ক্রীড়া ডেস্ক: শক্তিমত্তায় বেশ এগিয়ে থাকা হংকংয়ের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরও শেষ মুহূর্তে হতাশার হার দেখেছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ সময় ৩-১ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ৮৪ ও যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে সমতায় ফেরে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। কিন্তু রেফারির শেষ বাঁশি বাজানোর আগমুহূর্তে হামজা-সামিত-মোরসালিনদের হতাশার সাগরে ডুবিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হংকংয়ের রাফায়েল মার্কিস। ফলে বাংলাদেশ হারল ৪-৩ ব্যবধানে।
ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তেই সব নাটকীয়তা। ইনজুরি সময়ে সামিতের গোলে বাংলাদেশ ৩-৩ সমতা আনে। এক পয়েন্ট নিশ্চিতের আনন্দে স্টেডিয়ামের পুরো গ্যালারি মেতে উঠে। সেই আনন্দ এক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। হংকংয়ের রাফায়েল মার্কিসের গোলে স্তব্ধ হয়ে যায় জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ৪-৩ গোলে হংকং এগিয়ে যাওয়ার পরমুহূর্তেই কুয়েতি রেফারি সওদ আলসামহান ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজান।
হামজা-জামালরা কেউ বসে পড়লেন, আবার কেউ জার্সি টেনে মুখের কাছে নিলেন। হোম ম্যাচে একবার লিড নিয়ে আবার সমতা আনার পরও শেষ পর্যন্ত হারই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের। এই হারে বাংলাদেশের ৪৫ বছর পর আবার এশিয়া কাপ খেলা অনেকটাই ধূলিসাৎ। তিন ম্যাচ শেষে হংকং সাত পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে। সমান ম্যাচে সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট পাঁচ আর ভারতের দুই। বাংলাদেশ এক পয়েন্টে টেবিলের তলানিতে। বাকি তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্টের ব্যবধান ঘুচানো অনেকটা অসম্ভবই।
হামজা চৌধুরির গোলে বাংলাদেশ ১৩ মিনিটে ম্যাচে লিড নেয়। দুর্দান্ত ফ্রি কিকে তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন। বাংলাদেশ প্রথমার্ধে লিড নিয়েই ড্রেসিংরুমে ফেরার অপেক্ষায় ছিল। ইনজুরি সময়ে খেলায় সমতা আনে সফরকারী হংকং। কর্নার থেকে বক্সের মধ্যে জটলায় হংকং খেলায় ফেরে। দ্বিতীয়ার্ধের পাচ মিনিটেই তারা লিড নেয়।
হংকংয়ের তৃতীয় গোলটি বাংলাদেশের ডিফেন্সের ভুলেই। সাদ উদ্দিনের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল ঠেলেন হংকং ফরোয়ার্ড। বাংলাদেশের ডিফেন্ডার ধরার আগেই বল জালে পাঠান রাফায়েল। ৩-১ স্কোরলাইন হওয়ার পর যেন বাংলাদেশ জেগে উঠে। দ্বিতীয়ার্ধে সামিত, জামাল, জায়ান ও ফাহমিদুল নামার পরই ভিন্ন এক বাংলাদেশ। বিশেষ করে জায়ান আহমেদ বাঁ প্রান্তে বেশ গতির সঞ্চার করেন। ৮৪ মিনিটে শেখ মোরসালিন গোল করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান। বল ক্লিয়ার করতে এসেও পারেননি হংকং গোলরক্ষক। মোরসালিন ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে গোল করেন।
চতুর্থ রেফারি ৯ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। ইনজুরি সময়ের ৯ মিনিটে মোরসালিনের কর্নারে আরেকটি গোলের উৎস বাংলাদেশের। মোরসালিনের বাঁ প্রান্ত থেকে কর্নারে কানাডা প্রবাসী সামিত সোম হেডে বল জালে জড়ান। এতে বাংলাদেশের গ্যালারি গর্জে ওঠে। সেটা এক মিনিট পরই ডিফেন্সের আরেক ভুলে বিষাদে পরিণত হয়।
বাংলাদেশের জার্সিতে আজ হামজা দ্বিতীয় গোল করেন। ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হামজা জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে হেডে গোল করেছিলেন। এবার হংকংয়ের বিপক্ষে ফ্রি-কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই গোল পেয়ে গেলেন সামিত। তার গোলটি সমতাসূচক হলেও ডিফেন্সের ভুলে বাংলাদেশের সমর্থকদের সঙ্গী কান্না আর হতাশা।
এসি/আপ্র/০৯/১০/২০২৫