ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

শেষ ওভারে নাটকীয় হার, দায় কাঁধে নিলেন ধোনি

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: আইপিএলের মঞ্চে দেখা গেল আরেকটি রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২১৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে থেকেও ম্যাচ হেরে বসে চেন্নাই সুপার কিংস। তবে এ হারের দায় সতীর্থদের ঘাড়ে চাপাননি মাহেন্দ্র সিং ধোনি। বরং নিজেকেই দুষলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই অধিনায়ক।
শনিবার বেঙ্গালুরুর মাঠে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। শুরুতেই দলকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন বিরাট কোহলি ও জ্যাকব বেথেল।

তবে ইনিংসের সবচেয়ে বড় চমকটি দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ড। মাত্র ১৪ বলে ৫৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ দুই ওভারে বেঙ্গালুরু তোলে ৫৪ রান, যেখানে একাই শেফার্ড করেন ৫২! ১৯তম ওভারে খালিল আহমেদের বলে তিনটি ছক্কা, দুটি চার ও একটি নো বলের ছক্কাসহ ওঠে ৩৩ রান। শেষ ওভারে মাথিশা পাথিরানার বিরুদ্ধে আসে আরও ২১ রান। ইনিংস শেষে বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০ ওভারে ২১৩ রান।

এই বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দারুণ সূচনা করেন চেন্নাইয়ের তরুণ ব্যাটার আয়ুশ। মাত্র ৪৮ বলে ৯৪ রানের ঝলকানো ইনিংস খেলেন তিনি। তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে রাভিন্দ্র জাদেজার ৪৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে গড়ে উঠে ১১৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। এ জুটিই চেন্নাইকে ম্যাচে ধরে রাখে। তবে ১৭তম ওভারে লুঙ্গি এনগিডির দারুণ বোলিংয়ে টানা দুই বলে ফিরেন আয়ুশ ও ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এরপর মাঠে নামেন মাহি, চেন্নাইয়ের শেষ ভরসা। ধোনি ১৯তম ওভারে এক চমৎকার ছক্কা হাঁকালেও বাকি বলগুলোয় সুবিধা করতে পারেননি। ইনিংসে ৮ বলে করেন মাত্র ১২ রান। ব্যাটে থাকা অবস্থায় চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ২১ বলে ৪২ রান। তখনও ম্যাচ হাতের নাগালেই ছিল।
শেষ ওভারে যখন দরকার পড়ে ১৫ রানের, তখন প্রথম দুই বলে ধোনি ও জাদেজা নিতে পারেন কেবল দুটি সিঙ্গেল। তৃতীয় বলেই ধোনি এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন। চতুর্থ বলে ইয়াশ দায়ালের করা নো বল ছক্কায় উড়িয়ে দেন শিভাম দুবে। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল তিন বলে ছয় রান।

এর একটি আবার ফ্রি হিট! কিন্তু পরবর্তী তিন বলে মাত্র তিন রানই তুলতে সক্ষম হয় চেন্নাই। শেষ পর্যন্ত হতাশাজনকভাবে ২ রানে ম্যাচ হারতে হয় তাদের।
ম্যাচ শেষে ধোনি স্পষ্ট করেই বলেন, “আমি যখন ব্যাট করতে নামি, তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। আরও দুইটি বল কাজে লাগাতে পারলে চাপ কমে যেত। সেটাই করতে পারিনি। তাই নিজের ওপরই দোষ নিচ্ছি।” ধোনির এমন বক্তব্যে ফুটে ওঠে একজন প্রকৃত নেতৃত্বগুণসম্পন্ন খেলোয়াড়ের আত্মসমালোচনার মনোভাব। চেন্নাইয়ের হারের পেছনে আরেকটি বড় কারণ ছিল বোলারদের ব্যর্থতা। শেষ দুই ওভারে ৫৪ রান হজম করা যেকোনো দলের জন্য দুঃস্বপ্ন।

ধোনি বোলারদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের আরও ইয়র্কার অনুশীলন করতে হবে। সঠিকভাবে ইয়র্কার না ফেললে লো ফুল টসই সবচেয়ে ভালো বিকল্প, কারণ এটা খেলাই সবচেয়ে কঠিন। পাথিরানার মতো গতি সম্পন্ন বোলারদের বাউন্সারেও জোর দিতে হবে, যাতে ব্যাটারদের ভাবনায় ফেলা যায়।” এই পরাজয়ে আইপিএল ২০২৫ আসরে কার্যত বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে চেন্নাইয়ের। প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে অনেকটাই ছিটকে পড়েছে তারা। মাত্র তিনটি ম্যাচ বাকি থাকলেও পয়েন্ট তালিকায় নীচের দিকেই রয়ে গেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। এবারের আসরে দলগতভাবে ধারাবাহিকতা রাখতে না পারায় আগেভাগেই সমাপ্তি টানতে হচ্ছে তাদের অভিযানে। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিনিশিং—সব জায়গাতেই ধস দেখা গেছে একাধিক ম্যাচে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শেষ ওভারে নাটকীয় হার, দায় কাঁধে নিলেন ধোনি

