ঢাকা ০১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ চায় গণসংহতি আন্দোলন

  • আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে নিজেদের মতামত হস্তান্তর করে গণসংহতি আন্দোলন একটি প্রতিনিধি দল। -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন; তারা ৯০ শতাংশ সুপারিশের সঙ্গে একমত বলে তুলে ধরেছেন দলটির নির্বাহী সমন্বয়ককারী আবুল হাসান রুবেল।

তিনি বলেছেন, জনগণের অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ চান তারা।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে নিজেদের মতামত হস্তান্তর করেছে গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল। পরে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল সাংবাদিকেদের বলেন, ১৬৬টি সুপারিশের প্রত্যেকটির বিষয়ে আমরা মতামত জানিয়েছি। এরমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তাবের ব্যাপারে আমাদের ঐকমত্য আছে। ১০ শতাংশের বিষয়ে আমাদের কোথাও আংশিক ঐক্যমত আছে বা বিরোধিতা আছে বা নতুন প্রস্তাবও আছে।

কীভাবে সংবিধান সংস্কারের কাজ হবে সে বিষয়েও মতামত তুলে ধরেছে গণসংহতি আন্দোলন। রুবেল বলেন, সংবিধান সংস্কারের কাজটা কীভাবে হবে এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- একটা সংবিধান সংস্কার পরিষদের মাধ্যমে এটা হবে।

সংবিধান সংস্কারের বিষয়টি জনগণের বহু দিনের ‘আকাঙ্খা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতে সংবিধান সংস্কার পরিষদ নির্বাচন চান তারা। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ নির্বাচন হতে পারে। কেন আমরা নতুন গণপরিষদ বলছি না বা জাতীয় সংসদে সংশোধনের কথা বলছি না, আমরা বলছি, যে সংবিধান আছে তার খোলনলচে পাল্টে ফেলার দরকার নেই, ফেলে দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু দৃশ্যত ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন দরকার। সে দিক থেকে সংবিধানের সংস্কার জনগণের অভিপ্রায় আকারে যাতে আসে। এ জন্যে একটা সময়সীমার মধ্যে কাজটা সম্পন্ন করা যেতে পারে বলে মত দেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী।

রুবেল বলেন, এক্ষেত্রে কারা সরকার গঠন করবে, কারা সংবিধান করবে এ জটিলতাও পোহাতে হবে না। সব দল মিলে এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্যে আসা সম্ভব। সংস্কার ও নির্বাচনের ভেতরে যে বিরোধ জিইয়ে রাখা হয়েছে তা যেন না থাকে সে জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

গণসংগতি আন্দোলনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনিরউদ্দীন পাপ্পু, দীপক রায়, জুলহাসনাইন বাবু ও বাচ্চু ভূঁইয়া।

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ ২২টি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে মতামত দিয়েছে বলে জানিয়েছের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী। সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ চূড়ান্ত করতে মতামত দেওয়া দলগুলোর সঙ্গে ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
ইতোমধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে আলোচনা করেছে কমিশন। ঈদের পরে বাকি দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কথা রয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কার দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথম ধাপে গত অক্টোবরে গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপে গঠিত পাঁচ সংস্কার কমিশনের মধ্যে ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার’ কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশের প্রতিবেদন জমা পড়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি। আর ২২ মার্চ জমা পড়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন। বাকি রইল স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ চায় গণসংহতি আন্দোলন

আপডেট সময় : ০৭:১২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন; তারা ৯০ শতাংশ সুপারিশের সঙ্গে একমত বলে তুলে ধরেছেন দলটির নির্বাহী সমন্বয়ককারী আবুল হাসান রুবেল।

তিনি বলেছেন, জনগণের অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ চান তারা।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে নিজেদের মতামত হস্তান্তর করেছে গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধি দল। পরে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল সাংবাদিকেদের বলেন, ১৬৬টি সুপারিশের প্রত্যেকটির বিষয়ে আমরা মতামত জানিয়েছি। এরমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তাবের ব্যাপারে আমাদের ঐকমত্য আছে। ১০ শতাংশের বিষয়ে আমাদের কোথাও আংশিক ঐক্যমত আছে বা বিরোধিতা আছে বা নতুন প্রস্তাবও আছে।

কীভাবে সংবিধান সংস্কারের কাজ হবে সে বিষয়েও মতামত তুলে ধরেছে গণসংহতি আন্দোলন। রুবেল বলেন, সংবিধান সংস্কারের কাজটা কীভাবে হবে এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- একটা সংবিধান সংস্কার পরিষদের মাধ্যমে এটা হবে।

সংবিধান সংস্কারের বিষয়টি জনগণের বহু দিনের ‘আকাঙ্খা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতে সংবিধান সংস্কার পরিষদ নির্বাচন চান তারা। জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ নির্বাচন হতে পারে। কেন আমরা নতুন গণপরিষদ বলছি না বা জাতীয় সংসদে সংশোধনের কথা বলছি না, আমরা বলছি, যে সংবিধান আছে তার খোলনলচে পাল্টে ফেলার দরকার নেই, ফেলে দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু দৃশ্যত ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন দরকার। সে দিক থেকে সংবিধানের সংস্কার জনগণের অভিপ্রায় আকারে যাতে আসে। এ জন্যে একটা সময়সীমার মধ্যে কাজটা সম্পন্ন করা যেতে পারে বলে মত দেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী।

রুবেল বলেন, এক্ষেত্রে কারা সরকার গঠন করবে, কারা সংবিধান করবে এ জটিলতাও পোহাতে হবে না। সব দল মিলে এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্যে আসা সম্ভব। সংস্কার ও নির্বাচনের ভেতরে যে বিরোধ জিইয়ে রাখা হয়েছে তা যেন না থাকে সে জন্য সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

গণসংগতি আন্দোলনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনিরউদ্দীন পাপ্পু, দীপক রায়, জুলহাসনাইন বাবু ও বাচ্চু ভূঁইয়া।

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ ২২টি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে মতামত দিয়েছে বলে জানিয়েছের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী। সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ চূড়ান্ত করতে মতামত দেওয়া দলগুলোর সঙ্গে ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
ইতোমধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে আলোচনা করেছে কমিশন। ঈদের পরে বাকি দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কথা রয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কার দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথম ধাপে গত অক্টোবরে গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপে গঠিত পাঁচ সংস্কার কমিশনের মধ্যে ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার’ কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশের প্রতিবেদন জমা পড়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি। আর ২২ মার্চ জমা পড়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন। বাকি রইল স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন।