নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ভালো, মন্দ সব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলো। এর আগে শিল্প গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে এমন গুঞ্জনে রোববার (১৩ এপ্রিল) শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়। শেয়ারবাজারের লেনদেন শেষ হওয়ার পর শিল্প ও ক্যাপটিভের নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিএসইসি)। এরপর গতকাল মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই দরপতনের তালিকায় নাম লেখায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট।
লেনদেনের শেষদিকে শেয়ারবাজারে দরপতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এক প্রকার ঢালাও দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। এতে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৫টির। আর ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৩২টির দাম কমেছে। আর ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৭টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সার্বিকভাবে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
তবে মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।
আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২১ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, উত্তরা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ন্যাশনাল টিউবস, রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড এবং ইস্টার্ন ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ২ লাখ টাকা।

























