আমার বলার কী থাকতে পারে?’

এদিকে সংলাপে অংশ নেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য দেন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘৫ আগস্টের গণ অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমরা যারা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম, আমাদের প্রত্যাশা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু ৬ মাসেও সংস্কারের নামে জনগণ কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ সব বিষয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেশ নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা: ফখরুল

সংলাপে ফ্যাসিবাদের দোসর, বেরিয়ে গেলেন বৈষম্যবিরোধীর নেতা

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংলাপে আওয়ামী লীগের দোসররা অংশ নিয়েছে অভিযোগ তুলে সংলাপ বয়কট করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন রংপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর একটি হোটেলে ‘টেকসই সংস্কারের একমাত্র পথ রাজনৈতিক সমঝোতা’ শীর্ষক সংলাপ চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এই সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। বক্তব্য দেন জুলাই ৩৬ ফোরামের শামীম হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া সমন্বয়ক হাসিবুদ্দিন, রংপুর জেলা সমন্বয়ক চিনু কবীর, বিভাগীয় সমন্বয়ক রায়হান কবীরসহ জেলার নেতৃবৃন্দ।

সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুজন সম্পাদক অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের নেতা হানিফ খান সজিব, ইসলামী আন্দোলনের নেতা মনিরুজ্জামান পিয়াল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ,১ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহামেদ ইমতি, গণমাধ্যমকর্মীসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।

সংলাপ শুরুর পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি সংলাপ অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কয়েকজন দোসর সভায় উপস্থিত থাকার অভিযোগ এনে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। এ সময় একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সভাস্থল থেকে চলে যান। এ ঘটনার পর যথারীতি সংলাপ হয়। সংলাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র নাহিদ আখতারের কাছে সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসর কারা কারা তাদের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও নাম বলবো না। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তবে আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের সঙ্গে আমরা বসতে পারি না।’

তবে সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যাওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমি বিব্রত বোধ করায় চলে এসেছি। তবে আপনারা গণমাধ্যমকর্মীসহ সারা দেশের মানুষ জানে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে আমার ভূমিকা যখন কেউই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেনি তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষক হিসেবে প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়েছি। রংপুর জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে ছিলাম। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকে ৯ ঘণ্টা হাসপাতালে তার পাশে ছিলাম। ওই সময়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ভিডিও দেখেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়াও শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আমি অন্যতম সাক্ষী। এরপরও যারা এসব কথা বলে তাদের বিষয়ে আমার বলার কী থাকতে পারে?’

এদিকে সংলাপে অংশ নেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য দেন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘৫ আগস্টের গণ অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমরা যারা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলাম, আমাদের প্রত্যাশা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু ৬ মাসেও সংস্কারের নামে জনগণ কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ সব বিষয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।’