ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

শ্রীলঙ্কা হবে না বাংলাদেশ, ভয় নেই: শিবলী রুবাইয়াত

  • আপডেট সময় : ০২:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তিনি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা ২ বিলিয়ন ডলারের সমস্যায় পড়েছে। আর বাংলাদেশ মাসে শুধু একটা খাত থেকেই ২ বিলিয়ন ডলার পায়। আর রেমিট্যান্স-রপ্তানি আয় মিলিয়ে বছরে অন্তত ২২-২৪ বিলিয়ন ডলার আসে। তাই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা চলে না। বাংলাদেশকে নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) কর্তৃক আয়োজিত বর্তমান ‘বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসইসির মাল্টিপার্পাস হল রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলামের সভপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এতে আরও বক্তব্য দেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শীলঙ্কারও আগে দেউলিয়া হয়েছে লেবানন। তারা অনেক আগে থেকেই ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। ওই দেশে কোনো পাওয়ার প্লান্ট নাই। সেটা কিন্তু কেউ বলে নাই। ওটা নিয়ে কারও কোনো ব্যাথ্যা ছিল না। হঠাৎ করে সবার শীলঙ্কার কথা মনে পড়ে গেছে। এরপরে তারা নানা ধরনের গুজব ছড়াতে শুরু করল। আরে আমরা নিজেরাই শ্রীলঙ্কাকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিলাম। যে সাহায্য দিল, সেই নাকি ওর মতো হয়ে যাচ্ছে। এটা হয় নাকি। তিনি বলেন, অনেকে অর্থনীতি বুঝেও না বুঝার মতো কথা বলেন। তখনই বিষয়টি হয়ে যায় ক্ষতিকর। আমাদের ৫ বছর আগের তুলনায় রেমিটেন্স এখন কত এবং প্রবৃদ্ধি কত সেটা বুঝতে হবে। করোনার সময়ও রেমিটেন্স বেড়েছে। গত ১০ মাসে ৮ লাখ শ্রমিক বিদেশ গেছে। যারা দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে। ‘করোনার মধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যখন দেশে যখন অর্থনীতির সব ধরনের কর্মকা- বন্ধ, তখন আমাদের দেশে জীবন ও জীবিকা সমানভাবে চলেছে। করোনার পর থেকে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন সরাসরি জাহাজ পরিচালিত হচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জাহাজীকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন নতুন জাহাজ কোম্পানি দেশি এবং বিদেশি সমুদ্রে জাহাজ ব্যবসা শুরু করেছে। বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে এখনো করোনা থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। তবে আল্লাহর রহমতে আমাদের সে অবস্থা নেই’—যোগ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমদানি বেড়েছে বলে জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদেরকে পণ্য রপ্তানির জন্য কাচাঁমাল আমদানি করতে হয়। যে কারনে আমদানিও বেড়েছে। অতএব এক্সপোর্ট বাড়লে ইমপোর্ট বাড়বেই। বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার তুলনা চলে না জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শ্রীলঙ্কা ২ বিলিয়ন ডলারের সমস্যায় পড়েছে। আর আমরা মাসে শুধু একটা খাত থেকেই ২ বিলিয়ন ডলার পাই। যে অর্থনীতির দেশে (বাংলাদেশ) বছরে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়, সেখানে কেনো যে মানুষ ভয় পায়, তা আমি বুঝি না। আমরা রপ্তানির অর্থ বাদই দিলাম, বছরে ২২-২৪ বিলিয়ন ডলারতো পাই। এখান থেকে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধে দিতে পারব না? ধরলাম ৪-৫ বিলিয়ন ডলারই ঋণ পরিশোধে যাবে, তাতে কী আসবে যাবে আমাদের। বরং আমরা যদি হুন্ডি ব্যবসায়ীদেরকে ধরে ফেলতে পারি। তাহলে ৫-১০ বিলিয়ন ডলার বেচেঁ যাবে। কারণ এরাই আমদানি-রপ্তানির সময় ওভারভয়েস-আন্ডারভয়েস এলসি খুলে বিদেশে টাকা পাচার করে। শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নে যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আমরা সক্ষম। বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে এই বুঝি শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা হলো শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের ভয় পাওয়ার মতো কোনো কিছু নেই। তবে স্বপ্ন দেখার অনেক কিছুই আছে। বক্তব্যে রাশিয়ার ওপর ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সারাবিশ্বের সাপ্লাইচেইন নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে যেসব দেশে রাশিয়ার পণ্যের সংকট, ওইসব দেশ ভোগান্তিতে পড়বে। বিভিন্ন দেশের ওপর ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বাংলাদেশ যদি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কয়লার ব্যবহার ২ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করতে যায়, দেখবেন এমন একটি দেশ এসে বাধা বা নিষেধাজ্ঞা দেবে, যারা ২০ শতাংশ কয়লা ব্যবহার করে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শ্রীলঙ্কা হবে না বাংলাদেশ, ভয় নেই: শিবলী রুবাইয়াত

