ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

শেষ হলো ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ রূপালী ইলিশ ধরতে নামবেন জেলেরা

  • আপডেট সময় : ০২:৩৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে শেষ হলো সাগরে মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ইতোমধ্যে ট্রলার ধোয়া-মোছাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন জেলেরা। রাত বারোটার সঙ্গে সঙ্গেই ইলিশ শিকারে গভীর সাগরে যাত্রা করে শতশত মাছ ধরা ট্রলার। তবে এই ৬৫ দিনকে ঘিরে একদিকে যেমন ছিল জেলেদের ক্ষোভ ও সংকট অন্যদিকে মৎস্য গবেষকদের ছিল নানা প্রশ্ন। সামুদ্রিক মাছের বাধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ। অবরোধ চলাকালীন সময়ে ভারতীয় ও দেশীয় প্রভাবশালী ছেলেদের মাছ শিকার অব্যাহত থাকার অভিযোগ এনে মৎস্য গবেষকরা বলছেন, আইনের অপব্যবহারের কারণে প্রজনন ও সংরক্ষণে অনেকটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছর জুড়ে তেমন ইলিশ ধরা না পড়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার জেলেরা। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার পরে সমুদ্রে গিয়ে ইলিশের দেখা পাওয়া নিয়ে শঙ্কায়ও রয়েছেন উপকূলের প্রায় ৩০ হাজার জেলে।
আর মৎস্য আড়তদার ও ট্রলার মালিকরা বলছেন, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে সেই আশায় লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে ট্রলার মেরামত ও সরঞ্জামাদি নিয়ে সমুদ্রে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছি, রুপালি ইলিশের দেখা পেলেই সম্ভব হবে পেছনের ঋণ পরিশোধ করা। এমবি রায়হান ট্রলারের মাঝি শহিদুল ইসলাম জানান, ৬৫ দিনের অবরোধে বাড়িতে বসেছিলাম। নতুন জাল বানিয়েছি, ট্রলার মেরামত করেছি। সরকার যে চাল দিয়েছে তা দিয়ে কি আর সংসার চলে? ২০ হাজার টাকা সুদে এনে খাইছি। এখন যদি অবরোধের পরে মাছ না হয়, তাহলে এগুলো পরিশোধ করবো কি দিয়া? আদিল ট্রলারের মালিক রহিম খান জানান, জেলেরা ৬৫ দিনের অবরোধে মাছ শিকারে নামেনি। কিন্তু দেশের বিভিন্নস্থানের প্রভাবশালী জেলে ও ভারতীয় জেলেরা মাছ শিকার করে নিচ্ছে তাহলে আমরা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবো?
আলীপুর মৎস্য বন্দরের সাত ফিসের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে শত-শত মানুষ এই পেশায় নিয়োজিত। সকলের মধ্যে একটি আমেজ বিরাজ করছে রুপালি ইলিশের আশায়। আজকে রাত থেকে জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমাবে। আমরা আশাবাদী যে রুপালি ইলিশের দেখা মিলবে। সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, মূলত সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য এই ৬৫ দিনের অবরোধ। তবে, এর মধ্যে জেলেরা নির্দ্বিধায় সমুদ্রে মাছ শিকার করেছে তাতে একদিকে সরকারের বরাদ্দও পেল এবং সামুদ্রিক মাছও সংরক্ষণ হলো না। এভাবে চলতে থাকলে সমুদ্র থেকে মাছ হারিয়ে যেতে থাকবে। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, ৬৫ দিনের অবরোধে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেকে ৮৫ কেজি করে চাল দিয়েছে সরকার। শীঘ্রই আরো কিছু জেলে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। আজ ২৪ জুলাই জেলেরা সমুদ্রে গেলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ইলিশের উৎপাদন আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবরোধে প্রশাসন তৎপর ছিল, এরমধ্যেও অনেক অসাধু জেলেরা মাছ ধরার চেষ্টা করেছে। যে কারণে আমরা ৬ লাখ টাকা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও অনেককে আইনের আওতায় এনেছি।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

