ঢাকা ০১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সংকটের আবর্তে কারিগরি শিক্ষা

  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়াই চলছে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম। কোর্স-কারিকুলামে পরিবর্তন আনা হলেও শিক্ষক সংকট চরমে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নেই ল্যাব-গবেষণাগার। নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে জোর দেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং পরিকল্পনা নেই। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কারিগরিতে বিভিন্ন ট্রেড ও শর্টকোর্স মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। সরকারি-বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর আসন শূন্য। সূত্র জানায়, ঢাকা পলিটেকনিক কলেজে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে ৩৯৪ জন শিক্ষকের পদ সৃজন থাকলেও মাত্র ১০১ জন শিক্ষক দিয়ে দুই শিফট চালানো হচ্ছে। কিছু খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে সংকট দূরীকরণের চেষ্টা করা হলেও তা কাজে আসছে না। জানতে চাইলে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার কাজী জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সারাদেশে ৫০টি সরকারি পলিটেকনিকের মধ্যে ঢাকার অবস্থা কিছুটা ভালো। সম্প্রতি এখানে উন্নতমানের মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। তবে রয়েছে শিক্ষক সংকট। কিছু কিছু ট্রেডে শিক্ষার্থীর আসন খালি থাকছে। তিনি বলেন, যেহেতু এখানে দুটি শিফটে শিক্ষার্থী পড়ানো হয়, তাই খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নিতে হবে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এ সংকট কেটে যাবে।
দেশে বর্তমানে কয়েক ধরনের কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এগুলোর একটি হচ্ছে ছয় শতাধিক সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৩৬ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন। এছাড়া মেরিন একাডেমি, সার্ভে ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের ডিপ্লোমা কোর্স। সাধারণত এই শিক্ষাকেই মূলধারার কারিগরি শিক্ষা হিসেবে চিহ্নিত ও প্রচার করা হয়। এর বাইরে আছে ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর মেয়াদি শর্টকোর্স। সাধারণত বিদেশমুখী জনশক্তিকে এই শিক্ষা দেওয়া হয়, যাতে তারা ভালো বেতনে চাকরি নিতে পারেন। দক্ষ জনশক্তির জন্য আছে সার্টিফিকেট কোর্স। ছয়টি লেভেলের আরপিএল (রিকগনিশন অব প্রায়োর লার্নিং) নামে এ কোর্সের ছয় নম্বরটি সম্পন্ন করলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমান ডিগ্রি দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশের দুই হাজার স্কুলে নবম-দশম শ্রেণি এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু আছে। উচ্চ মাধ্যমিকে আছে এইচএসসি বিএম (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা)। সবমিলে এসব কোর্স ও ট্রেডে কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হয় সারাদেশে প্রায় ৯ হাজার প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য কমবেশি নীতিমালা আছে। প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সেই নীতিমালা বাস্তবায়ন কম। যে কারণে পর্যাপ্ত জায়গা, জমি, ল্যাবরেটরি ছাড়াই একেকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারিক ক্লাসের বালাই নেই। হাতে-কলমে নয়, তাত্ত্বিকভাবে কিছু শিখছে তারা। অপরদিকে তদারকির অভাবে এসব প্রতিষ্ঠান কী পড়াচ্ছে, শিক্ষার্থীরা কী শিখছে, কত টাকা নিচ্ছে- কোনো কিছুই দেখার কেউ নেই।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের (আইডিইবি) সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান বলেন, শিক্ষার মূল স্রোতধারায় কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আনতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নেই এমন ২৩টি জেলায় বিশ্বমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা একটি। মেয়েদের কারিগরি শিক্ষায় আনতে যেসব বিভাগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নেই সেসব স্থানে আরও চারটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে ২০ হাজার ৫শ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ১০০টিতে এরই মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। ‘জেনারেল শিক্ষায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে একটি করে কারিগরি কোর্সের ট্রেড চালু করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০২১ সাল থেকে এটি চালুর নির্দেশ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সিলেবাস, কারিকুলাম, পাঠ্যবই তৈরি করা হয়নি বলে সেটি আলোর মুখ দেখেনি। আগামী বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি পারবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ২০ শতাংশ, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে মোট শিক্ষার্থীর ৫০ শতাংশ আনার ঘোষণা করেছেন। ২০২৩ সাল থেকে জেনারেল শিক্ষায় কোনো বিভাগ থাকবে না। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কোর্স চালু হওয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান আরও বলেন, অনেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বেকার থাকছে। অনেকে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে নি¤œমানের কাজ করছে। দেশে-বিদেশে দক্ষ জনবল চাহিদা থাকলেও আমাদের ছেলেমেয়েদের দক্ষ করে তোলা যাচ্ছে না। বিদেশে গেলেও স্কিল না থাকায় অন্যদের চেয়ে কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। মাধ্যমিক পাসের পর কেউ ঝরে গেলেও একটি ট্রেডের উপর প্রশিক্ষণ থাকলে সে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবে। কেউ যদি উচ্চশিক্ষা নেয় তার সঙ্গে করিগরি কোর্সের উপর অভিজ্ঞতা থাকলে কর্মক্ষেত্রে ভালো করবে। দেশ-বিদেশে তার চাহিদা বেড়ে যাবে। সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা জানান, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে নেই কোনো প্রচারণা। চলতি বছর সারাদেশে ৫০ পলিটেকনিক্যাল কলেজে ৪৯ হাজার আসনের মধ্যে সাত হাজার শূন্য রয়েছে। বেসরকারি দেড় লাখ আসনে মাত্র ৫০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সকে চার বছরের বদলে তিন বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি হলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মান আরও কমে যাবে। এসব বিষয় জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংকটের আবর্তে কারিগরি শিক্ষা

আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়াই চলছে কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম। কোর্স-কারিকুলামে পরিবর্তন আনা হলেও শিক্ষক সংকট চরমে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নেই ল্যাব-গবেষণাগার। নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে জোর দেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং পরিকল্পনা নেই। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কারিগরিতে বিভিন্ন ট্রেড ও শর্টকোর্স মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। সরকারি-বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর আসন শূন্য। সূত্র জানায়, ঢাকা পলিটেকনিক কলেজে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে ৩৯৪ জন শিক্ষকের পদ সৃজন থাকলেও মাত্র ১০১ জন শিক্ষক দিয়ে দুই শিফট চালানো হচ্ছে। কিছু খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে সংকট দূরীকরণের চেষ্টা করা হলেও তা কাজে আসছে না। জানতে চাইলে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার কাজী জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সারাদেশে ৫০টি সরকারি পলিটেকনিকের মধ্যে ঢাকার অবস্থা কিছুটা ভালো। সম্প্রতি এখানে উন্নতমানের মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। তবে রয়েছে শিক্ষক সংকট। কিছু কিছু ট্রেডে শিক্ষার্থীর আসন খালি থাকছে। তিনি বলেন, যেহেতু এখানে দুটি শিফটে শিক্ষার্থী পড়ানো হয়, তাই খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নিতে হবে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত এ সংকট কেটে যাবে।
দেশে বর্তমানে কয়েক ধরনের কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এগুলোর একটি হচ্ছে ছয় শতাধিক সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৩৬ বিষয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন। এছাড়া মেরিন একাডেমি, সার্ভে ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের ডিপ্লোমা কোর্স। সাধারণত এই শিক্ষাকেই মূলধারার কারিগরি শিক্ষা হিসেবে চিহ্নিত ও প্রচার করা হয়। এর বাইরে আছে ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর মেয়াদি শর্টকোর্স। সাধারণত বিদেশমুখী জনশক্তিকে এই শিক্ষা দেওয়া হয়, যাতে তারা ভালো বেতনে চাকরি নিতে পারেন। দক্ষ জনশক্তির জন্য আছে সার্টিফিকেট কোর্স। ছয়টি লেভেলের আরপিএল (রিকগনিশন অব প্রায়োর লার্নিং) নামে এ কোর্সের ছয় নম্বরটি সম্পন্ন করলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমান ডিগ্রি দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশের দুই হাজার স্কুলে নবম-দশম শ্রেণি এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু আছে। উচ্চ মাধ্যমিকে আছে এইচএসসি বিএম (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা)। সবমিলে এসব কোর্স ও ট্রেডে কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হয় সারাদেশে প্রায় ৯ হাজার প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য কমবেশি নীতিমালা আছে। প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সেই নীতিমালা বাস্তবায়ন কম। যে কারণে পর্যাপ্ত জায়গা, জমি, ল্যাবরেটরি ছাড়াই একেকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারিক ক্লাসের বালাই নেই। হাতে-কলমে নয়, তাত্ত্বিকভাবে কিছু শিখছে তারা। অপরদিকে তদারকির অভাবে এসব প্রতিষ্ঠান কী পড়াচ্ছে, শিক্ষার্থীরা কী শিখছে, কত টাকা নিচ্ছে- কোনো কিছুই দেখার কেউ নেই।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের (আইডিইবি) সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান বলেন, শিক্ষার মূল স্রোতধারায় কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আনতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নেই এমন ২৩টি জেলায় বিশ্বমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা একটি। মেয়েদের কারিগরি শিক্ষায় আনতে যেসব বিভাগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নেই সেসব স্থানে আরও চারটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে ২০ হাজার ৫শ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ১০০টিতে এরই মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। ‘জেনারেল শিক্ষায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে একটি করে কারিগরি কোর্সের ট্রেড চালু করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০২১ সাল থেকে এটি চালুর নির্দেশ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সিলেবাস, কারিকুলাম, পাঠ্যবই তৈরি করা হয়নি বলে সেটি আলোর মুখ দেখেনি। আগামী বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি পারবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ২০ শতাংশ, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে মোট শিক্ষার্থীর ৫০ শতাংশ আনার ঘোষণা করেছেন। ২০২৩ সাল থেকে জেনারেল শিক্ষায় কোনো বিভাগ থাকবে না। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কোর্স চালু হওয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রহমান আরও বলেন, অনেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বেকার থাকছে। অনেকে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে নি¤œমানের কাজ করছে। দেশে-বিদেশে দক্ষ জনবল চাহিদা থাকলেও আমাদের ছেলেমেয়েদের দক্ষ করে তোলা যাচ্ছে না। বিদেশে গেলেও স্কিল না থাকায় অন্যদের চেয়ে কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। মাধ্যমিক পাসের পর কেউ ঝরে গেলেও একটি ট্রেডের উপর প্রশিক্ষণ থাকলে সে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবে। কেউ যদি উচ্চশিক্ষা নেয় তার সঙ্গে করিগরি কোর্সের উপর অভিজ্ঞতা থাকলে কর্মক্ষেত্রে ভালো করবে। দেশ-বিদেশে তার চাহিদা বেড়ে যাবে। সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সংশ্লিষ্টরা জানান, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে নেই কোনো প্রচারণা। চলতি বছর সারাদেশে ৫০ পলিটেকনিক্যাল কলেজে ৪৯ হাজার আসনের মধ্যে সাত হাজার শূন্য রয়েছে। বেসরকারি দেড় লাখ আসনে মাত্র ৫০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সকে চার বছরের বদলে তিন বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি হলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মান আরও কমে যাবে। এসব বিষয় জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।