ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। টানা পাঁচ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) চেয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ আবেদন জানান তিনি। একই সঙ্গে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তির বিষয় আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১৪০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন মানুষকে হত্যার জন্য যদি একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ১৪০০ মানুষকে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১৪০০ বার ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু আইনে এটা সম্ভব নয়। এজন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমরা তার চরম দণ্ড দেওয়ার জন্য আবেদন করছি।

যদি তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয় তাহলে ন্যায়বিচার পাবে দেশের জনগণ।’

পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অপরাধ সংঘটনের পর পালিয়ে গেলেও ভারত থেকে ক্রমাগত আন্দোলনকারীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যারা বিচার চেয়ে মামলা করেছেন তাদেরও নির্মূলের কথা বলেছেন। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।

এতে বোঝা যাচ্ছে যে এত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরও তার মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। তিনি একজন হার্ডনট ক্রিমিনালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সুতরাং এই ট্রাইব্যুনালের মামলায় তিনি যেহেতু সব অপরাধীদের প্রাণভোমরা ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড দেওয়া শ্রেয়। তাকে যদি চরম দণ্ড না দেওয়া হয় এটা অবিচার করা হবে।’
আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্যাং অব ফোরের সদস্য ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তার বাসায় বসে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ড্রোন ওড়ানোসহ হেলিকপ্টার থেকে মারণাস্ত্র ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নিজে গ্রাউন্ডে গিয়ে গিয়ে দেখেছেন সঠিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে কি না। তাকে ভিডিও দেখানো হয়েছে। তিনি কমান্ড স্ট্রাকচারে দ্বিতীয় পজিশনে ছিলেন। এ কারণে তার ব্যাপারেও চরম দণ্ড চেয়েছি ট্রাইব্যুনালে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন যেহেতু আইন অনুযায়ী আদালতকে তথ্য দিয়ে বা সত্য উদঘাটনের সাহায্য করেছেন তার ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ছাড়া যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তারা হয়তো পরিবারের আলোর প্রদীপ ছিলেন। ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্ব নিতেন তারা। সুতরাং এসব পরিবারের ক্ষতিপূরণের জন্য আসামিদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলে আদালতের কাছে আমরা আদেশ চেয়েছি।’

ওআ/আপ্র/১৬/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

আপডেট সময় : ০৫:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। টানা পাঁচ দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) চেয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ আবেদন জানান তিনি। একই সঙ্গে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তির বিষয় আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১৪০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন মানুষকে হত্যার জন্য যদি একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ১৪০০ মানুষকে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১৪০০ বার ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু আইনে এটা সম্ভব নয়। এজন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমরা তার চরম দণ্ড দেওয়ার জন্য আবেদন করছি।

যদি তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয় তাহলে ন্যায়বিচার পাবে দেশের জনগণ।’

পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অপরাধ সংঘটনের পর পালিয়ে গেলেও ভারত থেকে ক্রমাগত আন্দোলনকারীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যারা বিচার চেয়ে মামলা করেছেন তাদেরও নির্মূলের কথা বলেছেন। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।

এতে বোঝা যাচ্ছে যে এত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরও তার মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। তিনি একজন হার্ডনট ক্রিমিনালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সুতরাং এই ট্রাইব্যুনালের মামলায় তিনি যেহেতু সব অপরাধীদের প্রাণভোমরা ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড দেওয়া শ্রেয়। তাকে যদি চরম দণ্ড না দেওয়া হয় এটা অবিচার করা হবে।’
আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্যাং অব ফোরের সদস্য ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তার বাসায় বসে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ড্রোন ওড়ানোসহ হেলিকপ্টার থেকে মারণাস্ত্র ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নিজে গ্রাউন্ডে গিয়ে গিয়ে দেখেছেন সঠিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে কি না। তাকে ভিডিও দেখানো হয়েছে। তিনি কমান্ড স্ট্রাকচারে দ্বিতীয় পজিশনে ছিলেন। এ কারণে তার ব্যাপারেও চরম দণ্ড চেয়েছি ট্রাইব্যুনালে। তবে রাজসাক্ষী হয়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন যেহেতু আইন অনুযায়ী আদালতকে তথ্য দিয়ে বা সত্য উদঘাটনের সাহায্য করেছেন তার ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ছাড়া যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তারা হয়তো পরিবারের আলোর প্রদীপ ছিলেন। ভবিষ্যতে পরিবারের দায়িত্ব নিতেন তারা। সুতরাং এসব পরিবারের ক্ষতিপূরণের জন্য আসামিদের সম্পদ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলে আদালতের কাছে আমরা আদেশ চেয়েছি।’

ওআ/আপ্র/১৬/১০/২০২৫