ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

সংলাপে আপত্তি নেই সরকারের, তবে প্রশ্ন আছে

  • আপডেট সময় : ০২:৫১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে আপত্তি নেই সরকারের। তবে কার সঙ্গে সংলাপ হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে মন্ত্রী জানান, বন্ধু দেশ কোনো পরামর্শ দিলে তা মূল্যায়ন করে সরকার।
গতকার মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় মোমেনের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সংলাপে আপত্তি নেই। আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাই না। গণতন্ত্র সমুন্নত করতে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। সেখানে যদি সংলাপের প্রয়োজন হয় আমরা সেটা করব। কিন্তু কার সঙ্গে করব, সেটা বিবেচনার বিষয় আছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেনÑট্রাম্প সাহেব আর বাইডেন সাহেব যদি সংলাপ করেন তাহলে আমিও রাজি। বন্ধু দেশগুলো কোনো ভালো পরামর্শ দিলে সরকার সেটাকে আমলে নেয় জানিয়ে মোমেন বলেন, যার যার মতামত রয়েছে, তারা দিচ্ছেন। আমরা এটা মাইন্ড করছি না। আমাদের বন্ধু দেশ যদি আমাদের কোনো পরামর্শ দেয় আমরা ওটাকে খুব ভালোভাবে নিই, সেটাকে মূল্যায়ন করি। দেশের মঙ্গলের জন্য আমরা সেটাকে গ্রহণ করি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ রকম পরামর্শ বহু আসে। আসুক, আমরা দেখি পরামর্শ যেগুলো আসে সেগুলো প্রয়োগ করা যায় কি না। বাস্তবতা দেখতে হবে। ডিএসএ’র (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন) ক্ষেত্রে বিদেশিরা বলেছে, আমরা ওটা গ্রহণ করেছি। আমরা খুব বাস্তবসম্মত দেশ, খুব বাস্তববাদী সরকার। মানুষের কোনো সত্যিকারের অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা গ্রহণের চেষ্টা করি। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ যদি কোনো পরামর্শ দেয় আর সেগুলো যদি উন্নতমানের হয় আমরা তা গ্রহণ করি। খালি বললে তো হবে না। একজন বলল, শ্রমিকদের মজুরি ২৫ হাজার করতে। এটা করতে গেলে ওই মালিক ফ্যাক্টরি চালাতে পারবে কি না বা লাভ করতে পারবে কি না, সেটাও তো দেখতে হবে। দেশের তিন রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতার উদ্যোগ নিল কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ওদের জিজ্ঞেস করেন। তারা কি কারণে করেছে তাদের জিজ্ঞেস করেন। তারা ভালো উত্তর দিতে পারবেন। আওয়ামী লীগ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চাই। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেন কোথাও বিঘিœত না হয়, সেটা যেন না হয়। আগেও বিএনপি সরকার এবং তাদের উত্তরসূরিরা মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার নষ্ট করেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভলকার টুর্কের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওনাকে বলেন ওনার দেশে বন্দিকে, অপরাধীকে, দ-িত অপরাধীকে অন্য দেশে পাঠায় কি না?
নয়া দিল্লির সঙ্গে দ্বিমত নেই ঢাকার: সম্প্রতি নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিয়েছে তার সঙ্গে ঢাকার কোনো দ্বিমত নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী। দিন চারেক আগে নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ওই বৈঠকে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কীভাবে হবে, তা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়। নয়া দিল্লির বার্তার পর ওয়াশিংটন বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলে যে চাপ অব্যাহত রেখেছে, তা কমবে কিনা-দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ড. মোমেনের। জবাবে মোমেন প্রশ্ন করা সাংবাদিকের উদ্দেশে বলেন, সেটা আপনি দিল্লিকে জিজ্ঞেস করেন। ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমত নেই। আমরা বিশ্বাস করি, ভারবর্ষ পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ এবং তারা অত্যন্ত পরিপক্ব। সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব। তারা (ভারত) যেগুলো বলে সেগুলোতে আমাদের দ্বিমত নেই।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংলাপে আপত্তি নেই সরকারের, তবে প্রশ্ন আছে

