ঢাকা ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানোর খবর নাকচ করল ভারত

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানো নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কল্পনাপ্রসূত খবর নাকচ করে দিয়েছে ভারত। কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশন গতকাল বুধবার দৃঢ়ভাবে এমন খবর প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ কথা জানিয়েছে। আগের দিন শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভারতে পালিয়েছেন। এ খবরকে ‘ভুয়া এবং নিতান্তই মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে তা অস্বীকার করেছিল ভারতীয় হাইকমিশন।
গত সোমবার পদত্যাগের পর মাহিন্দা রাজাপক্ষের অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। তিনি সরকারি দপ্তর ও বাসভবন ‘টেম্পল ট্রিজ’ ছেড়ে গেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে।
ভারত গত মঙ্গলবার বলেছে, দ্বীপরাষ্ট্রটির গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে নয়াদিল্লি।
ভারতীয় হাইকমিশন টুইটে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠাচ্ছে ভারত—কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন কল্পনাপ্রসূত খবর দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে হাইকমিশন। এমন খবর ও মতামত ভারত সরকারের অবস্থানের সঙ্গে যায় না।’
আরেকটি টুইটে বলা হয়, ‘শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত। মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দিয়েছেন।’
মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তুলে ধরা শ্রীলঙ্কার জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থের বিষয়টি ভারত সব সময় আমলে নেবে।’
সেনা পাহারায় মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এর আগে হাজারো বিক্ষোভকারী বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এতে সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।
এরপর খবর ছড়িয়ে পড়ে মাহিন্দা রাজাপক্ষে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। রাজধানী কলম্বো থেকে ওই নৌঘাঁটির দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার। সেখানেও জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা।
করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। ঋণের চাপ আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বিক্ষোভের লাগাম টানতে এরপর জারি করা হয় কারফিউ। এরই মধ্যে গত সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে রাজাপক্ষের অনুগতদের কয়েক ডজন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামবানটোটায় রাজাপক্ষের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। সহিংসতা বন্ধে ‘দেখামাত্র গুলির’ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
অচলাবস্থা নিরসনে গত শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাহিন্দা রাজাপক্ষকে পদত্যাগ করতে বলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া সম্পর্কে মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছোট ভাই। এক যুগ আগে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতাকামী তামিল টাইগারদের দমন করে দেশটিতে রাজাপক্ষে পরিবারের আধিপত্য তৈরি করেছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানোর খবর নাকচ করল ভারত

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠানো নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কল্পনাপ্রসূত খবর নাকচ করে দিয়েছে ভারত। কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশন গতকাল বুধবার দৃঢ়ভাবে এমন খবর প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ কথা জানিয়েছে। আগের দিন শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভারতে পালিয়েছেন। এ খবরকে ‘ভুয়া এবং নিতান্তই মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে তা অস্বীকার করেছিল ভারতীয় হাইকমিশন।
গত সোমবার পদত্যাগের পর মাহিন্দা রাজাপক্ষের অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। তিনি সরকারি দপ্তর ও বাসভবন ‘টেম্পল ট্রিজ’ ছেড়ে গেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে।
ভারত গত মঙ্গলবার বলেছে, দ্বীপরাষ্ট্রটির গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে নয়াদিল্লি।
ভারতীয় হাইকমিশন টুইটে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কায় সেনা পাঠাচ্ছে ভারত—কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন কল্পনাপ্রসূত খবর দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে হাইকমিশন। এমন খবর ও মতামত ভারত সরকারের অবস্থানের সঙ্গে যায় না।’
আরেকটি টুইটে বলা হয়, ‘শ্রীলঙ্কার গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত। মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দিয়েছেন।’
মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তুলে ধরা শ্রীলঙ্কার জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থের বিষয়টি ভারত সব সময় আমলে নেবে।’
সেনা পাহারায় মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এর আগে হাজারো বিক্ষোভকারী বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এতে সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।
এরপর খবর ছড়িয়ে পড়ে মাহিন্দা রাজাপক্ষে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। রাজধানী কলম্বো থেকে ওই নৌঘাঁটির দূরত্ব প্রায় ২৭০ কিলোমিটার। সেখানেও জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা।
করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। ঋণের চাপ আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বিক্ষোভের লাগাম টানতে এরপর জারি করা হয় কারফিউ। এরই মধ্যে গত সোমবার দেশজুড়ে বিক্ষোভে রাজাপক্ষের অনুগতদের কয়েক ডজন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামবানটোটায় রাজাপক্ষের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়। সহিংসতা বন্ধে ‘দেখামাত্র গুলির’ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
অচলাবস্থা নিরসনে গত শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাহিন্দা রাজাপক্ষকে পদত্যাগ করতে বলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া সম্পর্কে মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছোট ভাই। এক যুগ আগে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতাকামী তামিল টাইগারদের দমন করে দেশটিতে রাজাপক্ষে পরিবারের আধিপত্য তৈরি করেছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।