আপডেট সময় : ০২:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তিনি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা ২ বিলিয়ন ডলারের সমস্যায় পড়েছে। আর বাংলাদেশ মাসে শুধু একটা খাত থেকেই ২ বিলিয়ন ডলার পায়। আর রেমিট্যান্স-রপ্তানি আয় মিলিয়ে বছরে অন্তত ২২-২৪ বিলিয়ন ডলার আসে। তাই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা চলে না। বাংলাদেশকে নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম) কর্তৃক আয়োজিত বর্তমান ‘বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসইসির মাল্টিপার্পাস হল রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলামের সভপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এতে আরও বক্তব্য দেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শীলঙ্কারও আগে দেউলিয়া হয়েছে লেবানন। তারা অনেক আগে থেকেই ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। ওই দেশে কোনো পাওয়ার প্লান্ট নাই। সেটা কিন্তু কেউ বলে নাই। ওটা নিয়ে কারও কোনো ব্যাথ্যা ছিল না। হঠাৎ করে সবার শীলঙ্কার কথা মনে পড়ে গেছে। এরপরে তারা নানা ধরনের গুজব ছড়াতে শুরু করল। আরে আমরা নিজেরাই শ্রীলঙ্কাকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিলাম। যে সাহায্য দিল, সেই নাকি ওর মতো হয়ে যাচ্ছে। এটা হয় নাকি। তিনি বলেন, অনেকে অর্থনীতি বুঝেও না বুঝার মতো কথা বলেন। তখনই বিষয়টি হয়ে যায় ক্ষতিকর। আমাদের ৫ বছর আগের তুলনায় রেমিটেন্স এখন কত এবং প্রবৃদ্ধি কত সেটা বুঝতে হবে। করোনার সময়ও রেমিটেন্স বেড়েছে। গত ১০ মাসে ৮ লাখ শ্রমিক বিদেশ গেছে। যারা দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বড় অবদান রাখবে। ‘করোনার মধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যখন দেশে যখন অর্থনীতির সব ধরনের কর্মকা- বন্ধ, তখন আমাদের দেশে জীবন ও জীবিকা সমানভাবে চলেছে। করোনার পর থেকে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন সরাসরি জাহাজ পরিচালিত হচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জাহাজীকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন নতুন জাহাজ কোম্পানি দেশি এবং বিদেশি সমুদ্রে জাহাজ ব্যবসা শুরু করেছে। বিশ্বের অনেক দেশ যেখানে এখনো করোনা থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। তবে আল্লাহর রহমতে আমাদের সে অবস্থা নেই’—যোগ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমদানি বেড়েছে বলে জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদেরকে পণ্য রপ্তানির জন্য কাচাঁমাল আমদানি করতে হয়। যে কারনে আমদানিও বেড়েছে। অতএব এক্সপোর্ট বাড়লে ইমপোর্ট বাড়বেই। বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার তুলনা চলে না জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শ্রীলঙ্কা ২ বিলিয়ন ডলারের সমস্যায় পড়েছে। আর আমরা মাসে শুধু একটা খাত থেকেই ২ বিলিয়ন ডলার পাই। যে অর্থনীতির দেশে (বাংলাদেশ) বছরে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়, সেখানে কেনো যে মানুষ ভয় পায়, তা আমি বুঝি না। আমরা রপ্তানির অর্থ বাদই দিলাম, বছরে ২২-২৪ বিলিয়ন ডলারতো পাই। এখান থেকে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধে দিতে পারব না? ধরলাম ৪-৫ বিলিয়ন ডলারই ঋণ পরিশোধে যাবে, তাতে কী আসবে যাবে আমাদের। বরং আমরা যদি হুন্ডি ব্যবসায়ীদেরকে ধরে ফেলতে পারি। তাহলে ৫-১০ বিলিয়ন ডলার বেচেঁ যাবে। কারণ এরাই আমদানি-রপ্তানির সময় ওভারভয়েস-আন্ডারভয়েস এলসি খুলে বিদেশে টাকা পাচার করে। শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নে যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আমরা সক্ষম। বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে এই বুঝি শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা হলো শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের ভয় পাওয়ার মতো কোনো কিছু নেই। তবে স্বপ্ন দেখার অনেক কিছুই আছে। বক্তব্যে রাশিয়ার ওপর ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সারাবিশ্বের সাপ্লাইচেইন নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে যেসব দেশে রাশিয়ার পণ্যের সংকট, ওইসব দেশ ভোগান্তিতে পড়বে। বিভিন্ন দেশের ওপর ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ তুলে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বাংলাদেশ যদি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কয়লার ব্যবহার ২ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করতে যায়, দেখবেন এমন একটি দেশ এসে বাধা বা নিষেধাজ্ঞা দেবে, যারা ২০ শতাংশ কয়লা ব্যবহার করে।