আপডেট সময় : ০২:৫১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে আপত্তি নেই সরকারের। তবে কার সঙ্গে সংলাপ হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে মন্ত্রী জানান, বন্ধু দেশ কোনো পরামর্শ দিলে তা মূল্যায়ন করে সরকার।
গতকার মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় মোমেনের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সংলাপে আপত্তি নেই। আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাই না। গণতন্ত্র সমুন্নত করতে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। সেখানে যদি সংলাপের প্রয়োজন হয় আমরা সেটা করব। কিন্তু কার সঙ্গে করব, সেটা বিবেচনার বিষয় আছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেনÑট্রাম্প সাহেব আর বাইডেন সাহেব যদি সংলাপ করেন তাহলে আমিও রাজি। বন্ধু দেশগুলো কোনো ভালো পরামর্শ দিলে সরকার সেটাকে আমলে নেয় জানিয়ে মোমেন বলেন, যার যার মতামত রয়েছে, তারা দিচ্ছেন। আমরা এটা মাইন্ড করছি না। আমাদের বন্ধু দেশ যদি আমাদের কোনো পরামর্শ দেয় আমরা ওটাকে খুব ভালোভাবে নিই, সেটাকে মূল্যায়ন করি। দেশের মঙ্গলের জন্য আমরা সেটাকে গ্রহণ করি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ রকম পরামর্শ বহু আসে। আসুক, আমরা দেখি পরামর্শ যেগুলো আসে সেগুলো প্রয়োগ করা যায় কি না। বাস্তবতা দেখতে হবে। ডিএসএ’র (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন) ক্ষেত্রে বিদেশিরা বলেছে, আমরা ওটা গ্রহণ করেছি। আমরা খুব বাস্তবসম্মত দেশ, খুব বাস্তববাদী সরকার। মানুষের কোনো সত্যিকারের অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা গ্রহণের চেষ্টা করি। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ যদি কোনো পরামর্শ দেয় আর সেগুলো যদি উন্নতমানের হয় আমরা তা গ্রহণ করি। খালি বললে তো হবে না। একজন বলল, শ্রমিকদের মজুরি ২৫ হাজার করতে। এটা করতে গেলে ওই মালিক ফ্যাক্টরি চালাতে পারবে কি না বা লাভ করতে পারবে কি না, সেটাও তো দেখতে হবে। দেশের তিন রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতার উদ্যোগ নিল কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ওদের জিজ্ঞেস করেন। তারা কি কারণে করেছে তাদের জিজ্ঞেস করেন। তারা ভালো উত্তর দিতে পারবেন। আওয়ামী লীগ দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে চাই। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যেন কোথাও বিঘিœত না হয়, সেটা যেন না হয়। আগেও বিএনপি সরকার এবং তাদের উত্তরসূরিরা মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার নষ্ট করেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভলকার টুর্কের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওনাকে বলেন ওনার দেশে বন্দিকে, অপরাধীকে, দ-িত অপরাধীকে অন্য দেশে পাঠায় কি না?
নয়া দিল্লির সঙ্গে দ্বিমত নেই ঢাকার: সম্প্রতি নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিয়েছে তার সঙ্গে ঢাকার কোনো দ্বিমত নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী। দিন চারেক আগে নয়া দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ওই বৈঠকে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কীভাবে হবে, তা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়। নয়া দিল্লির বার্তার পর ওয়াশিংটন বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলে যে চাপ অব্যাহত রেখেছে, তা কমবে কিনা-দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ড. মোমেনের। জবাবে মোমেন প্রশ্ন করা সাংবাদিকের উদ্দেশে বলেন, সেটা আপনি দিল্লিকে জিজ্ঞেস করেন। ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমত নেই। আমরা বিশ্বাস করি, ভারবর্ষ পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ এবং তারা অত্যন্ত পরিপক্ব। সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব। তারা (ভারত) যেগুলো বলে সেগুলোতে আমাদের দ্বিমত নেই।