ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে নামিবিয়ার চমক

  • আপডেট সময় : ০৩:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : শক্তি, সামর্থ্য, ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা; সব দিক থেকেই নামিবিয়া থেকে বেশ এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। পাশাপাশি এশিয়া কাপ জয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল তাদের সঙ্গী। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে দেখা গেল উল্টো চিত্র। শুরুতে চাপে পড়েও ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিটের জুটিতে লড়ার মতো সংগ্রহ গড়ল নামিবিয়া। পরে অসাধারণ বোলিংয়ে লঙ্কানদের একশ পার হতেই গুঁড়িয়ে দিয়ে চমক দেখাল আফ্রিকার দলটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর শুরু হলো বড় অঘটন দিয়ে। প্রাথমিক পর্বের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের ৫৫ রানে হারাল নামিবিয়া। ১৬৩ রানের পুঁজি নিয়ে লঙ্কানদের তারা থামিয়ে দিল ১০৮ রানে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আসর ছিল নামিবিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেবার নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল তারা। এবার অস্ট্রেলিয়া আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা হারাল ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে। দ্বিতীয় দেখায়ই লঙ্কানদের হারানোর পথে ব্যাটে-বলে সবচেয়ে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ফ্রাইলিঙ্ক। ৪ চারে ২৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের পর ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন তিনি। স্মিটের অবদানও কম নয়। ফ্রাইলিঙ্কের সঙ্গে ৩৩ বল স্থায়ী ৬৯ রানের বিস্ফোরক জুটিতে দুটি করে ছক্কা-চারে ১৬ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। পরে একটি উইকেটও নেন তিনি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জোড়া শিকার ধরে বল হাতে নামিবিয়ার জয়ের ভিত গড়ে দেন বেন শিকোঙ্গো। দুর্দান্ত বোলিং করেন ডেভিড ভিসা (২/১৬) ও বেনার্ড শুলজও (২/১৮)। ভিক্টোরিয়ার জিলংয়ে হালকা ঘাসের ড্রপ ইন পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য ভালোই ছিল। কিন্তু নামিবিয়া শুরুটা করতে পারেনি আশানুরূপ। নিয়মিত বিরতিতে হারায় উইকেট। গত জুনের পর খেলতে নামা দুশমন্থ চামিরা নিজের দ্বিতীয় বলেই ধরেন মাইকেল ফন লিনগেনের উইকেট। দিলশান মাদুশাঙ্কার চোটে একাদশে আসা প্রমোদ মাদুশান ফেরান ডিভান লা কুককে। ১৬ রানে ২ উইকেট হারানো নামিবিয়ার হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালান ইয়ান নিকোল লফটি-ইটন। চামিরাকে ফাইন লেগ দিয়ে ওড়ানোর পর তিনি টানা চার-ছক্কা মারেন চামিকা করুনারতেœকে। এক বল পরই লফটি-ইটনকে (২০) ফিরিয়ে শোধ তোলেন করুনারতেœ। তার স্লোয়ার অফ কাটারে উইকেটের পেছনে এক হাত দুর্দান্ত ক্যাচ নেন কুসল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লে শেষে নামিবিয়ার স্কোরকার্ডে রান ৩ উইকেটে ৪৩। লঙ্কানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও দারুণ ফিল্ডিংয়ে পরের ৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্রেফ ১৬ রান করে নামিবিয়া। গেরহার্ড এরাসমাসকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া ৪১ রানের জুটি ভাঙেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। এরপর টানা দুই ওভারে আরেক থিতু ব্যাটসম্যান স্টিভেন বার্ড ও ভিসাকে হারায় নামিবিয়া। বার্ড (২ চারে ২৬) বিদায় নেন ডিপ স্কয়ার লেগে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দারুণ রানিং ক্যাচে। কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়েও গোল্ডেন ডাক থেকে বাঁচতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার ভিসা।
ফ্রাইলিঙ্ক ও স্মিটের চমৎকার জুটির পথচলা শুরু এরপর। তাদের জুটিতে প্রতি ওভারেই আসে বাউন্ডারি। শুধু বাউন্ডারিই নয়, দৌড়ে ডাবল-ট্রিপল নিয়েও রানের গতিতে দম দেন তারা। যার সুবাদে শেষ পাঁচ ওভারে ৬৮ রান তোলে নামিবিয়া। রান তাড়ায় প্রথম বলেই চার মেরে ভালো কিছুর আভাস দেন পাথুম নিসানকা। কিন্তু পরের ওভার থেকে শ্রীলঙ্কার দুঃস্বপ্নের শুরু। ভিসাকে পুল করে আকাশে তুলে দিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন মেন্ডিস। এক ওভার পর জোড়া শিকার ধরে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান শিকোঙ্গো। মিড অনে ধরা পড়েন নিসানকা (১ চারে ৯)। দারুণ এক ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হয়ে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান দানুশকা গুনাথিলাকা। ২১ রান ৩ উইকেট হারানো দলকে টানতে পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। কিছুক্ষণ টিকে থেকে বিদায় নেন ভানুকা রাজাপাকসে (২ চারে ২০)। পরে টানা চার ওভারে চার ব্যাটসম্যানকে হারায় শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১ ছক্কা ও ২ চারে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তাদের ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল তিনজন। ১৮তম ওভারের শেষ বলে চামিরাকে বিদায় করে জয় নিশ্চিত করেন ভিসা। বাঁধনহারা উল্লাসে মাতে নামিবিয়া। রাজ্যের হতাশা ফুটে ওঠে লঙ্কান ক্রিকেটারদের চোখে-মুখে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে নামিবিয়ার চমক

