ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর রোববার (১৮ মে) কমিশন থেকে অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমানকে এ টিমের প্রধান করা হয়েছে। টিমকে শেখ হাসিনার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অনুসন্ধানকারী দল শেখ হাসিনার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব ও তার আয়কর নথি যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করবে।
এর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতি, বিদেশে অর্থপাচার, প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের একাধিক অনুসন্ধান দুদকে চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির মামলায় চর্জশিট দাখিল করলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৬টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দেয় দুদক। এটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

অন্যদিকে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোকাম্মেল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক। যদিও ওই তলবের বিপরীতে আর কোনো আগ্রগতি দেখা যায়নি।

হাসিনার ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র মামলা সচলের উদ্যোগ: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেড় দশক আগে বাতিল হওয়া ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতির মামলা সচলের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রোববার (১৮ মে) এ দিন ঠিক করে দেয় বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান রয়েছে। তিনি একজন এজাহারভুক্ত আসামি। মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলা বাতিলের কোনো সুযোগ নাই। এ কারণে মামলাটি সচল করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে দুদকের কৌঁসুলি আসিফ হাসান বলেন, ‘হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়েছে। এই আপিলের উপর ১৫ জুলাই শুনানি হবে।’

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বেসরকারি তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি হয়েছিল। এতে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনকে আসামি করেছিল দুদক। এরপর ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হয়। তখন আদালত ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। পরে শেখ হাসিনার আবেদনে এই মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে হাই কোর্ট।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি বাতিলে রুল শুনানির উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর হাই কোর্ট বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে রায় দেয়। উচ্চ আদালতের এই রায়ের পর দীর্ঘ দেড় দশক আপিল বিভাগে যায়নি দুদক।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক। হাই কোর্টের রায় বাতিল চেয়ে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্বনা মার্জনা চেয়ে গত ৫ মার্চ লিভ টু আপিল করে দুদক। গত ১৭ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১৮ মে দিন ঠিক করে দেয়। এর ধারাবাহিকতায় আবেদনটি শুনানির জন্য রোববার কার্যতালিকায় ওঠে। আপিল বিভাগ জানায়, আবেদনটি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।

 

 

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

আপডেট সময় : ০৯:০৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর রোববার (১৮ মে) কমিশন থেকে অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমানকে এ টিমের প্রধান করা হয়েছে। টিমকে শেখ হাসিনার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অনুসন্ধানকারী দল শেখ হাসিনার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব ও তার আয়কর নথি যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করবে।
এর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতি, বিদেশে অর্থপাচার, প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের একাধিক অনুসন্ধান দুদকে চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পূর্বাচলে প্লট জালিয়াতির মামলায় চর্জশিট দাখিল করলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৬টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দেয় দুদক। এটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

অন্যদিকে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোকাম্মেল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক। যদিও ওই তলবের বিপরীতে আর কোনো আগ্রগতি দেখা যায়নি।

হাসিনার ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র মামলা সচলের উদ্যোগ: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেড় দশক আগে বাতিল হওয়া ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতির মামলা সচলের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ঠিক করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রোববার (১৮ মে) এ দিন ঠিক করে দেয় বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ। দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান রয়েছে। তিনি একজন এজাহারভুক্ত আসামি। মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলা বাতিলের কোনো সুযোগ নাই। এ কারণে মামলাটি সচল করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে দুদকের কৌঁসুলি আসিফ হাসান বলেন, ‘হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়েছে। এই আপিলের উপর ১৫ জুলাই শুনানি হবে।’

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বেসরকারি তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি হয়েছিল। এতে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনকে আসামি করেছিল দুদক। এরপর ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হয়। তখন আদালত ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। পরে শেখ হাসিনার আবেদনে এই মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে হাই কোর্ট।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি বাতিলে রুল শুনানির উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর হাই কোর্ট বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে রায় দেয়। উচ্চ আদালতের এই রায়ের পর দীর্ঘ দেড় দশক আপিল বিভাগে যায়নি দুদক।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক। হাই কোর্টের রায় বাতিল চেয়ে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্বনা মার্জনা চেয়ে গত ৫ মার্চ লিভ টু আপিল করে দুদক। গত ১৭ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১৮ মে দিন ঠিক করে দেয়। এর ধারাবাহিকতায় আবেদনটি শুনানির জন্য রোববার কার্যতালিকায় ওঠে। আপিল বিভাগ জানায়, আবেদনটি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।