শেষ হলো ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ রূপালী ইলিশ ধরতে নামবেন জেলেরা

আপডেট সময় : ০২:৩৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে শেষ হলো সাগরে মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ইতোমধ্যে ট্রলার ধোয়া-মোছাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন জেলেরা। রাত বারোটার সঙ্গে সঙ্গেই ইলিশ শিকারে গভীর সাগরে যাত্রা করে শতশত মাছ ধরা ট্রলার। তবে এই ৬৫ দিনকে ঘিরে একদিকে যেমন ছিল জেলেদের ক্ষোভ ও সংকট অন্যদিকে মৎস্য গবেষকদের ছিল নানা প্রশ্ন। সামুদ্রিক মাছের বাধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ। অবরোধ চলাকালীন সময়ে ভারতীয় ও দেশীয় প্রভাবশালী ছেলেদের মাছ শিকার অব্যাহত থাকার অভিযোগ এনে মৎস্য গবেষকরা বলছেন, আইনের অপব্যবহারের কারণে প্রজনন ও সংরক্ষণে অনেকটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছর জুড়ে তেমন ইলিশ ধরা না পড়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার জেলেরা। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার পরে সমুদ্রে গিয়ে ইলিশের দেখা পাওয়া নিয়ে শঙ্কায়ও রয়েছেন উপকূলের প্রায় ৩০ হাজার জেলে।
আর মৎস্য আড়তদার ও ট্রলার মালিকরা বলছেন, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে সেই আশায় লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে ট্রলার মেরামত ও সরঞ্জামাদি নিয়ে সমুদ্রে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছি, রুপালি ইলিশের দেখা পেলেই সম্ভব হবে পেছনের ঋণ পরিশোধ করা। এমবি রায়হান ট্রলারের মাঝি শহিদুল ইসলাম জানান, ৬৫ দিনের অবরোধে বাড়িতে বসেছিলাম। নতুন জাল বানিয়েছি, ট্রলার মেরামত করেছি। সরকার যে চাল দিয়েছে তা দিয়ে কি আর সংসার চলে? ২০ হাজার টাকা সুদে এনে খাইছি। এখন যদি অবরোধের পরে মাছ না হয়, তাহলে এগুলো পরিশোধ করবো কি দিয়া? আদিল ট্রলারের মালিক রহিম খান জানান, জেলেরা ৬৫ দিনের অবরোধে মাছ শিকারে নামেনি। কিন্তু দেশের বিভিন্নস্থানের প্রভাবশালী জেলে ও ভারতীয় জেলেরা মাছ শিকার করে নিচ্ছে তাহলে আমরা কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবো?
আলীপুর মৎস্য বন্দরের সাত ফিসের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে শত-শত মানুষ এই পেশায় নিয়োজিত। সকলের মধ্যে একটি আমেজ বিরাজ করছে রুপালি ইলিশের আশায়। আজকে রাত থেকে জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমাবে। আমরা আশাবাদী যে রুপালি ইলিশের দেখা মিলবে। সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, মূলত সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য এই ৬৫ দিনের অবরোধ। তবে, এর মধ্যে জেলেরা নির্দ্বিধায় সমুদ্রে মাছ শিকার করেছে তাতে একদিকে সরকারের বরাদ্দও পেল এবং সামুদ্রিক মাছও সংরক্ষণ হলো না। এভাবে চলতে থাকলে সমুদ্র থেকে মাছ হারিয়ে যেতে থাকবে। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, ৬৫ দিনের অবরোধে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলেকে ৮৫ কেজি করে চাল দিয়েছে সরকার। শীঘ্রই আরো কিছু জেলে নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে। আজ ২৪ জুলাই জেলেরা সমুদ্রে গেলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ইলিশের উৎপাদন আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবরোধে প্রশাসন তৎপর ছিল, এরমধ্যেও অনেক অসাধু জেলেরা মাছ ধরার চেষ্টা করেছে। যে কারণে আমরা ৬ লাখ টাকা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও অনেককে আইনের আওতায় এনেছি।