নিজস্ব প্রতিবেদক: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যে স্বৈরাচারকে (আওয়ামী লীগ) এত কষ্ট করে লড়াই করে ফেলে দিয়েছি, সেই স্বৈরাচারের ভোটের হার এখনও অনেক বেশি। সংখ্যানুপাতিক হারে ভোট হলে তারা অনেক বেশি এগিয়ে থাকবে। তা ছাড়া দলটি যদি ভোট করার সুযোগ পায়, তাদের পদত্যাগ বিষয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু সরকার বলছে আমরা নিষিদ্ধ করবো না। নিষিদ্ধ যদি না করেন তাহলে তারা নির্বাচন করবে না কেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘শাসন ব্যবস্থায় গুনগত পরিবর্তন ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রস্তাবটি সুন্দর হলেও জাতির তথা বৃহত্তর স্বার্থে আমি আপাতত সমর্থন করছি না’ মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রস্তাবটি খুবই সুন্দর। আমার জন্য বেশি সুন্দর, কিন্তু সমগ্র জাতির জন্য নয়। এতে করে আওয়ামী লীগের যদি ৪০টা এমপি আসে। তারপর আমি এমপি থাকতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে। তারা বলবে জনগণের রায় আমাদের পক্ষে, তুমি কে? কয়টা ভোট পেয়েছ তুমি? তোমার কয়টা এমপি আছে?
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, গত পরশুদিন এবং গতকালকেও আওয়ামী লীগের লোকজন লিফলেট বিতরণ করেছে। কীভাবে করতে পারলো তারা? আমাদের পুলিশ কী করেছে? তারপর দেখলাম আমাদের প্রশাসনের কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন এরপর কেউ করলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। তারা তো ঘোষণা দিয়েছে ১৫ দিন আগে, ১৫ দিন ধরে আপনারা কী করলেন? আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রশাসন এখনও তৈরি করতে পারেনি। আমরা সফলতা কামনা করছি, কিন্তু তারা সফল হতে পারছে না। তারা যদি সফল হতে পারতো, তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না।
নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের উদ্দেশে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আপনি নিশ্চয়ই নৃশংসভাবে আমাদের দেশের শিশু-কিশোর, শ্রমজীবী মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে মারা হয়েছে— সেটার বিচার চান। আমিও এর বিচার চাই। কিন্তু আপনি বললেন বিচার করার আগে ভোট হবে না। বিচার করতে কতদিন লাগবে? আপনি আদালতকে বলতে পারবেন বিচার শেষ করতে হবে। তাহলে তো আদালতে হস্তক্ষেপ করা হয়। কিন্তু আদালত যদি মনে করে বিচার করতে আরও সময় লাগবে এবং বিচার করতে যদি পাঁচ বছর লাগে, তাহলে কী পাঁচ বছর পরে নির্বাচন করবেন? সম্ভব? দ্রব্যমূল্য দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে, এতদিনেও সরকার কী কিছু করতে পেরেছে? বাস্তবতা মেনে নিতে হবে, শুধু আবেগ দিয়ে চললে আমাদের সমস্যা সমাধান হবে না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— গণমুক্তি জোটের সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, লে. জেনারেল (অব.) আমিনুল করিম প্রমুখ।