আপডেট সময় : ০৩:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : শক্তি, সামর্থ্য, ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা; সব দিক থেকেই নামিবিয়া থেকে বেশ এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। পাশাপাশি এশিয়া কাপ জয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল তাদের সঙ্গী। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে দেখা গেল উল্টো চিত্র। শুরুতে চাপে পড়েও ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিটের জুটিতে লড়ার মতো সংগ্রহ গড়ল নামিবিয়া। পরে অসাধারণ বোলিংয়ে লঙ্কানদের একশ পার হতেই গুঁড়িয়ে দিয়ে চমক দেখাল আফ্রিকার দলটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর শুরু হলো বড় অঘটন দিয়ে। প্রাথমিক পর্বের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের ৫৫ রানে হারাল নামিবিয়া। ১৬৩ রানের পুঁজি নিয়ে লঙ্কানদের তারা থামিয়ে দিল ১০৮ রানে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আসর ছিল নামিবিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেবার নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল তারা। এবার অস্ট্রেলিয়া আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা হারাল ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে। দ্বিতীয় দেখায়ই লঙ্কানদের হারানোর পথে ব্যাটে-বলে সবচেয়ে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ফ্রাইলিঙ্ক। ৪ চারে ২৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের পর ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন তিনি। স্মিটের অবদানও কম নয়। ফ্রাইলিঙ্কের সঙ্গে ৩৩ বল স্থায়ী ৬৯ রানের বিস্ফোরক জুটিতে দুটি করে ছক্কা-চারে ১৬ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। পরে একটি উইকেটও নেন তিনি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জোড়া শিকার ধরে বল হাতে নামিবিয়ার জয়ের ভিত গড়ে দেন বেন শিকোঙ্গো। দুর্দান্ত বোলিং করেন ডেভিড ভিসা (২/১৬) ও বেনার্ড শুলজও (২/১৮)। ভিক্টোরিয়ার জিলংয়ে হালকা ঘাসের ড্রপ ইন পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য ভালোই ছিল। কিন্তু নামিবিয়া শুরুটা করতে পারেনি আশানুরূপ। নিয়মিত বিরতিতে হারায় উইকেট। গত জুনের পর খেলতে নামা দুশমন্থ চামিরা নিজের দ্বিতীয় বলেই ধরেন মাইকেল ফন লিনগেনের উইকেট। দিলশান মাদুশাঙ্কার চোটে একাদশে আসা প্রমোদ মাদুশান ফেরান ডিভান লা কুককে। ১৬ রানে ২ উইকেট হারানো নামিবিয়ার হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালান ইয়ান নিকোল লফটি-ইটন। চামিরাকে ফাইন লেগ দিয়ে ওড়ানোর পর তিনি টানা চার-ছক্কা মারেন চামিকা করুনারতেœকে। এক বল পরই লফটি-ইটনকে (২০) ফিরিয়ে শোধ তোলেন করুনারতেœ। তার স্লোয়ার অফ কাটারে উইকেটের পেছনে এক হাত দুর্দান্ত ক্যাচ নেন কুসল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লে শেষে নামিবিয়ার স্কোরকার্ডে রান ৩ উইকেটে ৪৩। লঙ্কানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও দারুণ ফিল্ডিংয়ে পরের ৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্রেফ ১৬ রান করে নামিবিয়া। গেরহার্ড এরাসমাসকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া ৪১ রানের জুটি ভাঙেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। এরপর টানা দুই ওভারে আরেক থিতু ব্যাটসম্যান স্টিভেন বার্ড ও ভিসাকে হারায় নামিবিয়া। বার্ড (২ চারে ২৬) বিদায় নেন ডিপ স্কয়ার লেগে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দারুণ রানিং ক্যাচে। কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়েও গোল্ডেন ডাক থেকে বাঁচতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার ভিসা।
ফ্রাইলিঙ্ক ও স্মিটের চমৎকার জুটির পথচলা শুরু এরপর। তাদের জুটিতে প্রতি ওভারেই আসে বাউন্ডারি। শুধু বাউন্ডারিই নয়, দৌড়ে ডাবল-ট্রিপল নিয়েও রানের গতিতে দম দেন তারা। যার সুবাদে শেষ পাঁচ ওভারে ৬৮ রান তোলে নামিবিয়া। রান তাড়ায় প্রথম বলেই চার মেরে ভালো কিছুর আভাস দেন পাথুম নিসানকা। কিন্তু পরের ওভার থেকে শ্রীলঙ্কার দুঃস্বপ্নের শুরু। ভিসাকে পুল করে আকাশে তুলে দিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন মেন্ডিস। এক ওভার পর জোড়া শিকার ধরে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান শিকোঙ্গো। মিড অনে ধরা পড়েন নিসানকা (১ চারে ৯)। দারুণ এক ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হয়ে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান দানুশকা গুনাথিলাকা। ২১ রান ৩ উইকেট হারানো দলকে টানতে পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। কিছুক্ষণ টিকে থেকে বিদায় নেন ভানুকা রাজাপাকসে (২ চারে ২০)। পরে টানা চার ওভারে চার ব্যাটসম্যানকে হারায় শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১ ছক্কা ও ২ চারে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তাদের ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল তিনজন। ১৮তম ওভারের শেষ বলে চামিরাকে বিদায় করে জয় নিশ্চিত করেন ভিসা। বাঁধনহারা উল্লাসে মাতে নামিবিয়া। রাজ্যের হতাশা ফুটে ওঠে লঙ্কান ক্রিকেটারদের চোখে-মুখে।