নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যতদিন দেশ থাকবে, এদেশ কখনো পথ হারাবে না। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ হবে।’
গতকাল শনিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত ”উবাবষড়ঢ়সবহঃ ঞযড়ঁমযঃং ড়ভ ইধহমধনড়হফযঁ : ঞড়ফধু’ং জবধষরঃু ড়ভ ইধহমষধফবংয” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, আর্থ-সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। এ কারণে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাঙালির ভাগ্য পরিবর্তন ও দেশের উন্নয়নে কোনো অপশক্তিই তাকে দমাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যেমন একসূত্রে গাঁথা তেমনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শেখ হাসিনা এখন সমার্থক।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালি নয়, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-শোষিত মানুষের পক্ষে আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। সাধারণ মানুষ ছিল তার সবচেয়ে আপনজন। শেখ হাসিনার ধমনিতেও বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত, তিনিও জানেন কীভাবে মানুষকে আপন করে নিয়ে গরীব-দুঃখী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হয়।’
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আমরা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারিয়েছি। আর আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে পেয়েছি, যিনি এ জাতির দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। পিতার দর্শন, আদর্শ বুকে ধারণ করে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে সকল বাধা উপেক্ষা করে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদানের জন্য বাঙালির জাতির পিতার আসনে তিনি অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের ফসল এই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কেবল দেশ স্বাধীন করেই ক্ষান্ত হননি। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে শুরু করেন মহাযজ্ঞ। শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সম্মিলিত উদ্যোগে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন বারবার। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নেয়ার জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা না করলে ২০০০ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বঙ্গবন্ধু দেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কার সঙ্গে শত্রুতা নয়’ ঘোষণা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত এই মূলমন্ত্র আমাদের দেশের অর্থনীতি, কূটনীতির পাশাপাশি বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গে সামাজিক-সাংস্কৃতিকসহ সকল ক্ষেত্রে বন্ধুপ্রতিম সুসস্পর্ক এখনো বজায় রয়েছে। রাজনীতিবিদ এবং ব্যক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মহানুভবতা, আদর্শিক সংগ্রাম, কষ্ট স্বীকার ও আত্মত্যাগ বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। তার দর্শন, চিন্তা-চেতনা, আদর্শ ছিল অনন্য।’
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। বিচারপতি ড. মো. রেজাউল হাসান সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া, গেস্ট অফ অনার হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলংকার হাইকমিশনার, নেপালের রাষ্ট্রদূত, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ডিরেক্টর এবং এফডি’র কান্ট্রি ডিরেক্টরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনা সভায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্বনেতা হিসেবে উল্লেখ করে তার অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা ও দক্ষ সংগঠক। একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা এনে দেয়া বিশ্বে বিরল।’
শেখ হাসিনার হাত ধরেই হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