আপডেট সময় : ০৫:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: আইপিএলের মঞ্চে দেখা গেল আরেকটি রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২১৩ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে থেকেও ম্যাচ হেরে বসে চেন্নাই সুপার কিংস। তবে এ হারের দায় সতীর্থদের ঘাড়ে চাপাননি মাহেন্দ্র সিং ধোনি। বরং নিজেকেই দুষলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই অধিনায়ক।
শনিবার বেঙ্গালুরুর মাঠে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। শুরুতেই দলকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন বিরাট কোহলি ও জ্যাকব বেথেল।

তবে ইনিংসের সবচেয়ে বড় চমকটি দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ড। মাত্র ১৪ বলে ৫৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ দুই ওভারে বেঙ্গালুরু তোলে ৫৪ রান, যেখানে একাই শেফার্ড করেন ৫২! ১৯তম ওভারে খালিল আহমেদের বলে তিনটি ছক্কা, দুটি চার ও একটি নো বলের ছক্কাসহ ওঠে ৩৩ রান। শেষ ওভারে মাথিশা পাথিরানার বিরুদ্ধে আসে আরও ২১ রান। ইনিংস শেষে বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০ ওভারে ২১৩ রান।

এই বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দারুণ সূচনা করেন চেন্নাইয়ের তরুণ ব্যাটার আয়ুশ। মাত্র ৪৮ বলে ৯৪ রানের ঝলকানো ইনিংস খেলেন তিনি। তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে রাভিন্দ্র জাদেজার ৪৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে গড়ে উঠে ১১৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। এ জুটিই চেন্নাইকে ম্যাচে ধরে রাখে। তবে ১৭তম ওভারে লুঙ্গি এনগিডির দারুণ বোলিংয়ে টানা দুই বলে ফিরেন আয়ুশ ও ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এরপর মাঠে নামেন মাহি, চেন্নাইয়ের শেষ ভরসা। ধোনি ১৯তম ওভারে এক চমৎকার ছক্কা হাঁকালেও বাকি বলগুলোয় সুবিধা করতে পারেননি। ইনিংসে ৮ বলে করেন মাত্র ১২ রান। ব্যাটে থাকা অবস্থায় চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ২১ বলে ৪২ রান। তখনও ম্যাচ হাতের নাগালেই ছিল।
শেষ ওভারে যখন দরকার পড়ে ১৫ রানের, তখন প্রথম দুই বলে ধোনি ও জাদেজা নিতে পারেন কেবল দুটি সিঙ্গেল। তৃতীয় বলেই ধোনি এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন। চতুর্থ বলে ইয়াশ দায়ালের করা নো বল ছক্কায় উড়িয়ে দেন শিভাম দুবে। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল তিন বলে ছয় রান।

এর একটি আবার ফ্রি হিট! কিন্তু পরবর্তী তিন বলে মাত্র তিন রানই তুলতে সক্ষম হয় চেন্নাই। শেষ পর্যন্ত হতাশাজনকভাবে ২ রানে ম্যাচ হারতে হয় তাদের।
ম্যাচ শেষে ধোনি স্পষ্ট করেই বলেন, “আমি যখন ব্যাট করতে নামি, তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। আরও দুইটি বল কাজে লাগাতে পারলে চাপ কমে যেত। সেটাই করতে পারিনি। তাই নিজের ওপরই দোষ নিচ্ছি।” ধোনির এমন বক্তব্যে ফুটে ওঠে একজন প্রকৃত নেতৃত্বগুণসম্পন্ন খেলোয়াড়ের আত্মসমালোচনার মনোভাব। চেন্নাইয়ের হারের পেছনে আরেকটি বড় কারণ ছিল বোলারদের ব্যর্থতা। শেষ দুই ওভারে ৫৪ রান হজম করা যেকোনো দলের জন্য দুঃস্বপ্ন।

ধোনি বোলারদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের আরও ইয়র্কার অনুশীলন করতে হবে। সঠিকভাবে ইয়র্কার না ফেললে লো ফুল টসই সবচেয়ে ভালো বিকল্প, কারণ এটা খেলাই সবচেয়ে কঠিন। পাথিরানার মতো গতি সম্পন্ন বোলারদের বাউন্সারেও জোর দিতে হবে, যাতে ব্যাটারদের ভাবনায় ফেলা যায়।” এই পরাজয়ে আইপিএল ২০২৫ আসরে কার্যত বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে চেন্নাইয়ের। প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে অনেকটাই ছিটকে পড়েছে তারা। মাত্র তিনটি ম্যাচ বাকি থাকলেও পয়েন্ট তালিকায় নীচের দিকেই রয়ে গেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। এবারের আসরে দলগতভাবে ধারাবাহিকতা রাখতে না পারায় আগেভাগেই সমাপ্তি টানতে হচ্ছে তাদের অভিযানে। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিনিশিং—সব জায়গাতেই ধস দেখা গেছে একাধিক ম্যাচে।