ঢাকা ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

সংগঠনের প্রতি উমামার কমিটমেন্ট ছিল কি না, প্রশ্ন রিফাতের

  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

রিফাত রশীদ

প্রত্যাশা ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সদ্য আনুষ্ঠানিক যাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করা সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা নিজের দায়িত্বটা কতটুকু ভালোভাবে পালন করেছেন বা আদৌ নিজ সংগঠনের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র কমিটমেন্ট (অঙ্গীকার) ছিল কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্ল্যাটফর্মটির সভাপতি রিফাত রশীদ। উমামার পদত্যাগ নিয়ে শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় রিফাত রশীদ এসব কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে উমামা ফাতেমা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটিকে সুবিধাবাদীরা ভেতর থেকে খেয়ে ফেলেছে। দলীয় লেজুড় ও প্রেসক্রিপশনের বাইরে এই ব্যানার স্বাধীনভাবে কাজ করলে অনেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ত। দিনের পর দিন এমন কোনো নোংরামি নেই, যা তাঁর সঙ্গে করা হয়নি। মুখপাত্র হয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজের অ্যাকসেস পাননি বলেও উল্লেখ করেন উমামা।

উমামা ফাতেমা তাঁর পোস্টে যেসব অভিযোগ করেছেন, সেগুলোর বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এগুলো তাঁর (উমামা) ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার স্বাধীনতা তাঁর রয়েছে। তিনি তো অনেক অভিযোগ করলেন, তবে তিনি নিজের দায়িত্বটা কতটুকু ভালোভাবে পালন করেছেন বা আদৌ নিজ সংগঠনের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র কমিটমেন্ট ছিল কি না, সেই প্রশ্নটাও তাঁর নিজেকেই করা উচিত।’

উমামা ফাতেমার পোস্টটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ১০ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আড়াই হাজার ব্যবহারকারী পোস্টটি শেয়ার করেছেন। এ ছাড়া অনেকে এই পোস্টের নিচে উমামাকে অভিনন্দিত করে নানা মন্তব্যও করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রী উমামা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২২ অক্টোবর প্ল্যাটফর্মটির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হলে উমামাকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২৫ জুন প্রথম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি হয়েছে। কমিটিতে রিফাত রশীদ সভাপতি ও মো. ইনামুল হাসান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এই কমিটিতে উমামা নেই। কেন্দ্রীয় সম্মেলনে ভোটের প্রক্রিয়া নিয়েও উমামা তাঁর পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন।

রিফাত রশীদ প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কিছু কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বছর ঘুরে আবারও জুলাই চলে এসেছে। জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র কিংবা আওয়ামী গণহত্যাকারীদের বিচার-কোনো কিছুই আমাদের সামনে চাক্ষুষ হয়নি। উপদেষ্টারা কতটুকু জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করেন, এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জনগণের মনে সংশয় দেখা দিচ্ছে। কিছু কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয় জুলাই বেহাত করার জন্য তাঁরা উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই মুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুরুদায়িত্ব হলো জুলাই বিপ্লবের পক্ষের সব শক্তির মধ্যে আবার ঐকমত্য গঠন এবং পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি সম্মিলিত রূপকল্প দেওয়া।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংগঠনের প্রতি উমামার কমিটমেন্ট ছিল কি না, প্রশ্ন রিফাতের

সংগঠনের প্রতি উমামার কমিটমেন্ট ছিল কি না, প্রশ্ন রিফাতের

আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সদ্য আনুষ্ঠানিক যাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করা সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা নিজের দায়িত্বটা কতটুকু ভালোভাবে পালন করেছেন বা আদৌ নিজ সংগঠনের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র কমিটমেন্ট (অঙ্গীকার) ছিল কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্ল্যাটফর্মটির সভাপতি রিফাত রশীদ। উমামার পদত্যাগ নিয়ে শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় রিফাত রশীদ এসব কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে উমামা ফাতেমা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটিকে সুবিধাবাদীরা ভেতর থেকে খেয়ে ফেলেছে। দলীয় লেজুড় ও প্রেসক্রিপশনের বাইরে এই ব্যানার স্বাধীনভাবে কাজ করলে অনেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ত। দিনের পর দিন এমন কোনো নোংরামি নেই, যা তাঁর সঙ্গে করা হয়নি। মুখপাত্র হয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজের অ্যাকসেস পাননি বলেও উল্লেখ করেন উমামা।

উমামা ফাতেমা তাঁর পোস্টে যেসব অভিযোগ করেছেন, সেগুলোর বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এগুলো তাঁর (উমামা) ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার স্বাধীনতা তাঁর রয়েছে। তিনি তো অনেক অভিযোগ করলেন, তবে তিনি নিজের দায়িত্বটা কতটুকু ভালোভাবে পালন করেছেন বা আদৌ নিজ সংগঠনের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র কমিটমেন্ট ছিল কি না, সেই প্রশ্নটাও তাঁর নিজেকেই করা উচিত।’

উমামা ফাতেমার পোস্টটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ১০ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আড়াই হাজার ব্যবহারকারী পোস্টটি শেয়ার করেছেন। এ ছাড়া অনেকে এই পোস্টের নিচে উমামাকে অভিনন্দিত করে নানা মন্তব্যও করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রী উমামা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২২ অক্টোবর প্ল্যাটফর্মটির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হলে উমামাকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২৫ জুন প্রথম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি হয়েছে। কমিটিতে রিফাত রশীদ সভাপতি ও মো. ইনামুল হাসান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এই কমিটিতে উমামা নেই। কেন্দ্রীয় সম্মেলনে ভোটের প্রক্রিয়া নিয়েও উমামা তাঁর পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন।

রিফাত রশীদ প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কিছু কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বছর ঘুরে আবারও জুলাই চলে এসেছে। জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র কিংবা আওয়ামী গণহত্যাকারীদের বিচার-কোনো কিছুই আমাদের সামনে চাক্ষুষ হয়নি। উপদেষ্টারা কতটুকু জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করেন, এই ব্যাপারগুলো নিয়ে জনগণের মনে সংশয় দেখা দিচ্ছে। কিছু কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয় জুলাই বেহাত করার জন্য তাঁরা উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই মুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুরুদায়িত্ব হলো জুলাই বিপ্লবের পক্ষের সব শক্তির মধ্যে আবার ঐকমত্য গঠন এবং পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি সম্মিলিত রূপকল্প দেওয়া।